Durga Puja: মা দুর্গা এখানে জাগ্রত বলে পরিচিত! ১৯৩ বছরে পড়ল হরিরামপুর ঠাকুরবাড়ির দুর্গোৎসব

Harirampur: ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সকলের ইচ্ছা পূরণ করেন! দিনাজপুরের হরিরামপুর ঠাকুরবাড়ির পুজো নিয়ে কী বলছেন পরিবারের সদস্য গৌতম চক্রবর্তী?  
Untitled_design(922)
Untitled_design(922)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ থেকে ১৯৩ বছর আগের কথা। দেশে তখন ইংরেজ শাসন। ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে তৎকালীন দিনাজপুর জেলার বর্ধিষ্ণু জনপদ ছিল হরিরামপুর। এই গ্রামের আশপাশের তিরিশ থেকে চল্লিশটি গ্রামে কোনও দুর্গাপুজো (Durga Puja) তখন হত না। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে মেতে ওঠার আনন্দ থেকে বঞ্চিত থাকতে হত আট থেকে আশি সকলকেই। গ্রামের একমাত্র ব্রাহ্মণ পরিবার হিসেবে সকলেই এক ডাকে চিনত চক্রবর্তী বাড়িকে। সেসময় বাড়ির কর্তা ছিলেন মধুসূদন চক্রবর্তী। তিনি ভাবলেন, ‘‘মাতৃ-আরাধনা থেকে এত বিপুল সংখ্যক ভক্ত বঞ্চিত হবেন!’’ তাঁরই উদ্যোগে ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে শুরু হল হরিরামপুর (Harirampur) ঠাকুর বাড়ির দুর্গাপুজো (Durga Puja)। আজও চলছে সমানভাবে-সমানতালে। মাঝে কখনও বন্ধ হয়নি এই পুজো। আর মাত্র ৭টি বছর, তারপরেই পুজোর বয়স ডাবল সেঞ্চুরি করবে।

কী বলছেন পরিবারের সদস্য গৌতম চক্রবর্তী? 

মধুসূদন চক্রবর্তীর প্রতিষ্ঠিত এই পুজোর দায়িত্ব সামলেছেন একে একে কার্তিক চক্রবর্তী, প্রাণেশ চক্রবর্তী, উত্তম চক্রবর্তীরা। এঁরা প্রত্যকেই এখন পরলোকগত। বর্তমানে পুজো (Durga Puja) দেখভাল করেন গৌতম চক্রবর্তী। তিনিই জানালেন পুজোর খুঁটিনাটি নানা বিষয়। জানা গেল, প্রথমদিকে আশেপাশের সমস্ত গ্রাম থেকেই মানুষরা সামিল হতেন এই পুজোয়। আশেপাশের গ্রামের মানুষজন হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করেই মেতে উঠতেন উৎসবে। চলত একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া। পুজোকে কেন্দ্র করে নাচ-গানও হত। গৌতম বাবুর মতে, ‘‘ক্লাব হওয়ার পর থেকে বাড়ির পুজোকে কেন্দ্র করে পাড়া প্রতিবেশীদের সামিল হওয়ার প্রবণতা সর্বত্রই কমেছে। আমাদের এখানেও একই ছবি। তবে এখনও পরিবারের সদস্যদের (Harirampur) বাইরেও অনেকেই অংশগ্রহণ করেন হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোয়। তাঁরা ভোগ অর্পণ, পুজোর আয়োজন থেকে বিসর্জন-এসকল কাজে নানাভাবে সাহায্য করেন।’’

পুজোকে (Durga Puja) কেন্দ্র করে একসময় চণ্ডীমঙ্গলের গান বিপুল জনপ্রিয় ছিল

এলাকায় জাগ্রত দেবী বলে পরিচিত হরিরামপুর ঠাকুর বাড়ির পুজোয় অনেকে মানতও করেন। ভক্তদের বিশ্বাস, দেবী সকলের ইচ্ছা পূরণ করেন। গৌতমবাবুর ভাষায়, ‘‘মানত পূরণ হওয়ার পরে অনেকেই দেবীকে সোনা-রূপা দান করেন। পরে এগুলি দিয়েই মায়ের অলঙ্কার তৈরি হয়।’’ গৌতমবাবুর আরও জানালেন, একসময় দুর্গাপুজো উপলক্ষে চণ্ডীমঙ্গলের গান হত এখানে। সেই গান বিপুল জনপ্রিয় ছিল। আশেপাশের প্রচুর গ্রামের মানুষ চণ্ডীমঙ্গলের গান শুনতে জড়ো হতেন ঠাকুরবাড়ির পুজো প্রাঙ্গণে। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত চলত এই গান। তবে নব্বইয়ের দশকের পর চণ্ডীমঙ্গলের গান বন্ধ হয়ে যায়। সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত মাতৃ-আরাধনার পরে দশমীর রাতে ঠাকুরবাড়ির পুকুরেই দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়। দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সঙ্গে কালীপুজোর রীতিও দেখা যায় এখানে। দুর্গাপ্রতিমার পাশেই থাকে কালীমূর্তি। সবশেষে গৌতম বাবু বললেন, ‘‘পারিবারিক ঐতিহ্য হিসেবে ১৯৩ বছর ধরে হয়ে আসছে এই পুজো। মাঝে কখনও বন্ধ হয়নি, আমরা যতদিন আছি পুজো চালিয়ে যাবে।’’

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles