Maharana Pratap: মহারাণা প্রতাপের প্রয়াণ দিবসে জানুন তাঁর অমর বীরত্বগাথা

১৫৭২ সালে আরাবল্লী উপত্যকায় নির্জন জায়গা গোগুন্দাতে তাঁর রাজ্যাভিষেক করেন মেবারের প্রজা, সৈন্য এবং সামন্তরা
মহারানা_প্রতাপ
মহারানা_প্রতাপ

শুভ্র চট্টোপাধ্যায়: ১৫৯৭ সালে আজকের দিনেই  ৫৬ বছর বয়সে মহারানা প্রতাপ (Maharana Pratap) প্রয়াত হন। ভারত ইতিহাসে অমরস্থান রয়েছে তাঁর।

রাজ্যাভিষেক

রাজপুত্র হওয়ার পরেও পিতৃপ্রদত্ত সিংহাসন তিনি পাননি,ভূ-ভারতে একমাত্র রাজা যিনি সৈন্য দের সাথে জঙ্গলে খাবারের অভাবে ঘাসের তৈরী রুটি খেতেন তবুও তাঁর কঠিন পণ ছিল বিধর্মী রাজার কাছে আত্মসমর্পণ কখনো করবেন না। শুধুমাত্র মানুষ-ই নয় ,পশুপক্ষীরাও তাঁর অনুগামী প্রজা ছিল। তাঁর প্রিয় ঘোড়া চেতক তাঁকে বাঁচাতে নিজে জীবন আহুতি দিয়েছিল এবং বিপক্ষ দলের সেনাপতি হাতি সওয়ার মান সিং কে প্রথম যুদ্ধ তাঁর ঘোড়ার সাথেই করতে হয়েছিল। 
রণনিপুণ, যোগ্য মহারাণাকে (Maharana Pratap) উত্তরসূরী না করে উদয় সিং তাঁর ছোট রাণীর কথায় ঐ রাণীর গর্ভের সন্তান জগমলকে রাজা ঘোষণা করেন। প্রজাদরদী ,যোদ্ধা, জনপ্রিয় মহারাণাকে (Maharana Pratap) পাল্টা রাজা ঘোষণা করেন মেবারের সামন্তরা। ১৫৭২ সালে আরাবল্লী উপত্যকায় নির্জন জায়গা গোগুন্দাতে তাঁর রাজ্যাভিষেক করেন মেবারের প্রজা, সৈন্য এবং সামন্তরা। রাজপুত্রের রাজ্যাভিষেক রাজপরিবারের বদলে জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে করছে- ইতিহাসে এমন নজির খুব কম দেখা যায়।

হলদিঘাটির যুদ্ধ

মেবারের স্বাধীনতা রক্ষায় ১৫৭৬ এর ১৮ই জুন হলদিঘাটিতে শুরু হলো মোঘলদের সাথে মহারাণার (Maharana Pratap) প্রবল যুদ্ধ। মহারাণার (Maharana Pratap) প্রথম অতর্কিত আক্রমনে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আকবরের সেনা ,রণে ভঙ্গ দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। একথা বলছেন মুসলিম ঐতিহাসিক বদাউনি। এরপর ফিরে আসে মোঘল বাহিনী । রক্ততলাই নামক স্থানে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়।
 ঐতিহাসিক ডঃ ত্যাগী বলছেন- দুপক্ষেই তখন রাজপুত সেনা যুদ্ধ করছে, বেশভূষা তাদের এক  । মোঘল মুসলিম সৈন্যরা তখন তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় তীর ছুঁড়বো কীভাবে !! বুঝতেই পারছিনা কোনদল শত্রু এবং কোনদল মিত্র ! জবাব আসে - যাদের গায়েই লাগুক তীর, মরবে তো সেই কাফের ।
মানসিং এর তলোয়ারের চোটে আহত চেতককে সঙ্গে করে আহত রাজা  যুদ্ধ জারি রেখেছিলেন। এমন সময় ঝালাবিদা নামের তাঁর এক সৈন্য এসে তাঁকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে  অনুরোধ করেন‌। ঝালাবিদা মহারাণা সেজেই যুদ্ধ করতে থাকেন এবং জীবন আহুতি দেন । মহারাণার (Maharana Pratap) বিপক্ষে যুদ্ধ করতে এসেছিলেন তাঁর নিজের আরেক ভাই শক্তি সিং । ক্ষমতার মোহে এবং ভয়ে বহু রাজপুত আত্মসমর্পণ করেছিল বিদেশী মোঘলদের কাছে এবং মাতৃভূমির প্রতি, স্বধর্মের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। ইতিহাস তাদের কাউকে মনে রাখেনি। ইতিহাস মনে রেখেছে চেতককে, ঝালাবিদাকে, মহারাণার (Maharana Pratap) ঘাসের রুটিকে। 

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles