মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ সোমবার রিষড়াকাণ্ডে জখম বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষকে হাসপাতালে দেখে ফেরার পথে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে (Sukanta Majumdar) কোন্নগর বিশালাক্ষীতলায় আটকায় পুলিশ। রিষড়া যেতে তাঁকে বাধা দেওয়া হয়। সেখানেই তিনি প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবস্থানে বসেন। পরে, মঙ্গলবার শ্রীরামপুর বটতলায় ধর্নায় বসবেন বলে তিনি ঘোষণা করেছিলেন। এদিন সেখানে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারটের এক আধিকারিক বলেন, এই ধর্নার কোনও অনুমতি নেই। সাধারণ মানুষের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই কারণেই এখানে এখন কোনও কর্মসূচির অনুমতি দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি মোহন আদক বলেন, তাঁরা ইমেল করে অনুমতি নিয়েছেন। মানুষের কোনও অসুবিধা না করে ধর্না দিতে চান। তবে, ধর্না মঞ্চ খুলে নেওয়ার পরেই থানায় যান স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন সকালে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) শ্রীরামপুর যাওয়ার জন্য রওনা দেন। কিন্তু, ডানকুনির জগন্নাথপুর মোড়ে দিল্লি রোডে বিজেপির রাজ্য সভাপতিকে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের বচসা হয়। পরে, বিজেপি কর্মীরা পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে বিক্ষোভ দেখান।
কী বললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি? Sukanta Majumdar
এদিন দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিয়ে বেরিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) বলেন, বাংলা থেকে অশান্ত মুক্ত করার জন্য মায়ের কাছে প্রার্থনা জানিয়েছি। দক্ষিণেশ্বর থেকে বেরিয়ে শ্রীরামপুর যাওয়ার পথে ডানকুনিতে তাঁকে পুলিশ বাধা দেয়। সেখানে দাঁড়িয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি (Sukanta Majumdar) বলেন, রিষড়ায় আমাদের কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছেন। সেই পরিবারের পাশে থাকার জন্যই আমরা সেখানে যেতাম। কিন্তু, আমাদের ডানকুনি এলাকায় আটকে দেওয়া হয়। এই এলাকায় ১৪৪ ধারা নেই। অথচ সেখানে আমাকে বাধা দেওয়া হল। রিষড়ায় শান্তি ফেরাতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা প্রয়োজন। ডিজি, পুলিশ মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করছি।
ট্রেনে করে কেন রিষড়ায় গেলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়?
শ্রীরামপুর ও রিষড়া এলাকায় মঙ্গলবারও ১৪৪ ধারা জারি ছিল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সহ সাংসদদের এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুলিশ বাধা এড়াতে এদিন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বালি স্টেশন থেকে ট্রেনে করে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় সোজা রিষড়া স্টেশনে যান। ট্রেন থেকে নামতেই পুলিশ কর্মীরা তাঁকে আটকে দেন। এনিয়ে পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে তাঁর ব্যাপক বচসা হয়। পরে, বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমাদের না আটকে রামনবমীর মিছিলের দিন রিষড়ায় পুলিশ যদি হামলাকারীদের আটকাতে পারত, তাহলে হিন্দুরা নিরাপদে থাকত। আসলে এই সরকার আগুন নিয়ে খেলছে। এই আগুনে ওদেরও হাত পুড়বে।
মঙ্গলবার রিষড়া এবং শ্রীরামপুরের সার্বিক অবস্থা কেমন ছিল?
রিষড়া, শ্রীরামপুর এলাকা জুড়ে সোমবার রাত থেকে পুলিশি টহলদারি শুরু হয়েছে। দুজায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। উত্তেজনাপ্রবণ এলাকায় বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট। চন্দননগর ও হুগলি গ্রামীণ পুলিশের পাশাপাশি পরিস্থিতি সামাল দিতে পাঠানো হয়েছে হাওড়া সিটি পুলিশ। বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। দোকানপাটও প্রায় বন্ধ। রিষড়ায় ৪ নম্বর রেল গেট এলাকায় অশান্তির জেরে সোমবার রাতে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মঙ্গলবারও সকাল থেকে আতঙ্কে ও আশঙ্কায় বিস্তীর্ণ এলাকা একেবারে থমথমে। এতটাই যে ব্যান্ডেল-হাওড়া লাইনে মঙ্গলবার লোকাল ট্রেনও খাঁ খাঁ করেছে। সোমবার রাতে রিষড়া ৪ নম্বর রেলগেটে গন্ডগোলের ঘটনায় ৩৬ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours