PM Modi: ‘স্যুইফট’ থেকে বহিষ্কার করলেও পরোয়া করে না ভারত, আমেরিকাকে বোঝালেন মোদি

SWIFT: ‘আর ভয় নয়’, রাশিয়া সফর সেরে বিশ্বকে কি এই বার্তাই দিলেন মোদি?...
IMG_IMG_MODI_PUTIN_DELHI_2_1_DNA0264F
IMG_IMG_MODI_PUTIN_DELHI_2_1_DNA0264F

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সফরটা মাত্র দু’দিনের। তবে তার প্রভাব বিরাট। তামাম বিশ্বকে বার্তা দিয়ে ফিরলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi)। রাশিয়া সফর সেরে ফিরে তিনি বুঝিয়ে দিলেন, ভারতকে উপেক্ষা করার যুগ এখন অতীত। বরং মোদি জমানায় বাড়তি গুরুত্ব দিতে হবে রামচন্দ্র-বুদ্ধের দেশকে।

রাশিয়া সফরে মোদি (PM Modi)

দিন কয়েক আগে মার্কিন চোখরাঙানি উপেক্ষা করে দু’দিনের সরকারি সফরে রাশিয়া গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সে দেশের রাজধানী মস্কোয় পা রাখার পরে পরেই যে রাজকীয় অভ্যর্থনার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জন্য, তা বিশ্বের যে কোনও রাষ্ট্রনেতার চোখে লাগার পক্ষে যথেষ্ট। কেবল তাই নয়, মোদির সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজ সেরে ব্যাটারি চালিত গাড়িতে করে রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবন ঘুরে দেখিয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন স্বয়ং। মোদি-পুতিনের এই বন্ধুত্বের ছবির জেরে গা রি রি করার কথা বিশ্বের বহু রাষ্ট্রনেতার। কারণ এই মুহূর্তে ভারতকে যে তাঁদের প্রত্যেকের পাশে চাই!

যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই বার্তা

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর মস্কোকে কার্যত একঘরে করে রেখেছিল আমেরিকা এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। যে জীবাশ্ম জ্বালানি রুশ অর্থনীতির অন্যতম শক্ত বুনিয়াদ, সেই তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছিল আমেরিকার জো বাইডেন সরকার। তার জেরে খানিক টাল খায় রাশিয়ার অর্থনীতি। মস্কোর এই দুর্দিনেও পাশে থেকেছে নরেন্দ্র মোদির ভারত। বিশ্বনেতাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে লাগাতার জ্বালানি কিনে গিয়েছে ভারত। তার জেরে বিশ্বনেতাদের অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ভারত বুঝিবা মস্কোর পক্ষ নিয়েছে। বিষয়টি যে আদৌ তা নয়, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে মোদির বলা বাক্যবন্ধই তার সব চেয়ে বড় প্রমাণ। রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে তিনি বলেছিলেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়’। অর্থাৎ, ভারতের স্পষ্ট বার্তা, যুদ্ধ কোনও সমস্যার সমাধান নয়। সমাধান হতে পারে কূটনৈতিক আলোচনায়ই।

আরও পড়ুন: তিস্তা প্রকল্প রূপায়ণ করুক ভারত, চাইছেন হাসিনা, জানালেন কারণও

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ চলছেই

রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বের সুতো কেবল পুরানোই নয়, মজবুতও। এবং সেই সম্পর্কের কথা জানে তামাম দুনিয়া। তাই তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসেই মোদি যখন প্রথমবার রাশিয়া সফরে গেলেন, তখনই প্রমাদ গুণতে শুরু করেছিলেন বিশ্বের অনেক দেশের প্রেসিডেন্ট কিংবা প্রধানমন্ত্রীরা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। সেই যুদ্ধ এখনও চলছে। রাশিয়ার মতো শক্তিশালী একটি দেশের সঙ্গে দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে লড়াই করে যাওয়ার ক্ষমতা ইউক্রেনের নেই। তাহলে কী করে চলছে যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা? আসলে সরাসরি না হলেও, রাশিয়া-ইউক্রেনের এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। তার (PM Modi) জেরেই এখনও ক্লান্ত হয়নি ইউক্রেন। স্বীকার করেনি হার। উল্টে এই যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রাশিয়ার।

ভারতের কৌশলে কুপোকাত বিশ্ব

এই যুদ্ধের কারণেই রাশিয়ার ওপর আরোপ করা হয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা। রাশিয়াকে স্যুইফট (SWIFT) থেকে বেরও করে দেওয়া হয়েছে। (স্যুইফট হল আন্তর্জাতিক পেমেন্ট সিস্টেম। এর থেকে বের করে দেওয়া হলে আর্থিক-সহ নানা ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় কোনও একটি দেশকে।) এতদসত্ত্বেও রাশিয়ার হাত ছাড়েনি ভারত। বরং রাশিয়া-সহ বিশ্বের ২০টি দেশের সঙ্গে রুপিতেই বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদির দেশ। এতে কমতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের আধিপত্য। এতেই অশনি সঙ্কেত দেখছেন মার্কিন রাজনীতিবিদদের একটা বড় অংশ। কারণ বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের তালিকার পাঁচ নম্বরে রয়েছে ভারত। ব্রিটেনকে সরিয়ে এই জায়গাটা দখল করেছে নয়াদিল্লি (PM Modi)। বিভিন্ন সমীক্ষায় প্রকাশ, অচিরেই এই তালিকার চার নম্বরে উঠে আসবে ভারত। পিছিয়ে পড়বে জাপান। তাই আর যাই হোক ভারতকে উপেক্ষা করার দুঃসাহস এই মুহূর্তে নেই বিশ্বনেতাদের। তাই ‘আত্মনির্ভর ভারতে’র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়া সফর করে এলেও, উচ্চবাচ্য করছেন না তাঁরা। কারণ তাতে হিতে হতে পারে বিপরীত।

নির্ভীক নয়াদিল্লি

যেহেতু রাশিয়া-সহ বিশ্বের ২০টি দেশের সঙ্গে ভারত লেনদেন করছে রুপিতে, তাই স্যুইফট (SWIFT) থেকে বের করে দেওয়ার ভয়ে এখন আর ভীত নয় নয়াদিল্লি। বরং এই রুপিতে বাণিজ্য করায় আদতে দু’দিক থেকে লাভ হচ্ছে ভারতের। একদিকে যেমন সস্তায় রাশিয়া থেকে জ্বালানি কিনছে ভারত (খদ্দের কমে যাওয়ায় দাম কমেছে), তেমনি অন্যদিকে রুপিতে ব্যবসা হওয়ায় খরচ করতে হচ্ছে না সঞ্চিত ডলার। ভারতের এই মজবুত অর্থনীতি এবং স্ট্যাটেজিতেই কুপোকাত বিশ্বের তাবড় নেতারা। রাশিয়া সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরও একবার পুতিনকে শুনিয়েছেন শান্তির ললিত বাণী। প্রধানমন্ত্রী এই সফরেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, ‘এটা যুদ্ধের সময় নয়’। পুতিনকে দেওয়া মন্ত্র যে কেবল রুশ প্রেসিডেন্টকেই নয়, তামাম বিশ্বকেই বার্তা দেওয়া, তা বুঝতে বাকি থাকে না কারও। ভারতের মজবুত অর্থনীতি, কৌশলী চাল এবং ‘যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই’ গোছের বার্তায় মজেছে বিশ্ব। তাই মোদির রাশিয়া সফর এবং পুতিনের সঙ্গে ‘মাখামাখি’র পরেও মুখে কুলুপ বিশ্বনেতাদের (PM Modi)।

ভারতে যে এখন চলছে মোদি-রাজ!

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles