মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ থানার মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েত দফতর। বুধবার কালিয়াগঞ্জ ব্লকের অনন্তপুর, মোস্তাফানগর ও ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের দিন স্থির করেছিল জেলা প্রশাসন। সেই মতো এদিন নির্ধারিত সময়ে বোর্ড গঠনের জন্য ব্লক প্রশাসনের তরফে তোড়জোড় শুরু হয়। কিন্তু আচমকাই মোস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরে বাইরে শুরু হয় ব্যাপক বোমাবাজি। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। ভেঙে যায় দফতরের জানলার কাচ।
ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, ৮ নম্বর মোস্তফানগর গ্রাম পঞ্চায়েত মোট আসন ৩০ টি। ম্যাজিক ফিগার ১৬টি। তার মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয় ১৩ টি আসনে। বিজেপি (BJP) পেয়েছে ৮ টি,কংগ্রেস ৩ টি, সিপিএম ২ টি ও নির্দল ৪ টি আসনে জয়লাভ করে। ২০১৮ সালে এই গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপি বোর্ড গঠন করলেও ২০২৩ সালের নির্বাচনে এই পঞ্চায়েত ত্রিশঙ্কু হয়। এদিন পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের দিন ধার্য্য করেছিল ব্লক প্রশাসন। কিন্তু, বোর্ড গঠন শুরুর মুহূর্তে পঞ্চায়েত দফতরে বোমাবাজি চালায় দুষ্কৃতীরা। বোমার আঘাতে কেউ হতাহত না হলেও জানলার কাঁচ ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যায়। ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে কালিয়াগঞ্জ থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী।
কী বললেন বিজেপি নেতৃত্ব?
বিজেপি (BJP) নেতা গৌরাঙ্গ দাস বলেন, বোর্ড গঠনে বাধা দিতেই তৃণমূল এই গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করেছে। পেট্রোল বোমা ছোঁড়া হয় পঞ্চায়েত দফতরে। গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গিয়েছে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
বোর্ড গঠনের দিনই বিজেপি প্রার্থীদের অপহরণের অভিযোগ
অন্যদিকে, বোর্ড গঠনের আগে রাস্তা থেকেই বিজেপির (BJP) ৩ ও ১ নির্দল সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। জানা গিয়েছে অপহৃত চার পঞ্চায়েত সদস্যর নাম ধীরেন রায়,অষ্টমি রায়, আদোরি বর্মন ও পঞ্চমী রায়৷ এদের মধ্যে পঞ্চমী রায় নির্দল জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য।
ঠিক কী ঘটেছে?
এদিন বোর্ড গঠন উপলক্ষ্যে চার জন সদস্য গাড়ি করে পঞ্চায়েত দফতরে যাচ্ছিলেন। সেই সময় ডালিমগাঁ পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁদের রাস্তা থেকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনার পর থেকে এখনও কোনও খোঁজ নেই বিজেপির ৩ ও নির্দল পঞ্চায়েত সদস্যর। উল্লেখ্য ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৮ টি। ২০২৩ সালে ধনকৈল গ্রাম পঞ্চায়েতে সর্বাধিক আসনে জয়ী হয় বিজেপি (BJP)। তাদের মোট আসন ১২ টি। অন্যদিকে তৃণমূলের দখলে যায় ১১ টি আসন। বাকী সিপিএম ২ টি, কংগ্রেস ২ টি ও নির্দল ১ টি আসনে জয়লাভ করে। এদিন বোর্ড গঠনের আগেই বিরোধী চার পঞ্চায়েত সদস্যকে অপহরণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির নেতা কর্মীরা।
অপহরণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা
বিজেপি (BJP) নেতা গৌতম বিশ্বাস বলেন, বিজেপি যাতে বোর্ড করতে না পারে সেজন্য দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের অপহরণ করেছে তৃণমূল। এদিকে এই ঘটনায় পালটা বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে তোপ দেগেছে তৃণমূল। তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি সাধন সরকার বলেন, বিজেপির প্রধান কে হবেন তা নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours