মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মোদি সরকারের জমানায় নেওয়া হয় এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। সংবিধান থেকে অবলুপ্ত করে দেওয়া হয় ধারা ৩৭০, বিশেষ মর্যাদা হারায় জম্মু-কাশ্মীর। সেসময় উপত্যকা জুড়ে প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ঘটনার এখন তিন বছর পার হয়েছে। ফলে এক বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথা ভাবছে কেন্দ্রীয় সরকার।
ভূস্বর্গ থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত
সূত্রের খবর, বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের সাড়ে তিন বছর পর উপত্যকা থেকে সেই সেনা প্রত্যাহারের চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। শীর্ষস্তর থেকে এই প্রস্তাব মঞ্জুর হলেই এই প্রস্তাব কেবল নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, সশস্ত্র বাহিনী এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ফলে এই প্রস্তাবনা গৃহীত হলে জম্মু-কাশ্মীরে ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ছাড়া আর কোথাও সেনা মোতায়েন থাকবে না। সূত্রের খবর, গত দু'বছর ধরেই এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
নিরাপত্তার দায়িত্বে সিআরপিএফ
জানা গিয়েছে, ভারতীয় সেনাকে কাশ্মীরের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সেখানে সিআরপিএফকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্যই সিআরপিএফ মোতায়েন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
কেন এই পরিকল্পনা?
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেছেন, সরকার দাবি করেছে যে ২০১৯ সালের অগাস্ট থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ নিরাপত্তা কর্মীদের হত্যার ঘটনায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে। কমেছে সেনাবাহিনীর ওপর পাথর ছোঁড়ার ঘটনাও। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত, দাবি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, সেনাবাহিনী প্রত্যাহারের পর সেখানকার দায়িত্বে থাকবে সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। আরও জানা গিয়েছে, উপত্যকার দায়িত্বে থাকা সেনাবাহিনীর রাষ্ট্রীয় রাইফেলসকেও তিনটি ভাগে তুলে নেওয়া হবে। সিআরপিএফকে দিয়ে তাদের আংশিক প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে এই পরিকল্পনায় রাষ্ট্রীয় রাইফেলসের সদস্য সংখ্যা হ্রাস করা হবে, তাদেরকে একেবারে প্রত্যাহার করা হবে না। এইভাবে প্রায় ১৫ হাজার রাষ্ট্রীয় রাইফেলস প্রত্যাহার করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৯০ সালে তৈরি করা হয় রাষ্ট্রীয় রাইফেলস। তখন থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরে জঙ্গি কার্যকলাপ দমনে নেতৃত্বে দিচ্ছে রাষ্ট্রীয় রাইফেলস। তবে ২০০৫ সাল থেকে শ্রীনগরে জঙ্গি দমন অভিযান পরিচালনা করে সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
+ There are no comments
Add yours