Sri Lanka Crisis: অগ্নিগর্ভ শ্রীলঙ্কা, প্রাসাদ থেকে উদ্ধার বিপুল অর্থ! কোথায় পালালেন রাষ্ট্রপতি?

রাষ্ট্রপতির দেশ ছাড়ার ভিডিয়োটি দেখে নিন...
7040696-srilanka-crisis-1
7040696-srilanka-crisis-1

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: গণবিক্ষোভে উত্তাল শ্রীলঙ্কা (Srilanka)। বিক্ষোভকারীদের জন্যে ঘর-ছাড়া খোদ শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি। অন্যদিকে প্রবল গণ-আন্দোলনের জেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রনিল বিক্রমসিংঘে (Ranil Wickremesinghe)। শনিবার একটি বিবৃতি জারি করে তিনি পদত্যাগ করেন। কিন্তু পদ ছেড়েও স্বস্তিতে নেই প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। খুবই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা (Sri Lanka)। ১৯৪৮ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কটের (Economic Crisis) মধ্যে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যেই  শ্রীলঙ্কার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা (Sri Lankan Protesters) রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ (Mansion) থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উদ্ধার করেছে, উদ্ধার হওয়া অর্থ নিরাপত্তা ইউনিটের কাছে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকালেই বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের (Gotabaya Rajapaksha) সরকারি বাসভবন বা শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি ভবনের দখল নিয়েছে। এমনকি সুইমিং পুল ও রান্নাঘরের দখল নিয়েও সেখানকার ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু তারপরই রাজাপক্ষের দেশ ছাড়ার একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার নৌ বাহিনীর বিশেষ জাহাজে করেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষ। ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে কলম্বো বন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি জাহাজে তিন জন বড় বড় সুটকেস তুলছে। যেগুলি রাজাপক্ষের বলে দাবি করা হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রাজাপক্ষে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। কলম্বো বন্দরের (Colombo Port) হারবার মাস্টার (Harbour Master) বলেছেন, একটি দল এসএলএনএস সিন্দুরালা (SLNS Sindurala) ও এসএলএনএস গজবাহুতে (SLNS Gajabahu) চড়ে বন্দর ছেড়ে চলে গেছেন। তবে তিনি এখন কোথায় গিয়েছেন তার হদিশ মেলেনি। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছিল, বিক্ষোভ চলাকালীন তিনি শ্রীলঙ্কা সেনা হেডকোয়ার্টারে চলে গিয়েছিলেন, কিন্তু বর্তমানে কোথায় আছেন তা জানা যায়নি।

[tw]

[/tw]

এই বিক্ষোভে পথে নেমেছেন শ্রীলঙ্কার দুই প্রাক্তন ক্রিকেটার সনৎ জয়সূর্য (Sanath Jayasuriya) ও রোশন মহানামা (Roshan Mahanama)। তাঁরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ নিয়ে সরব হয়েছেন। ট্যুইটারে #gohomegota লিখে প্রতিবাদ করছেন ও শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

[tw]

[/tw]

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার এই পরিস্থিিতির জন্য অনেকটাই চিন দায়ী। ২০১০ সাল থেকেই শ্রীলঙ্কায় আর্থিক দুর্দশা দেখা যায় এরপর ২০১৯ সালে তা চরম সঙ্কটের মুখে পড়ে। কলম্বো ও হাম্বানটোটা বন্দরকে ১০০ বছরের জন্যে চিনের কাছে লিজে রেখেছিল শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার আর্থিক সঙ্কটকে কাজে লাগিয়ে চিন এই দেশকে ঋণ কূটনীতির ফাঁদে (Debt Trap Diplomacy) ফেলেছে যাতে শ্রীলঙ্কার ওপর পুরো কন্ট্রোল নেওয়া যায়। চিন শ্রীলঙ্কার বৃহত্তম ঋণদাতা (Lender)। আর এই দ্বীপ রাষ্ট্রের মোট ঋণের ১০ শতাংশ এসেছে বেজিংয়ের থেকে। এই ঋণে ভারসাম্য না-থাকার কারণেই সঙ্কট মারাত্মক আকার নিয়েছে। সমস্যা মেটানোর জন্য বিদেশি সাহায্য চাইতে বাধ্য হয়েছে শ্রীলঙ্কা। এর ফলে চিনের উপর দেশটির নির্ভরতা বেড়েছে, যে কারণে ঋণের বোঝাও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। আর পরিস্থিতিও খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। চিনের ঋণ ফাঁদ ছাড়াও সরকার চালানোয় অক্ষমতা, স্পষ্টতার অভাব ইত্যাদির কারণে শ্রীলঙ্কার আর্থিক পরিস্থিতি এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে। চিনের কাছে শ্রীলঙ্কার মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮০০ কোটি ডলার, যা তার মোট বৈদেশিক ঋণ ৪৫০০ কোটি ডলারের প্রায় ৬ ভাগের ১ ভাগ। এই বছরের জন্য শ্রীলঙ্কার কাছ থেকে চিনের পাওনা প্রায় ১৫০ কোটি থেকে ২০০ কোটি ডলার। ভারত শ্রীলঙ্কাকে ঋণের থেকে বাঁচতে বিভিন্ন সময়ে আর্থিক সহায়তা করে থাকলেও শ্রীলঙ্কা এমনই ঋণ ফাঁদে পড়েছিল যে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার পরেও এই দেশের অবস্থা ঠিক করতে পারেনি। বিশেষজ্ঞরা এও জানিয়েছেন যে, চিন নিজেই শ্রীলঙ্কাকে ঋণের ফাঁদে ফেলে পরে সাহায্য করতে আসলেও তা সবকিছুই পরিকল্পনা অনুযায়ী করছে। 'ঋণ কূটনীতি' ব্যবহার করেই বিশ্ব জুড়ে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে তাদের উপর আরও নির্ভরশীল করে তুলছে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। সুতরাং অনেক দেশেরই এ থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত যে, চিন কীভাবে শ্রীলঙ্কাকে ঋণ ফাঁদের জালে ফেলে দেউলিয়ার পথে ঠেলে দিয়েছে।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles