মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রত্যেক বছর ডেঙ্গির দাপটে নাজেহাল হয় বঙ্গবাসী। এবার তার সঙ্গে শক্তি বাড়িয়েছে ম্যালেরিয়া (Malaria)। যার জেরে ভোগান্তি আরও বাড়ছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, মশার এই জোড়া আক্রমণ সামলাতে পারবে কি রাজ্য প্রশাসন? নাকি ডেঙ্গির মতো ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাবে? উদ্বিগ্ন রাজ্যবাসী!
কী বলছে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট (Malaria)?
স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহেই ম্যালেরিয়া (Malaria) সংক্রমণ ছড়িয়েছে দ্বিগুণ। তাই উদ্বেগ বাড়ছে। ২০২২ সালে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২৬ জন। কিন্তু ২০২৩ সালের জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১২৯০ জন। এই সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। বিশেষত, গিরিশ পার্ক, শোভাবাজার, শিয়ালদহ, কসবা, খিদিরপুরে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ মারাত্মক। তবে, কলকাতার পাশপাশি চিন্তা বাড়াচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং হাওড়া। এই তিন জেলাতেও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। সংক্রমণ আরও ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য কর্তাদের একাংশ।
কেন বাড়ছে ম্যালেরিয়ার (Malaria) প্রকোপ?
পতঙ্গবিদরা জানাচ্ছেন, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য বাড়ছে ম্যালেরিয়া। তাঁরা জানাচ্ছেন, ম্যালেরিয়ার (Malaria) সংক্রমণ বহন করে স্ত্রী অ্যানোফিলিস স্টিফেনসাই। এই মশার প্রজাতি জমা জলে বংশ বিস্তার করে। বিশেষত, বড় জায়গার জমা জল, যেখানে সূর্যের আলো পড়ে, সেখানেই ম্যালেরিয়ার রোগ বহনকারী মশার আঁতুড় ঘর। আর শহরের অধিকাংশ জায়গায় বৃষ্টি হলেই জল জমে। বৃষ্টি কমলেও, শহরের বিভিন্ন জায়গায় জল সরতে কয়েক দিন সময় লাগে। আর জমা জল থেকেই বাড়ছে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ। শহরের রাস্তায় জল জমা বন্ধ করতে না পারলে কিংবা নর্দমা অপরিচ্ছন্ন থাকলে ম্যালেরিয়া থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন বলেই মনে করছেন পতঙ্গবিদরা।
ম্যালেরিয়া (Malaria) রুখতে কী করবেন সাধারণ মানুষ?
চিকিৎসকদের পরামর্শ, ম্যালেরিয়া (Malaria) রুখতে নিজের বাড়ি ও আশপাশ পরিচ্ছন্নতায় বিশেষ নজর দিক এলাকাবাসী। ছাদে কিংবা বাগানে যাতে কোনও ভাবেই জল না জমে, সে দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হোক। পাশপাশি, নিকাশির সমস্যা হলে পুরসভাকেও জানাতে হবে। কারণ, পরিষ্কার পরিবেশ না থাকলে এই রোগ নিয়ন্ত্রণ মুশকিল বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
তবে, জ্বর হলে মোটেও অবহেলা করা চলবে না। চিকিৎসকদের পরামর্শ, জ্বর টানা তিন দিন থাকলে, অবশ্যই রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। যাতে সময় মতো চিকিৎসা শুরু করা যায়।
ম্যালেরিয়া রুখতে কী পদক্ষেপ করবে স্বাস্থ্য দফতর?
স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী অবশ্য জানিয়েছেন, ম্যালেরিয়া (Malaria) রুখতে পারেন সাধারণ মানুষ। তিনি জানান, মানুষের সচেতনতা না থাকলে এই সমস্যা আটকানো যাবে না। তবে, ডেঙ্গির মতো ম্যালেরিয়া ভয়াবহ হবে না। কারণ, তার চিকিৎসা রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শুধুই সাধারণ মানুষের সচেতনতা গড়ার কাজ কি যথেষ্ট? ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ রুখতে প্রশাসনের আরও তৎপরতার কি প্রয়োজন নেই? সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, "প্রশাসন দায়িত্ব পালন করছে।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours