মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পানীয় জলের দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন গ্রামবাসীরা। আর গ্রামবাসীদের সেই মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের এজলাসে। আর বিচারের দায়িত্ব পড়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) ওপর। স্বাভাবিকভাবে তাঁর উপর আস্থা ছিল মামলাকারীদের। কিন্তু, বিচারপতির ব্যবহারেই আপ্লুত মামলাকারীরা।
বিচারপতি আসন ছেড়়ে মামলাকারীদের সঙ্গে কথা বললেন (Abhijeet Ganguly)
আদালত ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সাল থেকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতের সেবদুল্লা গ্রামে পানীয় জলের অভাবের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, বহু আবেদন এবং নিবেদনের পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয় জলকষ্টে থাকা কিছু পরিবার। মামলাকরীদের অধিকাংশই আদিবাসী চা-শ্রমিক পরিবারের। সোমবার ওই মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Ganguly) এজলাসে। সমস্যা বুঝতে অভিযোগকারীদের এজলাসে ডেকে পাঠান বিচারপতি। কিন্তু, শুনানির শুরুতেই গ্রামবাসীদের বক্তব্য ভালো করে শুনতে পাচ্ছিলেন না তিনি। তাই বিচারপতির আসন ছেড়ে নিচে নেমে আসেন তিনি। গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন। শুনানির দিন কলে জল পড়ে। অন্য সময় আর জলে বের হয় না। অভিযোগ শুনলেন বিচারপতি। একজন বিচারপতির এমন ব্যবহারে মামলাকারীরা আপ্লুত। মামলাকারীদের কাছে সব শোনার পর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতর, প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার-সহ আরও কয়েক জনকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেন বিচারক।
মামলাকারীদের কী বক্তব্য?
মামলাকারীদের বক্তব্য, আদালতে মামলা করার পর অদ্ভুত ভাবে লক্ষ্য করা যায়, ওই মামলার যখনই শুনানির দিন আসে, তখনই কল দিয়ে জল পড়তে শুরু করে। যেই শুনানি হয়ে যায় আবার জল বন্ধ হয়ে যায়। দীপু হালদার নামে এক মামলাকারী বলেন, আমাদের গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে জলকষ্ট। আমরা পিএইচই দফতরে আবেদন করলে আমাদের গ্রামে কল লাগিয়ে দেওয়া হয়। জল সমস্যা মিটে যায়। বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ দিয়ে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়। আমার বাড়িতেও সংযোগ দেওয়া হয়। তার পর আমার বাড়ির কল দিয়ে জল পড়ছে দেখিয়ে দিয়ে আমার থেকে আধার কার্ডের ফটোকপি নিয়ে নেওয়া হয়। তারপর থেকে আর জল পাচ্ছিলাম না। বিষয়টি বিভিন্ন মহলে দরবার করে সুরাহা না হওয়ায় আমরা আদালতের দ্বারস্থ হই।
সরকারি আইনজীবী কী বললেন?
সরকারি আইনজীবী হীরক বর্মণ বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। মাঝেমধ্যে হাতির হানা কিংবা ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য পাইপ ফেটে জল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিচারপতি (Abhijit Ganguly) মামলাকারীদের ডেকেছিলেন। অভিযোগকারীদের মধ্যে পাঁচ জন জানিয়েছেন যে তাঁরা জল পাচ্ছেন। ফলে, মামলাকারীরা জল না পাওয়ার যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours