Ratanti Kali Puja: রটন্তী কালীপুজো করলে কী কী ফল পাওয়া যায় জানেন?

কথিত আছে ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একবার বলেছিলেন যে রটন্তী কালীপুজোর ভোরে দেখলাম আমাদের দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় স্বর্গ থেকে দেবতারা নেমে এসে স্নান করছেন
ratanti
ratanti

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: বাংলায় কালীপুজো বেশ প্রাচীন। দশ মহাবিদ্যার একটি বিদ্যা হল মা কালী। এমনিতে কালীপুজো বিভিন্ন স্থানে, বছরের নানা সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। স্থান এবং বছরের পুজোর সময় অনুযায়ী মা কালীর আলাদা আলাদা নামও রয়েছে। যেমন স্থানীয় নাম হিসেবে প্রসিদ্ধ হয়ে রয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের বোল্লা কালীপুজো আবার বিভিন্ন ডাকাতদের কালী পুজোও যথেষ্ট প্রসিদ্ধ। ভবানী পাঠকের কালীপুজো, দেবী চৌধুরানীর কালীপুজো, রঘু ডাকাতের কালীপুজো এগুলি খুবই প্রসিদ্ধ। এছাড়া সারা বছর ধরে বিভিন্ন সময় আরও অনেক কালীপুজো ধুমধাম করে আমাদের বাঙালী বাড়িতে হয়ে থাকে। যেমন জৈষ্ঠ্য মাসে ফলহারিণী কালীপুজো হয়, কার্তিক মাসে হয় দীপান্বিতা কালীপুজো। পৌষ মাসে পৌষকালী পুজো হয়। কিছু জায়গায় আবার রক্ষাকালী পুজো খুবই বিখ্যাত। মাঘ মাসে চতুর্দশী তিথিতে সম্পন্ন হয় রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja)। সারা বছরের বিভিন্ন কালীপুজোগুলি প্রতিটি অমাবস্যায় সম্পন্ন হয়, কিন্তু একমাত্র রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja) চতুর্দশী তিথিতে সম্পন্ন হয়।

রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja) নিয়ে কী বলেছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব?

দক্ষিণেশ্বরের মন্দিরের রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja) খুব ধুমধাম করে পালন করা হয়। মন্দিরে ঘাটে বহুভক্ত এ দিন স্নান করেন।  ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে যে এদিনের স্নানের ফলে জীবনের সুখ শান্তি বর্ষিত হয় এবং বাধা বিঘ্ন সমস্ত কিছু দূর হয়ে যায়। কথিত আছে ঠাকুর শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব একবার বলেছিলেন যে রটন্তী কালীপুজোর (Ratanti Kali Puja) ভোরে দেখলাম আমাদের দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় স্বর্গ থেকে দেবতারা নেমে এসে স্নান করছেন। এই কারণে ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে যে এই দিনে দেবতারা স্বয়ং দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে আবির্ভূত হন। তাই খুব ভোরে পুণ্য স্নান করতে আসেন ভক্তরা। বিশ্বাস অনুযায়ী, এই দিনে দক্ষিণেশ্বরের ঘাটে পুণ্যস্নান করাটাকে পবিত্র বলে মনে করা হয়। 

রটন্তী কালীপুজোর (Ratanti Kali Puja) পৌরাণিক আখ্যান

রটন্তী শব্দটি এসেছে মনে করা হয় 'রটনা' থেকে যার অর্থ প্রচার হওয়া বা কোনও কিছু প্রচারিত করা। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে এই বিশেষ তিথিতে দেবী কালীর মহিমা চারিদিকে রটে যায়। তাই এই কালীপুজো রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja) নামে প্রচলিত। পুরাণমতে জানা যায় এদিনই দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব হয়েছিল। দেবী ছিন্নমস্তা হলেন শিবজায়া পার্বতীর একটি স্বরূপ। দেবী পার্বতী তাঁর সহচরীদের খিদে মেটানোর জন্য নিজের মুন্ডচ্ছেদ করে রক্তের প্রবল ধারা তৈরি করেছিলেন এবং প্রকট হয়েছিলেন এই মূর্তিতে। 

ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে যে রটন্তী কালীপুজো (Ratanti Kali Puja) করলে জীবনে কখনও দাম্পত্য কলহ আসে না এবং অবাঞ্ছিত কারণে যাঁরা দাম্পত্য সুখ পাননি তাঁরা রটন্তী কালী (Ratanti Kali Puja) আরাধনার মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে সেই সুখ পেতে পারেন।

বিভিন্ন বাড়িতে বাঙালি বাড়িতে ধুমধাম করে সাদরে রটন্তী কালীপূজা (Ratanti Kali Puja) হয়। ভক্তদের বিশ্বাস রয়েছে যে ভক্তি, নিষ্ঠা, পবিত্রতা সহকারে যদি মায়ের আরাধনা করা হয় তাহলে মা ভক্তের ডাকে সাড়া দেন এবং সমস্ত আশীর্বাদ ভক্তদের উপর বর্ষিত করেন।

রটন্তী কালীপুজোর (Ratanti Kali Puja) শেষে গৃহস্থ বাড়িতে ভক্তদের খিচুড়ি প্রসাদ খাওয়ানোর রীতি রয়েছে। বাঙালি বাড়িতে সকলে উঠোনে ত্রিপল বিছিয়ে, জাতপাত নির্বিশেষে পাত পেড়ে মায়ের প্রসাদ গ্রহণ করেন। 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles