মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিষেধাজ্ঞাকে তোয়াক্কা না করেই বীরভূম (Birbhum) জেলায় ঝাড়খন্ড লাগোয়া সেতুর কাছেই নদী থেকে অবাধে চলছে বালি উত্তোলন। ফলে, ফাঁকা হয়ে গিয়েছে সেতুর পিলারের নিচের অংশ। পিলারের তলা থেকে বালি ও মাটি সরে যাওয়ায় বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বাংলা ও ঝাড়খন্ডের সংযোগকারী সেতু। সেতুটি ভেঙ্গে পড়লে সমস্যায় পড়বেন পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খন্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। এলাকার বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে যেকোনও সময় সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা।
প্রতিদিন নদী থেকে কত গাড়ি বালি তোলা হয়? (Birbhum)
বীরভূমের (Birbhum) রামপুরহাট থানার নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শালবুনি গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ব্রাহ্মনী নদী। নদীর ওপারে ঝাড়খন্ডের পাকুড় জেলার পাখুড়িয়া থানার বেড়াশিমপুর গ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ঝাড়খন্ডের যোগাযোগ করার জন্য ব্রাহ্মনী নদীর উপর গড়ে তোলা হয়েছে ব্রাহ্মনী সেতু। সেতু নির্মাণের সময় থেকেই দুই রাজ্যের প্রশাসন পক্ষ থেকে সেতুর দুই পাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদী বক্ষ থেকে বালি ও মাটি তোলার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। কিন্তু, সেই নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সেতু সংলগ্ন এলাকা থেকে অবাধে চলছে বালি উত্তোলন। এলাকাবাসীদের দাবী প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার থেকে ১২০০ ট্রাক্টর বালি তোলে মাফিয়ারা। ব্রাহ্মনী নদীর সেই বালি পাচার হচ্ছে রামপুরহাটের বিভিন্ন এলাকায়। দিনের বেলায় প্রকাশ্য দিবালোকে বালি মাফিয়াদের রমরমা থাকলেও রাতের অন্ধকারে তাদের দাপট আরও বেড়ে যায়। বড় বড় ডাম্পারে করে রামপুরহাট থানার শালবুনী থেকে নারায়ণপুর গ্রামের রাস্তা দিয়ে বালি বোঝায় গাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কী বক্তব্য?
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, সেতুর কাছে থেকে বালি তুলতে বারণ করলেও আমাদের কথায় আমল দেয় না বালি মাফিয়ারা। উল্টে তাদের রক্তচক্ষুর শিকার হতে হয়। এরাজ্যের বালি মাফিয়াদের এতটাই দাপট যে তারা ঝাড়খন্ডের পুলিশের উপরেও চড়াও হতে পিছু পা হয় না। সেতুর কাছ থেকে বালি তোলা রুখতে আসা ঝাড়খন্ডের পাখুরীয়া থানার ওসির উপরেও বীরভূমের (Birbhum) শালবুনী এলাকার বালি মাফিয়ারা চড়াও হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে বালি মাফিয়াদের দাপটে মুখ বুজে থাকতে হয় আমাদের। তাছাড়া মাফিয়াদের পিছনে শাসকদলের মদত রয়েছে। ফলে, জেলার পুলিশও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভয় পায়। আমাদের দাবি, দুই রাজ্যের প্রশাসন যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ করে সেতুটিকে রক্ষা করুক।
স্থানীয় বিধায়ক কী বললেন?
স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নদী থেকে বালি তোলার বিষয়টি আমি জানি। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। নাহলে সেতুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের সব স্তরে জানাব। প্রয়োজনে সেচমন্ত্রীকে বলব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours