তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
বর্ষার মরশুমে সর্দি-কাশির ভোগান্তি (Monsoon Diseases) লেগেই থাকে। কিন্তু হঠাৎ জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষত শিশুদের মধ্যে ভোগান্তি বাড়ছে। সাধারণ ভাইরাস ঘটিত জ্বর নাকি অ্যাডিনো কিংবা করোনার কোনও নতুন প্রজাতি, সে নিয়েই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল!
কী ধরনের সমস্যা (Monsoon Diseases) দেখা দিচ্ছে?
শিশুরোগ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শিশুদের জ্বর হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই শরীরের তাপমাত্রা ১০৩-১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়ে যাচ্ছে। পাশপাশি গলা ব্যথা, সর্দি, কাশির মতো একাধিক উপসর্গ দেখা দিচ্ছে (Monsoon Diseases)। অনেকের চোখ লাল হয়ে যাচ্ছে। কনজাংটিভাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। খাওয়ার ইচ্ছে থাকছে না। তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে। জ্বর কমলেও কাশির ভোগান্তি লেগেই থাকছে।
কাদের ভোগান্তি (Monsoon Diseases) বেশি?
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মূলত স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যেই ভোগান্তি বেশি দেখা যাচ্ছে। বিগত দু'সপ্তাহে সাত থেকে বারো বছর বয়সিদের মধ্যেই জ্বরের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। তাই চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, ভাইরাস ঘটিত সংক্রমণের জেরেই স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে জ্বরের প্রকোপ (Monsoon Diseases) বাড়ছে।
আশঙ্কার কারণ কী?
গত দু'সপ্তাহে শিশুদের মধ্যে জ্বর আর সর্দি-কাশিতে (Monsoon Diseases) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আর তার জেরেই উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল। চলতি বছরের প্রথমেই অসংখ্য শিশু অ্যাডিনোর দাপটে কাবু হয়েছিল। নবজাতক থেকে স্কুলপড়ুয়া, অনেকেই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। সাধারণ জ্বর কিংবা সর্দি মনে হলেও পরবর্তীকালে নানান জটিলতা দেখা দিয়েছিল। এখন ফের জ্বর এবং কনজাংটিভাইটিসের প্রকোপ বাড়ার জেরে উদ্বেগ বাড়ছে। পাশপাশি, করোনার নতুন প্রজাতি পিরোলা এবং এরিস সক্রিয় হচ্ছে। এই দুই প্রজাতি শুধু ভারতে নয়, পৃথিবী জুড়ে দাপট বাড়াচ্ছে। করোনা ও প্রথম পর্বে সাধারণ সর্দি-কাশি আর জ্বরের উপসর্গ নিয়েই হাজির হয়। তাই সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল। শিশুরোগ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে এই সময়ে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। তাই জ্বর একেবারেই অবহেলা করা যাবে না।
চিকিৎসকরা কী পরামর্শ (Monsoon Diseases) দিচ্ছেন?
চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর হলে একেবারেই স্কুলে যাওয়া চলবে না। বাড়িতে থেকেই বিশ্রাম নিতে হবে। সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ (Monsoon Diseases) দেখা দিলে শিশুকে ভিড় জায়গায় নিয়ে যাওয়া উচিত নয়। তাঁরা জানাচ্ছেন, সর্দি-কাশি হলে শরীর দুর্বল থাকে, যে কোনও ভাইরাস আরও দ্রুত দেহে প্রবেশ করতে পারে। তাই সর্দি-কাশি হলে ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে। পাশপাশি স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছেও চিকিৎসকদের অনুরোধ, কোনও পড়ুয়া যাতে জ্বর হলে স্কুলে না আসে, সেদিকে নজর রাখতে হবে। অভিভাবকদেরও বোঝাতে হবে। কারণ, জ্বর হলেই সংক্রমণ অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইনফ্লুয়েঞ্জা হোক কিংবা অ্যাডিনো, করোনার মতো মারাত্মক ভাইরাস, সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। পাশপাশি আক্রান্তেরও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। তাই বাড়িতে থেকে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। পাশপাশি, সর্দি-কাশি বা জ্বর হলে গরম জলে স্নান করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। এসি একেবারেই ব্যবহার করা যাবে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই ওষুধ খেয়ে দেহের তাপমাত্রা কমার সময়ে খুব ঘাম হয়। শরীরে অস্বস্তি তৈরি হয়। তখন এসি ঘরে বাচ্চাদের রাখা হয়। তার জেরে সমস্যা আরও বাড়ছে। চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর হলে বারবার তাপমাত্রা মাপতে হবে। তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা জরুরি। প্রয়োজনীয় শারীরিক পরীক্ষা করে তবেই কারণ জানা যাবে। তাই জ্বর হলে একেবারেই অবহেলা করা চলবে না।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours