মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঋষি সুনাক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি যিনি রক্ষণশীল ব্রিটেনের প্রথম অশ্বেতাঙ্গ হিন্দু ধর্মাবলম্বী যিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন হয়েছেন। সদ্য নিযুক্ত এই প্রধানমন্ত্রীর কিছু পুরনো সাক্ষাৎকার ইন্টারনেটে ভাইরাল হচ্ছে। ঋষির ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থেকে তার সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য জানা গিয়েছে।
তার দাদু ভারতের স্বাধীনতার আগেই পাঞ্জাব থেকে পূর্ব আফ্রিকায় চলে যান এবং তারপরে ঋষির পরিবার যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটন শহরে এসে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৮০ সালে ঋষির জন্ম হয় সাউদাম্পটন এই শহরেই। তার বাবা সেখানে চিকিৎসক ছিলেন। মা একটি ফার্মেসি চালাতেন। ঋষি নাম করা নাম করা প্রাইভেট স্কুল উইনচেস্টার কলেজে পড়াশোনা করেছেন তিনি। গ্র্যাজুয়েশন করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
পরে আমেরিকার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছেন। সেখানেই তার সাথে পরিচয় হয় ভারতীয় ধনকুবের এবং আইটি কোম্পানি ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তির মেয়ে অক্ষতার সাথে। তারপর প্রেম এবং প্রণয়। দুটো মেয়ে রয়েছে ঋষির।
এছাড়াও ঋষি ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন হ্যারি স্টেবিংস নামে একজন ব্রিটিশ শিল্পপতির ভিসি ২০ (VC 20) নামক পডকাস্ট শোতে এসে নিজের ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খোলামেলা আলোচনা করেন।
তিনি জানান কলেজে পড়াকালীন একটি রেঁস্তোরায় তিনি কাজ করতেন। তিনি বলেন, কাজটি মোটেও আকর্ষণীয় ছিল না এবং কষ্টসাধ্য ছিল। তবে কলেজে পড়াকালীন এই কাজটির তার খুবই প্রয়োজন ছিল।
তিনি জানান যেহেতু সে রেঁস্তোরার কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন। সেহেতু মহামারী চলাকালীন এই রেষ্টুরেন্ট শিল্পকে কিভাবে পুনঃজ্জীবিত করা যায় তা নিয়ে তিনি নানা আর্থিক নীতি প্রনয়ণ করেছিলেন।
ঋষি তার খাদ্যাভাসের ক্ষেত্রে জানিয়েছিলেন, সাধারণত তিনি প্রাতরাশে কিছুই খান না এমনকি অনেক সময় দীর্ঘক্ষণ ধরে কিছু না খেয়েই উপবাস করে থাকেন। সকাল ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠার পর তারপরে কিছু না খেয়েই জিম করেন বা অনেক সময় ব্লু বেরি বা দই খান। এরপর চকলেট মাফিন বা পাউরুটি খান। অনেক সময় চকলেট ও চিনি যুক্ত পেস্ট্রি খান। শুধু তাই নয় সপ্তাহান্তে পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনি ভারতীয় রান্না সহযোগে ব্রেকফাস্ট উপভোগ করেন। আবার অনেক সময় পুরোপুরি আমেরিকান ধাঁচের প্যানকেক তৈরি করেন। সাধারণত প্রতি রবিবার প্যানকেক তৈরি করতে ক্রিস্পি বেকন, ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি ব্যবহার করা হয়।
প্রসঙ্গত, ঋষি এক জনপ্রিয় সংবাদপত্রের সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি এই দেশে জন্মগ্রহণ করলেও তার বাবা মা তাকে হিন্দু ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি আরও জানান, সপ্তাহান্তে প্রতি শনিবার তিনি পরিবারের সাথে মন্দিরে যেতেন। এমনকি অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি এই মন্দিরে এসে গো পূজন করেছেন মন্দিরে থাকা শিশুদের সঙ্গে দেখা করেন।
ঋষির এই সাফল্যের যাত্রাটি সহজ সাধ্য ছিল না। ব্রিটেনের সাধারণ মানুষেরা তাকে খুবই ধনী মনে করেন। তাই তারা মনে করেন ঋষি সাধারণ মানুষের কষ্ট বুঝতে পারবেন না। এছাড়াও ঋষি ও তার স্ত্রী অক্ষতা মূর্তির মোট সম্পত্তি প্রায় ৭৩০ মিলিয়ন পাউন্ড। যা ইংল্যান্ডের রাজার ঘোষিত সম্পত্তির থেকেও বেশী। তার স্ত্রী অক্ষতা ভারতের নাগরিক হওয়ায় নন-ডোমিসাইল' স্ট্যাটাসের জন্য যুক্তরাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় দেশটির বাইরে থেকে অর্জিত কোনো আয় বা সম্পদের ওপর কর দিতে হতো না তাকে। এ নিয়ে সমালোচনার পর অবশ্য যুক্তরাজ্যের বাইরে উপার্জিত আয়ের ওপরে কর দিতে সম্মত হয়েছিলেন তিনি।
+ There are no comments
Add yours