মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্থলভাগের সঙ্গে দূরত্ব কমছে দানার। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, 'দানা' ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, ধামারা থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে তার সম্ভাব্য 'ল্যান্ডফল' হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় (Cyclone Dana) স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময় পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে (Coast Of Bengal) জলোচ্ছ্বাস প্রবল হতে পারে, সতর্ক করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে সর্বোচ্চ ১৪ ফুটেরও বেশি! (Cyclone Dana)
সমুদ্রে ১২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে উপকূলের (Cyclone Dana) দিকে এগোচ্ছে 'দানা'। অভিমুখ মূলত উত্তর-পশ্চিম। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে 'দানা' আছড়ে পড়তে পারে। বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত উপকূলে ঢেউয়ের উচ্চতা হবে সবচেয়ে বেশি। পূর্বাভাস অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে থেকে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার মধ্যে ঢেউ উঠতে পারে ৯.৮৪ ফুট থেকে ১৪.৪৩ ফুট পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে উপকূল খালি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নৌকা, ছোট ছোট জলযান নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে বলেছে হাওয়া অফিস।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ‘দানা’, চরম দুর্যোগের আশঙ্কা, এই সময়ে কী করবেন আর কী করবেন না
১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড়
ইতিমধ্যে 'দানা'র (Cyclone Dana) মোকাবিলায় তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে দিঘা, মন্দারমণির মতো উপকূলঘেঁষা এলাকায়। পর্যটকদের আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উপকূল সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে। যাঁদের কাঁচা বাড়ি রয়েছে, তাঁরা ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা বলেন, পশ্চিমবঙ্গে 'ল্যান্ডফল' না হলেও 'দানা'য় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। সেখানে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঝড়ের গতি হতে পারে ১০০ কিলোমিটারের বেশি। সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে। এ ছাড়া, সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অংশ 'দানা'র তাণ্ডবের সাক্ষী থাকবে। ঝড়ের গতি হতে পারে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। কলকাতায় ঝড় বইতে পারে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে হলদিয়া এবং কলকাতা বন্দরেও।
তাজপুরে ভাঙন!
ঘূর্ণিঝড় দানার আতঙ্কে কাঁপছে গোটা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূল ভাগ। তাজপুরের জলধা এলাকায় আতঙ্ক বাড়াল ভাঙন। বৃহস্পতিবার ভোরে সমুদ্র ফুঁসে উঠতেই ভাঙন শুরু হয় তাজপুরের জলধা এলাকায়। চোখের পলকে সমুদ্র লাগোয়া জমি তলিয়ে যাচ্ছে। সকালবেলা ভাঙনের এই ছবি দেখেই ঘুম ছুটেছে এলাকার বাসিন্দাদের। 'দানা'র প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টি চলবে শুক্রবার পর্যন্ত। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। একই সম্ভাবনা রয়েছে ঝাড়গ্রামেও। তবে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়াতেও শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশের লাঠিচার্জ
বৃহস্পতিবার সক্কাল সক্কাল দিঘা-তাজপুর-মন্দারমণিতে জড়ো হয়েছেন বহু পর্যটক। প্রশাসন মাইকে বারবার ঘোষণা করলেও সমুদ্রের ধারে সেলফিতে ডুবে প্রত্যেকেই। তাঁদের সরাতে রীতিমতো লাঠিচার্জের খবরও সামনে এসেছে। সমুদ্রস্নানে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও হুঁশ নেই পর্যটকদের। এই ভাঙন কবলিত এলাকায় বাস প্রায় আটশো মানুষের। তাঁরা সকলেই মৎস্যজীবী। আবহাওয়া দফতর ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Dana) পূর্বাভাস দেওয়ার পরেই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া এই এলাকার মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে এনেছে প্রশাসন। কিন্তু ঘরে ফিরেও স্বস্তিতে নেই তাঁরা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours