সিঁথি ব্রাহ্মসমাজ-দর্শন ও শ্রীযুক্ত শিবনাথ প্রভৃতি ব্রাহ্মভক্তদিগের সহিত কথোপকথন ও আনন্দ
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
ক্লৈব্যং মাস্ম গমঃ পার্থ নৈতিৎ ত্বয্যুপপদ্যতে
ক্ষুদ্রং হৃদয়দৌর্বল্যং ত্যক্তোত্তিষ্ঠ পরন্তপ।।
গীতা—২/৩/
বৈদ্যের মতো আচার্যও (Ramakrishna) তিনপ্রকার। ধর্মোপদেশ দিয়ে শিষ্যদের আর কোন খবর লয় না--সে আচার্য অধম। যিনি শিষ্যদের মঙ্গলের জন্য তাদের বরাবর বুঝান, যাতে তারা উপদেশগুলি (Kathamrita) ধারণা করতে পারে, অনেক অনুনয়-বিনয় করেন, ভালোবাসা দেখান-- তিনি মধ্যম থাকের আচার্য। আর যখন শিষ্যেরা কোনও মতে শুনছে না দেখে কোন আচার্য জোর পর্যন্ত করেন, তাঁরে বলি উত্তম আচার্য।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ
যতো বাচো নিবর্তন্তে। অপ্রাপ্য মনসা সহ।
(তৈত্তিরীয় উপনিষদ—২/৪)
ব্রহ্মের স্বরূপ মুখে বলা যায় না
একজন ব্রাহ্মভক্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, ঈশ্বর সাকার না নিরাকার?
শ্রীরামকৃষ্ণ (Ramakrishna)—তাঁর ইতি করা যায় না। তিনি নিরাকার আবার সাকার। ভক্তের জন্য তিনি সাকার। যারা জ্ঞানী অর্থাৎ জগৎকে যাদের স্বপ্নবৎ মনে হয়েছে, তাঁদের পক্ষে তিনি নিরাকার। ভক্ত জানে আমি একটি জিনিস, জগৎ একটি জিনিস। তাই ভক্তের কাছে ঈশ্বর ব্যক্তি হয়ে দেখা দেন। জ্ঞানী—যেমন বেদান্তবাদী—কেবল নেতি নেতি বিচার করে। বিচার করে জ্ঞানীর বোধে বোধে হয় যে, আমি মিথ্যা, জগৎও মিথ্যা—স্বপ্নবৎ। জ্ঞানী ব্রহ্মকে বোধ বোধ করে। তিনি যে কি, মুখে বলতে পারে না।
কিরকম জান? যেন সচ্চিদানন্দ-সমুদ্র-কুল-কিনারা নাই—ভক্তিহিমে স্থানে স্থানে জল বরফ হয়ে যায়-বরফ আকারে জমাট বাঁধে। অর্থাৎ ভক্তের কাছে তিনি ব্যক্তভাবে, কখন কখন সাকার রূপ ধরে থাকেন। জ্ঞান সূর্য উঠলে সে বরফ গলে যায়, তখন আর ঈশ্বরকে ব্যক্তি বলে বোধ হয় না।--তাঁর রূপও দর্শন হয় না। কি তিনি মুখে বলা (Kathamrita) যায় না। কে বলবে? তিনিই নাই। তাঁর আমি আর খুঁজে পান না।
আরও পড়ুনঃ “বিবেক, বৈরাগ্যরূপ হলুদ মাখলে তারা আর তোমাকে ছোঁবে না”
আরও পড়ুনঃ “ধ্যান করবার সময় তাঁতে মগ্ন হতে হয়, উপর উপর ভাসলে কি জলের নিচে রত্ন পাওয়া যায়?"
আরও পড়ুনঃ “পশ্চিমে বিবাহের সময় বরের হাতে ছুরি থাকে, বাংলাদেশে জাঁতি থাকে”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours