মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বউবাজার বিস্ফোরণ মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত রশিদ খানকে (Rashid Khan) মুক্তি দেওয়া যায় কি না তা বিবেচনা হবে হাইকোর্টের গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পর। এ মামলার শুনানি হবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ইতিমধ্যেই ৩১ বছর জেল খেটেছে রশিদ খান ও তাঁর সঙ্গী খালিদ। ১৯৯৩ সালে বউ বাজারে বিস্ফোরণে (Bow Bazar Blast) ৬৯ জন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছিলেন। তখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন জ্যোতি বসু।
আদালতে সওয়াল জওয়াব
বিচারপতি সব্যসাচী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঞ্চ বিস্ফোরণ (Bow Bazar Blast) মামলায় অভিযুক্ত রশিদকে (Rashid Khan) এপ্রিল মাসে মুক্তি দেওয়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় তাঁকে মুক্তি দেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে ২৪ শে জুন পর্যন্ত তাঁর সাগরেদ মোহাম্মদ খালিদকে ছাড়ার সিঙ্গেল বেঞ্চের (Calcutta High Court) নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে রশিদ খানের আইনজীবী জানিয়েছেন, “অভিযুক্তের বয়স ৫৯ বছর। ১৫ বারের বেশি প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন। সামাজিক ক্ষেত্রে কোনও রকম ক্ষতিকর কিছু করেননি তিনি (Rashid Khan)। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন এই মর্মে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে তিনি আবেদন করতে পারেন যে ৩১ বছর ধরে তিনি জেলে আছেন। জেলে থাকাকালীন তার ভূমিকা ভাল ছিল। কিন্তু এই ধরনের কোন আইন কি রাজ্যে আছে? রাজ্যের কি কোন স্পষ্ট নীতি আছে? এই মর্মে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের কাছে এই মর্মে জানতে চেয়েছেন। প্রধান বিচারপতিকে এডভোকেট জেনারেল আদালতে জানিয়েছেন, “রিভিউ বোর্ডের রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে ১৯৯৩ সালের ঘটনায় ৬৯ জনের মৃত্যু হয়। ৯ অক্টোবর ২০২৩ মেদিনীপুরের (Medinipur) জেল সুপার জানান রশিদ খানের (Rashid Khan) ব্যবহার খুবই ভাল জানিয়েছেন। কিন্তু কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে রশিদ খানকে ছাড়লে সমাজে তার প্রভাব পড়তে পারে। পরবর্তীতে এলাকায় ফের অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে। যেভাবে মানুষের মধ্যে তিনি অতীতে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিলেন সেদিকে তাকিয়ে তাঁকে ছাড়া উচিত নয়।”
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর গড়ে বিজেপির রোড শোয়ে বোমাবাজি তৃণমূলের! এনআইএ তদন্তের দাবি জানালেন সৌমেন্দু
১৯৯৩ সালের সেই কালো রাত
উল্লেখ্য ১৯৯৩ সালের ১৬ই মার্চ বাম আমলে ২৬৭ বিবি গাঙ্গুলী স্ট্রিটের দোতলা একটি বাড়িতে রাত্রিবেলা ভয়ংকর বিস্ফোরণ (Bow Bazar Blast) হয়। গোটা বাড়ি গুঁড়িয়ে যায়। মৃত্যু হয় ৬৯ জনের। সেই মামলায় কলকাতার তৎকালীন সাট্টার বেতাজ বাদশা রশিদ খানের (Rashid Khan) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। পুলিশের তরফ থেকে সেই সময় দাবি করা হয়েছিল, “রশিদের কাছে যে পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত ছিল তা কলকাতার একটা বড় অংশ উড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।” এই মামলাতেই রশিদের ছায়া সঙ্গে মোঃ খালিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। ৩১ বছর জেল খাটার পর খালিদ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার দাবিতে রাজ্য সরকারের সেন্টেন্স রিভিউ বোর্ডে আবেদন করেছিল। সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি সব্যসাচীর ভট্টাচার্য তাঁকে এপ্রিল মাসে ১৫ দিনের মধ্যে ছাড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্যের তরফে সেই নির্দেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে আইনি জটিলতা রয়েছে দাবি করে এক মাসের জন্য নির্দেশ কার্যকর করার বিষয়ে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours