মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পাইন বর্জ্য ব্যবহারের (Pirul Handicrafts) মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদের জন্য জীবিকা নির্বাহের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন দিল্লির বাসিন্দা দুই বোন নূপুর এবং শর্বরী পোহারকর। ২০২১ সালে ‘পিরুল হ্যান্ডিক্রাফ্টস’ নামে একটি স্টার্টআপ তৈরি করেন তাঁরা। গ্রামের অন্তত ১০০ জন মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে ২০,০০০ কেজি পাইন বর্জ্যকে ব্যবহারযোগ্য পণ্যে পরিণত করতে সক্ষম হয় এই সংস্থা।
কবে থেকে, কীভাবে শুরু
নেপাল সীমান্তে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝেমাঝেই দাবানল দেখা যায়। দাবানল দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে পাইন গাছের বর্জ্য (Pirul Handicrafts) থাকায়। উত্তরাখণ্ডের ৭১ শতাংশ জমি বনাঞ্চল। পাইন গাছগুলি রাজ্যের প্রায় ১৬ শতাংশ বনাঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে। গরম কালে পাইন গাছের সূঁচ বা কাঁটা জমা হওয়া অঞ্চলে অনেক সময় আগুন ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্যের বন বিভাগ এটি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছে। পিরুল জমা করার কথাও বলা হয়েছে। সালটা ২০২০। দিল্লির তরুণী নূপুর পোহারকর পশু চিকিৎসক হিসেবে উত্তরাখণ্ডে কাজ করতে যান। তখনই পাইন বর্জ্যের কারণে হওয়া একটি অগ্নিকাণ্ডের সাক্ষী হন তিনি। এরপরই তিনি ভাবতে থাকেন এর থেকে পরিত্রাণের উপায়।
পাইন বর্জ্য থেকে হস্তশিল্প
২০২১ সালে, নূপুর ইউটিউবে একটি ভিডিও দেখেন যেখানে পাইন সূঁচ থেকে হস্তশিল্প তৈরি করা হয়। এটি একটি খুব সাধারণ হস্তশিল্প নয়। শুধুমাত্র কয়েকটি গ্রাম হিমাচল প্রদেশে সক্রিয়ভাবে এই পাইন বর্জ্য থেকে এই পণ্যগুলি তৈরি করে। এটা নূপুরের খুব ভালো লাগে। তাঁর ডিজাইনার বোন শর্বরীর সঙ্গে আলোচনা করার পরে, নূপুর পাইন বর্জ্য থেকে হস্তশিল্প তৈরিতে মনোনিবেশ করেন। শুরু হয় দুই বোনের স্টার্টআপ ‘পিরুল হ্যান্ডিক্রাফ্টস’। নূপুর এবং শর্বরী গ্রামের লোকজনকে কাছাকাছি বন থেকে পাইন বর্জ্য সংগ্রহ করতে উদ্দীপিত করেন।
আরও পড়ুন: ছুটির অভাবে ঘুরতে যেতে পারছেন না? অগাস্টেই আসতে পারে সেই সুযোগ!
কীভাবে চলে কাজ
প্রথমে ১৫ জন মহিলা মিলে কাজ শুরু হয় এখন ৭টি গ্রামের মোট ১০০ জন মহিলা এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। চম্পাওয়াত অঞ্চলের খেতিখান, ত্যরসুন, পাটন, চাঁনমারি, পান্ডা, পাটি, এবং ঝুলাঘাট গ্রামের মেয়েরা এই কাজে হাত লাগিয়েছেন। তাঁরা প্রথমে এই পাইন (Pirul Handicrafts) সূঁচগুলি সংগ্রহ করে, এরপর এগুলি পরিষ্কার করে এবং কিছু সময়ের জন্য জলে ভিজিয়ে রাখে। তারপর, কোলিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে সহজ পণ্য তৈরি করা হয়। দলটি বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে যেমন চা কোস্টার, কানের দুল, সংরক্ষণ বাক্স, হ্যান্ডব্যাগ, পরিবেশন ট্রে, টেবিল ম্যাট, এবং প্ল্যান্টার। এই কাজ করে গ্রামের মহিলারা প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকা রোজগার করেন। এখনও পর্যন্ত, এই গ্রামীণ মহিলারা প্রায় ১২,০০০ পণ্য বিক্রি করেছেন। দিল্লি, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ শুধু নয়, আমেরিকাতেও উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand) এই পণ্যের চাহিদা রয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours