তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
রোগ নিরাময় অনেক দূরের পথ! রোগ আদৌ আছে কি! সে খবর জানার পথ সবচেয়ে কঠিন। কিন্তু এই পথ পেরতে না পারলে ভবিষ্যতে আরও অন্ধকার সময় আসতে পারে, এমনই উদ্বেগ প্রকাশ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ভারতের প্রথম সারির বিশেষজ্ঞরা। তাই এবার প্রত্যেক ভারতীয়ের মনের হদিশ (Mental Health) জানতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কী বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
সম্প্রতি মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) সচেতনতা দিবস উদযাপন হল। সেই উপলক্ষ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, ভারতীয়রা যাতে যে কোনও মানসিক সমস্যা সম্পর্কে সরাসরি জানাতে পারেন, বিশেষজ্ঞদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে পারেন, তার জন্য সহজ এক পদ্ধতি করা হয়েছে। নাম দেওয়া হয়েছে টেলি মানস। যার সাহায্যে ভারতীয়রা তাঁদের মানসিক রোগ সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে পারবেন।
টেলি-মানসের কাজ কী? (Mental Health)
স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেস (নিমহ্যান্স)-এর তত্ত্বাবধানে দেশ জুড়ে ২৩টি কেন্দ্র চালু হয়েছে। যে কোনও মানসিক সমস্যা নিয়ে টেলিফোনের মাধ্যমে এই সব কেন্দ্রে যোগাযোগ করা যাবে। সেখানে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পাওয়া যাবে। ফলে, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক ছুৎমার্গ কাটবে। পাশপাশি রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা হবে। টেলি মানস (Tele Manas) এক ধরনের যোগাযোগ মাধ্যম। ভারতের যে কোনও প্রান্ত থেকে টেলি মানসে ফোন করে মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করা যাবে।
কেন জরুরি হয়ে উঠছে এই ধরনের পরিষেবা?
দেশ জুড়ে মানসিক স্বাস্থ্য (Mental Health) পরিষেবা সুনিশ্চিত করা জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। কারণ, ভারতে মানসিক রোগ ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮০ শতাংশ ভারতীয়র মানসিক রোগের চিকিৎসা হয় না। কোথায় কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কথা বলতে হবে, কোথায় সুচিকিৎসা পাওয়া যাবে, এমনকি কার চিকিৎসার প্রয়োজন, সে সম্পর্কেও অধিকাংশ ভারতীয়র ধারণা নেই। এর ফলে, ভারতীয়দের মধ্যে মানসিক রোগ নিয়ে যেমন নানান সামাজিক ছুৎমার্গ তৈরি হয়, তেমনি রোগ নির্ণয় আর চিকিৎসা হয় না। এর ফলে, মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আর তার জেরে সিজোফ্রেনিয়া, আত্মহত্যা, অবসাদের মতো একাধিক রোগ বাড়ছে। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, মানসিক রোগ নির্ণয় সবচেয়ে জরুরি। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হলে, প্রথমে রোগ নির্ণয় করতে হবে। আর টেলি মানসের মতো প্রযুক্তি থাকলে, সেই কাজ সহজ হবে। পাশপাশি রোগ নির্ণয় করে থামলেই চলবে না। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো জরুরি। অবসাদ, চাপের মতো মানসিক রোগ চিকিৎসার মাধ্যমে কমে। স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু রোগ লুকিয়ে রাখলে, চিকিৎসা না হলে, পরিণতি হয় ভয়ানক। তাই যেভাবে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে রোগীকে পরিষেবা দেওয়ার কাজ টেলি-মানস করছে, তা এ দেশে মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উন্নত করবে বলেই আশা করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours