মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ থাকায় ট্রেন চালানোর জন্য রাঙাপানির স্টেশনমাস্টার যে ‘কাগুজে অনুমতি’ দিয়েছিলেন, তাতে কোনও ভুল ছিল না। দুর্ঘটনার দিন নিয়ম-নির্দেশ মেনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা (Kanchanjunga Express) ও মালগাড়ির চালককে ‘অনুমতিপত্র’ দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করলেন কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘নির্দেশ অনুযায়ী যে ফর্মে অনুমতি দেওয়া প্রয়োজন, তা-ই দেওয়া হয়েছে। আলাদা আলাদা ফর্মের আলাদা আলাদা মানে রয়েছে। তদন্ত চলাকালীন এগুলো বলা সম্ভব নয়।’’
কী আপডেট দিলেন ডিআরএম
কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে (Kanchanjunga Express) দুর্ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার (সিসিআরএস)। তাঁর প্রতিনিধি হিসাবেই বৃহস্পতিবার বিকেলে কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার বলেন, ‘‘যখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তখন সঠিক তথ্য পেতে অসুবিধা হয়। প্রাথমিক তদন্তের উপর বিবৃতি দেওয়া হয়েছিল। মালগাড়ির গতিবেগ, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের গতিবেগ সব কিছুই তদন্ত কমিটির কাছে রেকর্ড হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা জনসমক্ষে নিয়ে আসা উচিত হবে না।’’ সুরেন্দ্র জানান, এখনও পর্যন্ত ৩০ জনকে ডাকা হয়েছে। তার মধ্যে ১৬ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাই আলিপুরদুয়ারের রেল প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্তাদেরও তদন্ত কমিটির সামনে হাজির হতে বলা হয়েছে।
একমত নন চিফ লোকো ইনস্পেক্টর
রেলের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ এই কথা জানালেও রেল সূত্রে খবর, এর সঙ্গে একমত হতে পারেননি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের চিফ লোকো ইনস্পেক্টর বা সিএলআই ওমপ্রকাশ শর্মা৷ তাঁর মতে, কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টারের টি/এ ৯১২ ফর্মের বদলে টি/ডি ৯১২ ফর্ম জারি করা উচিত ছিল৷ টি/ডি ৯১২ ফর্ম অনুযায়ী এক বা একাধিক স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা দীর্ঘক্ষণ ধরে অচল থাকলে এবং দু'টি জায়গার মধ্যে যোগাযোগ ঠিক থাকলে, দু'টি স্টেশনের মধ্যে দিয়ে শুধুমাত্র একটি ট্রেন চালানো যাবে। ওই ট্রেনের গতিবেগ কোনওভাবেই প্রতি ঘণ্টায় ২৫ কিমির বেশি হবে না৷ তাই রাঙাপানি স্টেশনের কর্তব্যরত স্টেশন মাস্টার টি/ডি ৯১২ ফর্ম জারি করলে, হয় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchanjunga Express) নতুবা মালগাড়ি ট্রেন যে কোনও একটিই ওই লাইনে যাওয়ার অনুমতি পেত৷
আরও পড়ুন: ‘‘নিজের সরকার গড়বে কাশ্মীর’’! উন্নয়নই উপত্যকায় শান্তি ফেরাবে, মত মোদির
আর টি/এ ৯১২ লেটার জারি করা যাবে না
পরবর্তী নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত টি/এ ৯১২ লেটার জারি করা যাবে না, জানাল শিয়ালদা রেলওয়ে ডিভিশন৷ স্টেশন মাস্টার এই অথরিটি লেটার বা কাগুজে সিগন্যাল ট্রেনের চালককে জারি করে থাকেন৷ যাতে অটোমেটিক বা স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল খারাপ থাকলেও চালক নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে লাল সিগন্যাল পেরিয়ে যেতে পারেন৷ এ প্রসঙ্গে শিয়ালদা ডিভিশনের (পূর্ব রেলওয়ে) সিনিয়র ডিভিশনাল অপারেশনাল ম্যানেজার একটি বিবৃতি জারি করেন, "জিএম (জেনারেল ম্যানেজার), পিসিএসও (মুখ্য সুরক্ষা আধিকারিক) এবং অন্যান্য পিএইচওডি-দের (অন্য দফতরের মুখ্য আধিকারিক) মধ্যে একটি বৈঠক হয়৷ তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত টি/এ ৯১২ জারি করার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে৷ যাঁরা এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের এই নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করতে হবে৷ কোনও রকম বিচ্যুতি হলে তা অত্যন্ত কড়াভাবে বিবেচনা করা হবে৷" কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস (Kanchanjunga Express) দুর্ঘটনার তদন্তে এই অথরিটি লেটার বা কাগুজে সিগন্যাল জারি করা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours