মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জাতিগত সমীকরণের কথা মাথায় রেখে দ্রুত বদলে নেওয়া হচ্ছে গ্রামের নাম। হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরবাসীর (Manipur Violence) এহেন প্রবণতায় রাশ টানল মণিপুর সরকার। সাফ জানিয়ে দিল, জাতিগত সমীকরণের কথা ভেবে কোনও জায়গার নাম বদলানোর চেষ্টা হলে কারাদণ্ড হতে পারে তিন বছর পর্যন্ত। দু লাখ টাকা জরিমানাও হতে পারে।
বিধানসভায় পাশ নয়া বিল
এই মর্মে বিধানসভায় বিল পাশ করিয়ে নিয়েছে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংহের সরকার। রাজ্যপাল স্বাক্ষর করলেই বিলটি পরিণত হবে আইনে। বিলটির নাম ‘মণিপুর নেম অফ প্লেসেস বিল ২০২৪’। বিলটিতে (Manipur Violence) বলা হয়েছে, জাতিগত সমীকরণের প্রেক্ষিতে কোনও জায়গার সরকারি নাম বদলের চেষ্টা হলে সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধি-সহ দোষীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে।
অশান্ত মণিপুর
গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে গত বছর আচমকাই অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। মণিপুরে একাধিক উপজাতির বাস। এর মধ্যে মূল দ্বন্দ্ব মেইতেইদের সঙ্গে কুকিদের। এ রাজ্যের জনসংখ্যার সিংহভাগই মেইতেই সম্প্রদায়ের। আর জো-কুকিরা রয়েছেন ৪০ শতাংশ। মেইতেইরা মূলত বাস করেন ইম্ফল উপত্যকায়। পাহাড়ি অঞ্চলে বাস করেন জো-কুকি সহ অন্য জনগোষ্ঠীর মানুষ। গত বছর ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুরের মিছিলকে ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত। তফশিলি জাতির মর্যাদার দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন মেইতেইরা।
তার পরে রাজ্য সরকারকে মেইতেইদের তফশিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল মণিপুর হাইকোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশের বিরোধিতায় পথে নামে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। এই মিছিলকে কেন্দ্র করেই সংঘর্ষ বাঁধে। যার জেরে খুন হন বহু মানুষ। জখমও হন বহু মানুষ। ভিটে ছেড়ে অন্যত্র চলে যান লোকজন। পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীও নামানো হয়। তার পরেও মণিপুরে নেভেনি অশান্তির আগুন। জ্বলে-পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে একের পর এক বাড়ি। পরে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে শান্তি ফেরে চিত্রাঙ্গদার দেশে। তার পরেই জাতিগত সমীকরণের কথা মাথায় রেখে দ্রুত বদলে ফেলা হচ্ছে গ্রামের নাম। মণিপুরবাসীর এই প্রবণতা রুখতেই নয়া বিল পাশ করল মণিপুর সরকার (Manipur Violence)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours