মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরব সাগরের তীর ছেড়ে তাপী নদীর ধার। সেখান থেকে সটান ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে আশ্রয় নিয়েছেন মহারাষ্ট্রের শিবসেনার (Shiv Sena) বিদ্রোহী বিধায়করা! পশ্চিমের বিজেপি (BJP) শাসিত গুজরাট (Gujrat) ছেড়ে কেনই বা তাঁরা উড়ে গেলেন উত্তর-পূর্বের আসামে (Assam)? বিশেষত রাজ্যটি যখন বন্যা কবলিত। আসুন, জেনে নেওয়া যাক, মহারাষ্ট্রের বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে কেন দলবল নিয়ে হাজির হলেন হিমন্ত বিশ্বশর্মার রাজ্যে।
আরও পড়ুন : দল বিরোধী আইন এড়াতে প্রয়োজনীয় সংখ্যা জোগাড় করে ফেলেছেন শিন্ডে?
'নরম হিন্দুত্ব' নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরেছিল তাঁরই মন্ত্রিসভার সদস্য একনাথ শিন্ডের (Eknath Shinde)। তাঁর দাবি, কংগ্রেস ও এনসিপি নয়, বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে গড়া হোক সরকার। মুখ্যমন্ত্রী তাতে রাজি না হওয়ায় অনুগামী ৩৬ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপি শাসিত গুজরাটের সুরাটে চলে যান একনাথ। সেখান থেকে চলে যান আসামের গুয়াহাটিতে। সেখানকার এক রাজকীয় হোটেলে রয়েছেন শিন্ডে সহ শিবসেনার অন্য বিধায়করা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায়ও বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছিল আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে। বুধবার সকালে শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়করা পৌঁছানোর আগেই তাঁর গাড়ি পৌঁছে যায় পূর্ব নির্ধারিত হোটেলে। প্রশ্ন হল, কেন গুজরাট ছেড়ে আসামে আশ্রয় নিলেন শিন্ডে ও তাঁর অনুগামী বিধায়করা? বিশেষ করে, দুটি রাজ্য যখন দেশের দুপ্রান্তে অবস্থিত?
আরও পড়ুন : সরকারি বাসভবন ছেড়ে ফিরলেন 'মাতোশ্রী'তে, মুখ্যমন্ত্রিত্ব কি ছাড়বেন উদ্ধব?
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এর অনেকগুলি কারণ রয়েছে। প্রথমত, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে গুজরাটের দূরত্ব আসামের চেয়ে ঢের কম। তাই বিদ্রোহী বিধায়করা যখন গুজরাটে ছিলেন, তখন শিবসেনার তরফে একাধিকবার যোগাযোগ করা হয়েছিল তাঁদের সঙ্গে। এই বিদ্রোহীদের টোপ দিয়ে দলের মূল স্রোতে ফেরাতে পারলেই শিন্ডের বিদ্রোহে জল ঢালা হয়ে যেত। তা এড়াতেই মধ্যরাতের বিমানে গুজরাট ছাড়েন শিন্ডে ও তাঁর অনুগামীরা।
দ্বিতীয়ত, হিমন্ত বিশ্বশর্মা দক্ষ রাজনীতিবিদ। কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তিনি। উত্তর-পূর্বে কংগ্রেসের কোমর ভেঙে দিয়েছেন এই রাজনীতিবিদ। তাই তাঁর ওপরই ভরসা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। হিমন্তের চালে শিবসেনা-বিরোধীদের মাত দেওয়া সহজ হবে বলেই মনে করছেন পদ্ম নেতারা। সেই কারণেই হিমন্তের রাজ্যের হোটেলে ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে বিদ্রোহী বিধায়কদের। কড়া নিরাপত্তার বলয় ভেঙে যে হোটেলে ঢুকতে পারবে না কাকপক্ষীও।
সর্বোপরি, রয়েছে হিমন্তের ওপর বিজেপির অশেষ আস্থা। কংগ্রেস ভেঙে আসা হিমন্ত আসামের একের পর এক নির্বাচনে বিপুল জয় এনে দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরকে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত কার্বি আংলং নির্বাচনেও বিরোধীদের দুরমুশ করে দিয়েছেন তিনি। যার জেরে বিজেপি নেতৃত্বের বিশেষ ভরসাস্থল হয়ে উঠছেন উত্তর-পূর্বের এই নেতা। তাই মধ্যরাতের বিমানে হিমন্তের ডেরায় পাঠানো হয়েছে শিবসেনার বিদ্রোহী বিধায়কদের।
+ There are no comments
Add yours