মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রেশন দুর্নীতিতে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জেলে রয়েছেন। কিন্তু, শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে তাঁর এজেন্টরা কেন এখনও ইডির (ED) আতশকাচের তলায় এল না। কীভাবে তাঁরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন? এই প্রশ্নে শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গে তদন্তে আসার জন্য ইডিকে চিঠি দিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক বিজেপির শঙ্কর ঘোষ। সেই চিঠিতে উত্তরবঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের প্রধান এজেন্ট হিসেবে বিমল রায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক যে অভিযোগে জেলে রয়েছেন, তার দোসর হিসেবে শিলিগুড়ির বিমল রায়কে ইডি তদন্তে ছাড় দিতে পারে না বলে দাবি বিজেপি বিধায়কের।
কে এই বিমল রায়?
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতারের পর রেশন দুর্নীতি নিয়ে শিলিগুড়ির বিমল রায়ের নাম বিভিন্ন মহল থেকে উঠে এসেছে। শিলিগুড়ির মাটিগাড়া ব্লকের পাথরঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা বিমল রায় রেশন ব্যবসার নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছিলেন। শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে রাজ্যের খাদ্য দফতর তথা রেশন ব্যবস্থার তিনিই ছিলেন শেষ কথা। নিজের পরিবারের জন্য রেশনের একাধিক লাইসেন্স রয়েছে তাঁর। অভিযোগ, রেশন ডিলারশিপ ও ডিস্ট্রিবিউটরের লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁর পছন্দ-অপছন্দ শেষ কথা হয়ে উঠেছিল। খাদ্য দফতরে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগেও বিমলবাবু শেষকথা ছিলেন। তাঁর ইচ্ছেতে রাতারাতি রেশন কার্ড তৈরি হয়েছে। খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে বিমল রায় ছিলেন 'রায় সাহেব'। রায় সাহেবের ভয়ে সকলেই তটস্থ থাকতেন।
ইডিকে কেন উত্তরবঙ্গে আহ্বান বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের? (ED)
বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, শিক্ষা, গরু পাচার, শিক্ষক সহ বিভিন্ন দফতরে নিয়োগ দুর্নীতি, খাদ্য দফতরে একের পর এক দুর্নীতিতে জেলে রয়েছেন তৃণমূলের নেতামন্ত্রীরা। শিলিগুড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গেও তাদের এজেন্টরা রয়েছেন। এদের মাধ্যমে এখান থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা কলকাতায় চলে যেত। সেই টাকা রিয়েল এস্টেট থেকে শুরু করে ক্র্যাশার, পর্যটন ব্যবসায় খাটানো হয়েছে। বিমল রায় সেরকমই একজন প্রভাবশালী এজেন্ট। তাঁর নিজের ও তাঁর পরিবারের নামে দুটি রেশন ডিলার ও একটি ডিস্ট্রিবিউটরের লাইসেন্স রয়েছে। খাদ্য দফতরের নিয়ম অনুযায়ী যা অবৈধ। তাহলে বিমল রায় কীভাবে এই লাইসেন্সগুলি পেয়েছিলেন, এই প্রশ্নের উত্তরেই রয়েছে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর রেশন দুর্নীতির সঙ্গে বিমল রায়ের ওতপ্রোতভাবে জড়িত থাকার দিকটি। কিন্তু, আমরা আশ্চর্যের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক গ্রেফতার হওয়ার পর এখনও বিমল রায় ও অন্যান্য এজেন্টরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তদন্তের স্বার্থে অবিলম্বে ইডির (ED) শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গে আসা দরকার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours