তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
পঞ্চাশের চৌকাঠ পেরিয়ে তবেই দেখা দিত এই ধরনের সমস্যা। তবে, এখন কম বয়সীদের মধ্যেও দেখা দিচ্ছে এই রোগ (Liver Disease)। শুধু তরুণ প্রজন্ম নয়। স্কুল পড়ুয়ারাও কাবু হচ্ছে এই রোগে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, প্রথম থেকেই সতর্ক হতে না পারলে আজীবন ভোগান্তি চলবে। ভারতে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সাধারণত পঞ্চাশ পেরনোর পরে এই ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দিত। কিন্তু গত কয়েক দশকে কম বয়সীরাও এই রোগে ভুগছে। সাম্প্রতিক এক তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই উদ্বেগ বেড়েছে চিকিৎসক মহলে।
কী বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা?
সম্প্রতি প্রকাশিত এক আন্তর্জাতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, বিশ্ব জুড়ে বাড়ছে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা। আর ভারতেও এই সমস্যা অত্যন্ত বেশি। বিশেষত শিশুদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ওই গবেষণার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের প্রায় ১০ শতাংশ শিশু ফ্যাটি লিভারের (Liver Disease) সমস্যায় ভুগছে। যা বছর দশেক আগেও এত বেশি ছিল না। ফলে, আগামী দিনে শিশুদের ভোগান্তি বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কী এই ফ্যাটি লিভার রোগ?
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, লিভারে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ফ্যাট জমা হলে, তাকে ফ্যাটি লিভার (Liver Disease) বলা হয়। এই রোগে আক্রান্ত হলে বমি, পেটের সমস্যা লাগাতার হতে পারে। ফলে, হজমের সমস্যা বাড়তে থাকে। ধীরে ধীরে লিভারের কার্যক্ষমতা হারিয়ে যায়।
কেন শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়ছে?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, জীবন যাপনের ধরন আর খাদ্যাভ্যাসের জেরেই শিশুদের মধ্যে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, খুব কম বয়স থেকেই এখন সকলে ফাস্ট ফুডে অভ্যস্থ হয়ে পড়ছে। স্কুল বন্ধুদের জন্মদিন উদযাপন হোক কিংবা কোনও ঘরোয়া অনুষ্ঠান, সব জায়গায় পিৎজা, বার্গার, হটডগের মতো খাবার স্কুল পড়ুয়াদের পছন্দ। আর সেটাই দেদার খাওয়া চলছে। পাশপাশি নানা প্যাকেট জাত খাবার যেমন চিপস, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, এগুলো খাওয়া চলছে। এর ফলে, স্থূলতার সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আর এটাই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ধাপ। ওজন বাড়লেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। অধিকাংশ শিশুই এখন ওবেসিটি বা স্থূলতার শিকার। এর ফলে ভারতে ফ্যাটি লিভারের (Liver Disease) সমস্যাও বাড়ছে।
পাশপাশি, ফাইবার, ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া কম হচ্ছে। অতিরিক্ত প্রোটিন ও ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়ার জেরেই সমস্যা বাড়ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ কম বয়সীরাই আটার রুটি, সুজি, ছাতু খায় না। ফলে, ফাইবার শরীরে কম যায়। এর ফলে শরীরে বিভিন্ন উপাদানের ব্যালান্স হয় না। যার জেরে ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা দেখা দেয়। কারণ, অতিরিক্ত প্রাণীজ প্রোটিন লিভারের জন্য ক্ষতিকারক। শুধু মাংস, মাছ খাওয়া একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়। প্রয়োজন তার সঙ্গে পরিমাণ মতো রুটি, ভাত, সবজির। তবেই শরীর সবরকমের উপাদান পাবে।
পাশপাশি স্কুল পড়ুয়াদের খেলাধুলো কিংবা শারীরিক কসরত প্রয়োজন মতো হচ্ছে না বলেই জানাচ্ছেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আর তার জেরেই বাড়ছে ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা। কারণ, স্থূলতা এড়াতে পারলে তবেই ফ্যাটি লিভারের (Liver Disease) ঝুঁকি কমবে।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours