মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারে ইতিহাসের প্রশ্নপত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’-এর উল্লেখ! ভারতের ম্যাপ পয়েন্টিংয়ে চিহ্নিত করতে বলা হল 'আজাদ কাশ্মীর'! পাকিস্তানের ভাষা কেন মাধ্যমিকের টেস্ট পেপারে? আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক। এই বিতর্কিত প্রশ্ন নিয়ে সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। ওই টেস্ট পেপার সংশোধন করা হোক, দাবি তাঁর। আবার এই বিষয়টি সামনে আসা মাত্রই এ নিয়ে ট্যুইট করেছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। ১৩২ নম্বর পাতার ওই অংশের ছবি ট্যুইট করে তিনি লিখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সমর্থন করছে।
1.1 The #MamataGovt is a supporter of the separatist forces
— Dilip Ghosh (@DilipGhoshBJP) January 17, 2023
Check the Marked Section of History Question Paper on page 132 in Madhyamik Test Paper 2023. Students have been asked to identify the part of Pakistan occupied Kashmir as Azad Kashmir. pic.twitter.com/1c2npeR0Um
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রশ্ন নিয়ে তোলপাড় রাজ্য
বিভিন্ন স্কুলের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে সদ্যই প্রকাশিত হয়েছে মাধ্যমিকের টেস্ট পেপার। আর সেই টেস্ট পেপারের এক প্রশ্ন নিয়েই বিতর্ক তুঙ্গে। অভিযোগ, মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির পরীক্ষার্থীদের ভারতের মানচিত্রে ‘আজাদ কাশ্মীর’ চিহ্নিত করতে বলেছে। টেস্ট পেপারে রাখা হয়েছে সেই প্রশ্ন। আজ,মঙ্গলবার সেই প্রশ্নমালা প্রকাশ্যে আসতেই বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এই নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, “এ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীকে খোঁজ নিতে হবে। কে বা কারা এর পিছনে রয়েছেন, জানতে হবে। অভিযোগ যদি সত্যি হয়, প্রকাশকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এটি রাজ্যের তোষণ নীতির পরিণাম। এর মধ্যে জাতীয়তাবাদ বিরোধী একটা প্রচ্ছন্ন সুর রয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের উৎসাহিত করবে এ সব।” তিনি আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার আলাদা ভাবে স্বাধীন তদন্ত করবে। আবার এই প্রশ্ন নিয়ে মমতার সরকারকে একহাত নিয়েছেন বিজেপি সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি লেখেন, "বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির সমর্থক হল মমতার সরকার। পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরকে আজাদ কাশ্মীর হিসেবে চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে পড়ুয়াদের।"
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রতিক্রিয়া
পর্ষদের এমন প্রশ্ন নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। বিষয়টি নিয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এটা যখন নজরে এসেছে, আমরা পুরো বিষয়টা জানার চেষ্টা করছি। জেনে নিয়ে বাকি পদক্ষেপ করব। যদি আমরা সংশোধন করতে পারি, তাহলে সংশোধন করব। নাহলে প্রয়োজনীয় তথ্য জানানো যাবে।” তিনি আরও বলেন, “যাঁরা প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন, তাঁরা কেন এরকম প্রশ্ন রেখেছেন, তা আমরা জানি না। আমরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখব এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করব।”
স্কুলের কী প্রতিক্রিয়া?
প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে মালদহের সেই স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে যোগাযোগ করা হয়। ‘আজাদ কাশ্মীর’ নিয়ে তাঁরা কোনও ভুল করেননি বলেই দাবি করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক স্বামী তপহারানন্দ মহারাজ বলেন, “আমাদের প্রশ্নপত্র নিয়ে একটা বিতর্ক হয়েছে। যিনি প্রশ্নপত্রটি করেছেন তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তিনি যেটা বলেছেন, সেটাই আমি বলছি। এখানে বইতে যে তথ্য রয়েছে সেই তথ্যই প্রশ্নপত্রে তুলে ধরা হয়েছে। যে প্রশ্নটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেটি ইতিহাসের একটা অংশ। সিলেবাস থেকেই প্রশ্ন তুলে ধরা হয়েছে। সরকারি বইতে ওরকম ধরণের উল্লেখ আছে। পরীক্ষায় ম্যাপ পয়েন্টিং থাকে। সেখানে এমন একটা জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই জায়গাটাকে ভারত সরকার মান্যতা দেয় না। ‘আজাদ কাশ্মীর’টা কিন্তু পাঠ্যপুস্তক থেকেই উল্লেখ করা হয়েছে।”
তবে এখানেই বিতর্ক থামছে না। কীভাবে এই রকম একটি স্পর্শকাতর ও বিতর্কিত শব্দ পর্ষদের মাধ্যমিক টেস্টপেপারে জায়গা পেল ও তা নিয়ে কী পদক্ষেপ নিতে চলেছে পর্ষদ, সেটিই এখন দেখার।
+ There are no comments
Add yours