মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাছের ব্যবসায়ী তোলা না দেওয়ায় প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনায় তীব্র শোরগোল পড়েছে নদিয়ার (Nadia) কৃষ্ণনগরে। এই হাড়হিম করা ভিডিও সামজিক মাধ্যমে ইতিমধ্যে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মাছ বিক্রেতাকে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আবার পিস্তল উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে আরও এক ব্যক্তি। ওঁই ব্যবসায়ীর পায়ে একটি গুলি লেগেছে বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শহরের তৃণমূল ছাত্রপরিষদের সভাপতি। বিজেপির অভিযোগ এই রাজ্যে তৃণমূল মস্তানতন্ত্র চলছে। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে।
চার রাউন্ড গুলি করে দুষ্কৃতীরা (Nadia)
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোররাতে এক মাছ ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে চার রাউন্ড গুলি চালানো হয়। গুলিবিদ্ধ মাছ ব্যবসায়ী ভর্তি হাসপাতালে। ঘটনাটি ঘটেছে কৃষ্ণনগর (Nadia) কোতোয়ালি থানার গোয়ারী বাজারে। নগেন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা সমির ঘোষ এবং বিশ্বনাথ ঘোষ নামে দুই ভাই মাছ ব্যবসা করেন। প্রতিদিন তাঁরা কৃষ্ণনগর গোয়ারা বাজার থেকে মাছ কিনে পাত্র বাজারে বিক্রি করেন। প্রতিদিনের মতো আজ ভোররাতেও তাঁরা গোয়ারি বাজারে মাছ কিনতে যান। অভিযোগ উঠে, হঠাৎ ওই এলাকার কিছু নামজাদা তৃণমূল দুষ্কৃতী তাঁদেরকে আচমকা ঘিরে ধরে এবং টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় হঠাৎ একটি পিস্তল বের করে ওই দুই মাছ ব্যবসায়ীকে লক্ষ্য করে গুলি চালাতে থাকে। প্রথমে একটি গুলি বিশ্বনাথ ঘোষের পায়ে লাগে। বিশ্বনাথকে বাঁচাতে গেলে সমীর ঘোষকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। অন্যদিকে বিশ্বনাথ ঘোষের পায়ে গুলি লাগার কারণে মাটিতে পড়ে যান। এরপরেই বন্দুক দিয়ে মাথায় আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। এরপর চিৎকার চেঁচামেচি এবং গুলির আওয়াজে, ওই বাজারের অন্যান্য মাছ ব্যবসায়ীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। এরপরেই রক্তাক্ত অবস্থায় বিশ্বনাথ ঘোষকে উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্যদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার পুলিশ। পাশাপাশি হাসপাতালে গিয়ে ওই দুই মাছ ব্যবসায়ীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে পুলিশ এবং ঘটনার বিবরণ শোনেন। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযুক্ত আটক কিংবা গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত ২৩ নম্বর ওয়ড়াক্ট প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “আমাদের অভিযুক্তদের সঙ্গে পুরনো কোনও শত্রুতা নেই। তবে যারা গুলি চালিয়েছে তারা ওই এলাকার সমাজবিরোধী হিসেব কাজ করে বেড়ায়। ওরা টাকা চেয়েছিল আমি দিতে অস্বীকার করাতেই এই আক্রমণ করেছে। আমার এবং ভাইয়ের কাছ থেকে ওরা প্রায় ৪০ হাজার নগদ টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে প্রশাসন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।” আবার বিশ্বনাথের ভাই সমির ঘোষ বলেছেন, “সৈকত হালদার ওরফে ডাকু এই ভাবে গুলি করেছে। এলাকার মার্কামারা দুষ্কৃতী। মাত্র দুইদিন আগেই জেল থেকে ফিরছে। মদ খাওয়ার জন্য টাকা চাইছিল ওরা, কিন্তু না দেওয়ায় গুলি করে। এলাকায় তৃণমূল নেতা ডাকু, এক সময় শহরের (Nadia) তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি (TMC) ছিলেন।”
বিজেপির বক্তব্য
এই গুলিকাণ্ডের ঘটনায় বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূল (TMC) সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ হয়েছে। বিজেপি নেতা রাহুল সিন্হা বলেছেন, “এই রাজ্যে তৃণমূলের আমলে মস্তানতন্ত্র (Nadia) চলছে। সারা রাজ্যে একই বিষয় চলছে।”
আরও পড়ুনঃ বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যকে কোমরে পিস্তল ঠেকিয়ে তৃণমূল পার্টি অফিসে মারধর!
তৃণমূলের বক্তব্য
তৃণমূলের (TMC ) পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী বলেছেন, “মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। আমরা বিষয়টি দেখছি। এলাকায় (Nadia) ঘটনা একদম সহ্য করা যাবে না। প্রশাসনকে বলব উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours