Maha Shivratri: আজ মহাশিবরাত্রি, পবিত্র ব্রত পালনের নেপথ্য লৌকিক কাহিনী জানুন

ভক্তদের কাছে শিবরাত্রির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে
shiva(1)
shiva(1)

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: ভক্তদের কাছে শিবরাত্রির বিশেষ মাহাত্ম্য রয়েছে। এইদিন দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনায় মেতে ওঠেন দেশবিদেশের ভক্তরা। তাঁদের বিশ্বাস এই বিশেষ তিথিতে মহাদেব সন্তুষ্ট হলে সকল মনস্কামনা পূরণ করেন। এই বিশেষ তিথিতে ভক্তরা একটি সারাদিনব্যাপী উপবাস পালন করে এবং বিশ্বজুড়ে শিব মন্দিরগুলিতে পূজা করা হয়। ভক্তরা সাধারণত শিবলিঙ্গে দুধ, বেলপাতা নিবেদন করেন এবং মোক্ষ প্রার্থনা করেন।
 বেশ কয়েকটি পুরাণে মহা শিবরাত্রির (Maha Shivratri) উল্লেখ পাওয়া যায়। মধ্যযুগীয় শৈব গ্রন্থগুলিতে শিবরাত্রির দিন উপবাস ও লিঙ্গরূপের শিবের পূজার কথা উল্লেখ রয়েছে।


শিবরাত্রির ব্রত পালনের লৌকিক কাহিনী

হিন্দু মহাপুরাণ তথা শিবমহাপুরাণ (Maha Shivratri) অনুসারে এই রাত্রেই শিব সৃষ্টি, স্থিতি ও প্রলয়ের মহা তাণ্ডব নৃত্য করেছিলেন। আবার অন্য একটি পৌরাণিক আখ্যান মতে, এই রাত্রেই শিব ও পার্বতীর বিয়ে হয়েছিল।  এই মহাশিবরাত্রিতে শিব তাঁর প্রতীক লিঙ্গ তথা শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়ে জীবের পাপনাশ ও মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। 


কিন্তু শিবরাত্রির ব্রত পালনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটি প্রচলিত কাহিনী।  এই কাহিনী তিনজনকে কেন্দ্র করে শিব, যমরাজ এবং এক ব্যাধ।
লৌকিক কথা অনুসারে, কাশীতে বাস করতেন এক ব্যাধ। এমনই একদিন শিকারে বেরিয়ে দিনভর অভুক্ত ছিলেন সেই ব্যাধ। ক্ষুধার্থ অবস্থায় তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এক গাছের নিচে। এদিকে যখন তাঁর ঘুম ভাঙল তখন সন্ধ্যা। হিংস্র জন্তুতে ভর্তি সেই জঙ্গল। প্রাণ বাঁচাতে উঠে পড়লেন একটি বেল গাছে। সেখানেই রাত্রিযাপন করেছিলেন ওই শিকারী।


এদিকে ওই বেলগাছের নিচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ। গাছে ব্যাধের নড়াচড়ার ফলে ওই গাছ থেকে বেশ কয়েকটি বেলপাতা পড়েছিল শিবলিঙ্গে। আর ব্যাধ ছিলেন উপবাসী। দিনটি ছিল শিবরাত্রির দিন। পরের দিনে ব্যাধ বাড়ি ফিরে খেতে বসলে তাঁর বাড়িতে আসেন এক অতিথি। এদিকে ঘরে খাবার কম। তাই অতিথি সেবা করতে নিজের খাবারই সেই অতিথিকে নিবেদন করেছিলেন শিকারী। ফলে নিজের অজান্তেই পালন করে ফেলেছিলেন ব্রত।

তারপর কেটে গিয়েছিল বহু বহু বছর। ব্যাধের মৃত্যুর সময় তাঁকে নিতে আসেন যমদূতেরা। এদিকে ব্যাধকে নিতে আসেন শিবদূতেরাও। দুই পক্ষের দূতদের মধ্যে বাধে লড়াই। অবশেষে যমদূতরা কৈলাসে যান দেবাদিদেবকে নালিশ করতে। তখন শিবপ্রহরী নন্দী যমদূতদের বলেন, যেহেতু ব্যাধ শিবচতুর্দশীর দিনে ব্রত পালন করেছিলেন তাই পুণ্যলাভ করেছেন। এই কারণেই যমদূতরা তাঁকে নিয়ে যেতে পারেন না। সমস্ত ঘটনা যমদূতরা জানিয়েছিলেন যমরাজকে। সব শুনে যমরাজ বলেছিলেন, শিব চতুর্দশীতে এই ব্রত যিনি পালন করবেন তিনি সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা পাবেন। আরও বলেছিলেন, সেই ব্রতপালনকারীর ওপরে থাকবে না যমের অধিকার।


আবার হিন্দু পুরাণ অনুসারে, এই দিনে ভগবান শিব দেবী পার্বতীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ভগবান শিব পুরুষকে (মননশীলতা) মূর্ত করেছেন, যেখানে মা পার্বতীর প্রকৃতির (প্রকৃতি) ব্যক্তিত্ব রয়েছে। চেতনা এবং শক্তি উভয়ের মিলনের সাথে এটি সৃষ্টিকে সহজ করে তোলে।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

 

 

 

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles