মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘মধ্যপ্রদেশ স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস’-এর পরিদর্শনে সে রাজ্যের একটি বেআইনি মাদ্রাসায় (Illegal Madrasa) বেহাল অবস্থা দেখা গেল। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) রতলাম জেলায় অবস্থিত এই মাদ্রাসা এখনও নির্মীয়মাণ এবং সেখানকারই খোলা মাদ্রাসার মেঝেতে থাকছে ছাত্রীরা। রাতে সেখানেই শুতে হচ্ছে তাদের। জানা গিয়েছে, ওই মাদ্রাসার নাম দারুল উলুম আয়েশা সিদ্দীকি লিলবানাত। এই মাদ্রাসার বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার ও অপর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধার। ছাত্রীদের মৌলিক অধিকারও হুমকির মুখে পড়েছে এই মাদ্রাসায়।
৩০-৩৫ জন মেয়ে থাকছে একই ঘরে
প্রসঙ্গত এই মাদ্রাসাতে (Illegal Madrasa) হঠাৎই সারপ্রাইজ ভিজিট করে ‘মধ্যপ্রদেশ স্টেট কমিশন ফর প্রটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস’-এর আধিকারিকরা এবং সেখানেই তাঁরা দেখতে পান যে মাদ্রাসার সুযোগ-সুবিধা একেবারেই অপর্যাপ্ত। এই পরিদর্শনেই নজরে আসে ৩০ থেকে ৩৫ জন মেয়ে যাদের বয়স ৫-১৫ বছরের মধ্যে, তাদের প্রত্যেককে একটি মাত্র ঘরে রাখা হয়েছে। এই ঘরে না আছে পর্যাপ্ত বিছানা, না আছে কোনও ব্যবস্থা, না আছে অন্য কোনও সুযোগ সুবিধা। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছে যে মেয়েদের একেবারে ঠান্ডা মেঝেতেও শুতে হচ্ছে। এদেরই মধ্যে দেখা যায় একজন মেয়েকে, যে কিনা জ্বরে আক্রান্ত, তাকে ওই ঠান্ডা মেঝেতে শুতে হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে যে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (Illegal Madrasa) এমন অবস্থা কেন?
মাদ্রাসার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে জামিয়া ইসলামিয়া ইস্তাতুল উলুম আক্কালকুয়া, নামের একটি সংগঠনের
‘মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh) স্টেট কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চিল্ড্রেন রাইটসে’র একজন সদস্য নিবেদিতা শর্মা এ বিষয়ে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং এই পরিস্থিতি দেখে তিনি আবেগপ্রবণও হয়ে পড়েন। তিনি এর জবাবদিহি চান মাদ্রাসা প্রশাসনের কাছে। তাঁদেরকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেন যে তাঁরা কেন মেয়েদেরকে এই অবস্থায় ছেড়ে দিলেন। তবে নিবেদিতা শর্মার এই প্রশ্নের জবাবে কোনওরকম সদুত্তর দিতে পারেনি মাদ্রাসার প্রশাসন। তারা আরও বলতে পারেনি যে কেন এই অবস্থা বা কেন এমন অপর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা! জানা গিয়েছে, এই মাদ্রাসাটিতে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল একশোরও বেশি মুসলিম মেয়েদের বসতি হয়ে উঠেছে। আরও তথ্য সামনে এসেছে এই মাদ্রাসাতে কোনও রকমের স্বীকৃতি দেয়নি মধ্যপ্রদেশ সরকার। এই মাদ্রাসার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে জামিয়া ইসলামিয়া ইস্তাতুল উলুম আক্কালকুয়া, নামের একটি সংগঠনের যা মহারাষ্ট্রে অবস্থিত।
বিদেশি ফান্ডিং-এর অভিযোগ সামনে এসেছে (Illegal Madrasa)
এর পাশাপাশি ওই মাদ্রাসার আর্থিক লেনদেনও স্পষ্ট নয় বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন তথ্য যা উঠে আসছে তাতে জানা গিয়েছে, এই মাদ্রাসা বিদেশি ফান্ডিং-এ চলে, যা মাদ্রাসার প্রশাসন লুকোতে চাইছে। জানা গিয়েছে, এই মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থায় দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। চাইল্ড রাইটস কমিশনের সদস্যা ডঃ শর্মা আরও লক্ষ্য করেন যে এই মাদ্রাসায় আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা কোনভাবেই পাচ্ছেনা পড়ুয়ারা। এখানে কঠোরভাবে মেনে চলা হচ্ছে শরিয়া আইনকে, ঠিক যেমনটা তালিবান অধ্যুষিত আফগানিস্তানে মেনে চলা হয়।
মানা হচ্ছেনা সংবিধানের ২১ (এ) ধারা
এর পাশাপাশি ভারতের সংবিধানে থাকা মৌলিক অধিকার, শিক্ষার অধিকার যা ২১ (এ) ধারায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, সেই অধিকারকেও মানা হচ্ছে না বলে মনে করছেন চাইল্ড রাইট কমিশনের সদস্যরা। কারণ সংবিধানের এই ধারা অনুযায়ী ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষাদানের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এর কোনওটাই না মেনে মাদ্রাসার প্রশাসন ইসলামিক শিক্ষা ব্যবস্থাকে জোর করে চাপিয়ে দিতে চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মধ্যপ্রদেশের ওই জেলার জেলার শিক্ষা আধিকারিক কৃষ্ণচন্দ্র শর্মা এবং মাদ্রাসা প্রশাসনের প্রধান ইনামুর শেখকে এই বিষয়ে মতামত চাওয়ার জন্য 'দ্য অর্গানাইজার' পত্রিকা ফোন করলেও তাঁরা ফোন তোলেন নি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours