মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্পের নামে বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসার জমির অধিকার চা শ্রমিকদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি টি ট্যুরিজমের নামে চা-বাগানের জমি কর্পোরেট হাউসের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের চা (TEA) বাগানের জমি গ্রাস করার খেলায় উত্তরবঙ্গের ১২ লক্ষ চা শ্রমিক জমির অধিকার হারানোর আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। জমির অধিকারের দাবিতে চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্পের বিরোধিতায় নেমেছে চা শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ।
জমি কাড়ার ষড়যন্ত্র কী চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্প?
চা সুন্দরী প্রকল্পে চা (TEA) শ্রমিকদের পাকা ঘরে স্বপ্ন দেখানো হয়েছে। এতে খুশি ছিলেন চা শ্রমিকরা। বাগান মালিকের অবহেলায় অনাদরে পড়ে থাকা ভাঙা বাড়িতে আর বসবাস করতে হবে না। বৃষ্টিতে জলে ভাসবে না ঘর। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে যে পাকা বাড়ি দেওয়া হচ্ছে সেটা জঙ্গল বা নদীর ধারে। এতদিন যেখানে বসবাস করে এসেছেন, চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্পের ঘর নেওয়ার পর চা-শ্রমিকরা সেখানে আর বসবাস করতে পারবেন না । পাকা ঘর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সঙ্গে বাড়তি কোনও জমি নেই।
পাট্টা নয়, খতিয়ান চাইছেন চা (TEA) শ্রমিকরা
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সহ-সভানেত্রী বিনা সামাদ বলেন, আমরা জমির খতিয়ান চাই। চা (TEA) সুন্দরীর প্রকল্পের নামে যে পাকা ঘর দেওয়া হচ্ছে সেখানে আমাদের কোনও জমি থাকছে না। এতদিন বংশপরম্পরায় আমরা যে জমিতে বেড়ে উঠেছি, সংসার করছি সেই জমি আমাদের থেকে কেড়ে নেওয়ার জন্যই এই সুন্দরী প্রকল্প। তাই আমরা পাট্টা নয়, জমির অধিকার হিসেবে খতিয়ান চাইছি।
কর্পোরেট হাউসকে জমি লুটের লাইসেন্স দিতেই কী আইন সংশোধন?
যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা অভিজিৎ মজুমদার বলেন, রাজ্য সরকার চা (TEA) বাগানে জমি হাঙর হয়ে উঠেছে। টি ট্যুরিজমের জন্য শিলিগুড়ি মাটিগাড়া ব্লকের নিউ চামটা চা বাগানে টি ট্যুরিজমের জন্য কাগজে-কলমে পাঁচ একর জমি নেওয়া হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে থেকে সেখানে বাগানের ২৪ একর জমি নিয়ে হোটেল তৈরি করে চলেছে কর্পোরেট হাউস। একই ভাবে থাবা বসিয়েছে শিলিগুড়ি মহকুমার কমলা, হাঁসখোয় চা বাগানে। চা শ্রমিকদের জমি কেড়ে নিয়ে সেখানে রিয়েল এস্টেট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।
কী বললেন সিপিএম নেতৃত্ব?
সিপিআইএমের দার্জিলিং জেলা সম্পাদক সমন পাঠক বলেন , দীর্ঘ সময় ধরে এই চা (TEA) বাগানে শ্রমিকরা নিজেদের শ্রম দিয়ে একটি শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আজ রাজ্য সরকার সেই চা বাগানের জমি থেকে তাদের উচ্ছেদ করতে চাইছে। কর্পোরেট জগতের হাতে চা বাগানের জমি লুট করার লাইসেন্স দেওয়ার অনুকূলে আইন পাশ করা হয়েছে।
কী বললেন তৃণমূল নেতৃত্ব?
সম্প্রতি শিলিগুড়িতে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক চা সুন্দরী প্রকল্প নিয়ে এই অভিযোগের নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্পের সাফল্যে বিরোধীরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই এ ধরনের অভিযোগ করছে। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন দার্জিলিং জেলার (সমতল) আইএনটিটিইউসির সভাপতি নির্জল দে'ও একই সুরে বলেন, শ্রমিকদের স্বার্থে চা (TEA) সুন্দরী প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেওয়ারও উদ্যোগ নিয়েছেন। একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজে চা শ্রমিকরা খুশি। আর তাতেই অস্তিত্ব সংকটে থাকা সিপিএম এবং অন্যান্য দলগুলি চা শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে এধরনের আন্দোলন করছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours