Jharkhand Assembly Polls: বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরাই প্রধান ইস্যু আসন্ন ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে?

Bangladeshi Infiltration: ঝাড়খণ্ডের আসন্ন বিধানসভা ভোটে ‘রোটি, বেটি এবং মাটি’ বাঁচাতে লড়বে বিজেপি, কেন জানেন?...
voter-list
voter-list

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চলতি বছরই হওয়ার কথা ঝাড়খণ্ড বিধানসভার নির্বাচন (Jharkhand Assembly Polls)। এই নির্বাচনে অন্যতম ইস্যু হতে পারে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা (Bangladeshi Infiltration)। এ রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত এলাকা, বিশেষ করে সাঁওতাল পরগনা বিভাগে ঢুকে পড়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড়ে মিশে যাচ্ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা। পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশ থেকে তারা ঢুকছে পড়ছে ভারতে। তারপর শাসক দলের নেতাদের একাংশের বদান্যতায় তারা তৈরি করে ফেলছে জাল নথিপত্র। সেইসব কাগজ নিয়েই অনুপ্রবেশকারীরা মিশে যাচ্ছে সাঁওতাল পরগনার জনারণ্যে।

অনুপ্রবেশের বিপদ (Jharkhand Assembly Polls)

সাঁওতাল পরগনা এলাকাটি পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া। তাই অবৈধভাবে ভারতে ঢুকে পড়া বাংলাদেশিরা অনায়াসেই চলে আসছে ঝাড়খণ্ডে। খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এ রাজ্যে কাজও পেয়ে যাচ্ছে তারা। তাই পেটে টান পড়ছে জনজাতিদের। এমতাবস্থায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টিকেই হাতিয়ার করতে চাইছে ঝাড়খণ্ডের রাজনৈতিক দলগুলি। এ রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের তরফে রাজ্য সরকারকে সাঁওতাল পরগনার ভিড়ে মিশে যাওয়া বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই নির্দেশ নিয়েই দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে রাজ্যের শাসক দল এবং বিরোধী দলের মধ্যে।

মাথাব্যথা যখন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা

কেন্দ্রীয় সরকারের হিসেব বলছে, এ দেশের (Jharkhand Assembly Polls) ভিড়ে মিশে রয়েছে কয়েক কোটি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তারা। ঝাড়খণ্ডের সাঁওতাল পরগনায়ও রয়েছে এদেরই একটা বড় অংশ। গোড্ডা, দুমকা, দেওঘর এবং জামতাড়া এলাকায় ঘাঁটি গেড়েছে তারা (Bangladeshi Infiltration)। যার জেরে বদলে গিয়েছে এই সব এলাকার ডেমোগ্রাফি। পাকুড় এবং সাহেবগঞ্জে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন যথাক্রমে ২৬ ও ৪২ শতাংশ। মুসলমানদের হার যথাক্রমে ৩৫ ও ৩৪ শতাংশ।

দ্রুত বদলে যাচ্ছে ডেমোগ্রাফি

নিরন্তর অনুপ্রেবেশ চলতে থাকায় দ্রুত বদলে যাচ্ছে শতাংশের এই হিসেবও। কেবল তাই নয়, এদেশে ডেরা বেঁধে অনুপ্রবেশকারীরা বিয়ে করে নিচ্ছে উপজাতি সম্প্রদায়ের  মেয়েদের। তাঁদের নামে থাকা জমি অনুপ্রবেশকারীরা লিখিয়ে নিচ্ছে নিজেদের নামে। অবিরাম চলছে ধর্মান্তকরণের কাজও। স্বাভাবিকভাবেই এই সব অঞ্চলে অচিরেই রক্তাল্পতায় ভুগতে পারে হিন্দুধর্ম। এই অনুপ্রবেশকারী জামাইদের বাড়বাড়ন্তে সাঁওতাল পরগনার অনেক জায়গার নামই বদলে হয়েছে ‘জামাইটোলা’।

মুসলমানদের বাড়বাড়ন্তে উদ্বেগ

রাজ্যে মুসলমানদের বাড়বাড়ন্তে উদ্বেগে ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাবুলাল মারান্ডিও। গত সপ্তাহেই (Jharkhand Assembly Polls) তিনি বলেছিলেন, “উপজাতীয় জনসংখ্যার ক্রমাগত হ্রাস ও সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে মুসলমান জনসংখ্যার অপ্রত্যাশিত বৃদ্ধি সতর্কতার একটি সঙ্কেত।” এক্স হ্যান্ডেলে এ বিষয়ে বার্তাও দিয়েছেন তিনি। সাঁওতাল পরগনার পাকুড়ে যে ক্রমেই ক্ষইছে জনজাতির জনসংখ্যা, তা জানিয়েছেন তিনি। তিনি জানান, ২০০১ থেকে ২০১১ এই দশ বছরে এই এলাকায় জনজাতি সম্প্রদায়ের হার কমেছে ৪ শতাংশ। এলাকায় মুসলমানদের বাড়বাড়ন্তের জন্য ঝাড়খণ্ডের জোট সরকারের বিরুদ্ধে তুষ্টিকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। মারান্ডির মতে, যে সময় পাকুড়ে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের উপস্থিতি কমেছে ৪ শতাংশ, সেই পর্বে এই এলাকায় মুসলমানের সংখ্যা বেড়েছে ৩ শতাংশ। পাকুড়, সাহেবগঞ্জ-সহ ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানা-সংলগ্ন এলাকায় ডেমোগ্রাফি দ্রুত বদলে যাচ্ছে বলেও জানান মারান্ডি।

ঝাড়খণ্ড বিধানসভার আসন

গত মে মাসের শেষ সপ্তাহে দুমকায় এক লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জেএমএমের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশকারীদের লালনপালন করার (Jharkhand Assembly Polls) অভিযোগ এনেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এই অনুপ্রবেশকারীরা উপজাতির মহিলাদের লক্ষ্যবস্তু করেছিল। প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ড বিধানসভার নির্বাচন হওয়ার কথা নভেম্বর-ডিসেম্বরে। এ রাজ্যের বিধানসভার আসন সংখ্যা ৮১। এর মধ্যে এসটিদের জন্য সংরক্ষিত রয়েছে ২৮টি আসন। এর মধ্যে আবার ১৮টি আসন রয়েছে সাঁওতাল পরগনায়। উনিশের বিধানসভা নির্বাচনে এর মধ্যে চারটি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি।

আর পড়ুন: অস্ট্রিয়া সফরে প্রধানমন্ত্রী মোদি, কতটা তাৎপর্যপূর্ণ? কী কী বিষয়ে আলোচনা?

রোটি, বেটি এবং মাটি বাঁচাতে লড়াই

কিছুদিন আগেই সমাজ কর্মী ড্যানিয়েল ড্যানিশ ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে দায়ের করেছিলেন জনস্বার্থ মামলা। তাতে তিনি উল্লেখ করেছিলেন, গত কয়েক বছর ধরে সাঁওতাল পরগনায় জনসংখ্যার ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। কীভাবে বাড়ছে অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা, কীভাবেই বা জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগতে শুরু করেছেন, তাও আদালতে জানিয়েছিলেন ড্যানিয়েলের আইনজীবী রাজীব কুমার।

আদালতকে তিনি জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের (Jharkhand Assembly Polls) একটি নিষিদ্ধ সংগঠন সাঁওতাল পরগনার অনেক জায়গায় আদিবাসী মেয়েদের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করছে। তার জেরেই বদলে যাচ্ছে এলাকার ডেমোগ্রাফি। রাজ্যের বিজেপি নেতা অমর কুমার বাউড়ি বলেন, “সাঁওতাল পরগনা এলাকায় দ্রুত (Bangladeshi Infiltration) বদলে যাচ্ছে ডেমোগ্রাফি। জামাইপাড়া তৈরি করে জনজাতিদের জমি দখল করে নিচ্ছে বাংলাদেশিরা।” তিনি বলেন, “হিন্দুরাই যদি সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে তাহলে না বাঁচবে সংবিধান, না টিকবে গণতন্ত্র।” পদ্ম-নেতা বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনে (Jharkhand Assembly Polls) আমরা লড়ব রোটি, বেটি এবং মাটি (খাবার, কন্যা সন্তান এবং জমি) বাঁচাতে।”

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles