মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দত্তপুকুরের মোচপোলে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের (Duttapukur) ঘটনায় ঘটনাস্থলেই অধিকাংশের মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা গুরুতর জখম রয়েছেন। ফলে, কথা বলার অবস্থায় অনেকেই নেই। বিস্ফোরণকাণ্ডে ইতিমধ্যেই পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে নীলগঞ্জ এলাকা থেকে কেরামত আলির ‘সহযোগী’ শফিক আলি ওরফে শফিকুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত ব্যক্তি তৃণমূল করত, দাবি পরিবারের লোকজনের। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেরামতের ‘বাজি’র ব্যবসায় ‘অংশীদারিত্ব’ ছিল শফিকের। সূত্রের খবর, বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হয়ে মৃত্যু হয়েছে কেরামতের। তাঁর ছেলেরও মৃত্যু হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, সোমবার সকালে ফের দত্তপুকুরে ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধার হল। বিস্ফোরণস্থল থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি পুকুরে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হল। তার মাথা ফাটা, কোমর থেকে পায়ের কোনও চিহ্ন নেই। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
কী বললেন ধৃত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন?
দত্তপুকুরকাণ্ডে (Duttapukur) গ্রেফতার শফিকুল ইসলামের স্ত্রী জাহানারা বিবি বলেন, রবিবার বিকালে আমার স্বামীকে একজন ফোন করে। স্বামী বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে গেলেই তাকে গ্রেফতার করে। এই ধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত নয় আমার স্বামী। কেরামতের সঙ্গে পাড়ার লোক হিসাবে কথাবার্তা হতো। বাজি কারবারের যে অভিযোগে স্বামীকে গ্রেফতার করা হল পুরোটাই চক্রান্ত। ধৃতের দাদা বাবলু ইসলাম বলেন, আমার ভাই তৃণমূল করত। ওই দলের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। এই ঘটনায় ভাইয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। ভাইকে ফাঁসানো হল।
বাজি কারবারে মুর্শিদাবাদের একজন জড়িত, দাবি এলাকাবাসীর
কেরামত আলির সহযোগী ছিল শফিক আলি। পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের জিরাত শেখ নামে একজনের নাম উঠে আসছে। দত্তপুকুরে (Duttapukur) বাজি কারখানায় জিরাতের অন্যতম ভুমিকা রয়েছে, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঘটনার সময় সে ঘটনাস্থলে ছিল না মুর্শিদাবাদে ছিল, তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে, পুলিশ মুর্শিদাবাদের এই ব্যক্তির খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, কেরামত মোচপোল গ্রামে একজনের বাড়ি ভাড়া নিয়ে বেআইনি বাজি কারখানা গড়ে তুলেছিল। বাড়ির মালিকও এই কারখানায় কাজ করত। বিস্ফোরণের ঘটনায় তারও মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। শফিক আলিকে জেরা করার পর আরও অনেক তথ্য জানা যাবে বলে পুলিশ আধিকারিকরা মনে করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এমনিতেই বাজি তৈরির কারখানা ছিল বেআইনি। সেখানে আতসবাজি শুধু নয়, বোমা তৈরি হয়। কেরামতের কারখানা থেকে কিছুটা দূরেই আরও একটি বেআইনি কারখানার হদিশ পায় এলাকাবাসী। পাঁচিল ঘেরা সেই জমিতেই বেআইনি বাজি ও বোমা তৈরি করা হত। রীতিমতো গবেষণাগার তৈরি করা হয়েছিল। এলাকাবাসী ভাঙচুর করার সময় দেখতে পায়, সেখানে পটাশিয়াম ক্লোরাইড মজুত করে রাখা রয়েছে। ফলে, সেখানে যে বোমা তৈরি হত, তার জ্বলন্ত প্রমাণ রয়েছে। ঘটনার পর থেকে কেউ না থাকায় সেই কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours