ISRO NVS-01: ইসরোর মুকুটে নয়া পালক! মহাকাশে প্রতিস্থাপিত এনএভিএস-০১ উপগ্রহ, কেন তাৎপর্যপূর্ণ?

GSLV-F12 Mission: এবার আরও নিখুঁত হবে যোগাযোগ থেকে ম্যাপিং ব্যবস্থা, সুবিধা হবে সেনার... 
isro-rocket-launch
isro-rocket-launch

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর মুকুটে জুড়ল নতুন পালক। সোমবার মহাকাশে সফলভাবে প্রতিস্থাপিত হল দেশীয় অত্যাধুনিক নতুন প্রজন্মের নেভিগেশন স্যাটেলাইট এনএভিএস-০১ (ISRO NVS-01)। নাবিক শ্রেণির এই উপগ্রহের ফলে দেশে যোগাযোগ ও ম্যাপিং ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে, ভীষণভাবে উপকৃত হবে দেশের সামরিক বাহিনী বলেও ধারণা বিশেষজ্ঞ মহলের।

জিওসিনক্রোনাস কক্ষপথে স্থাপিত

এদিন ১০টা ৪২ মিনিট নাগাদ অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় অবস্থিত সতীশ ধবন স্পেস সেন্টারের দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে ২ হাজার ৪২০ টন ওজনের বিশাল জিএসএলভি এফ-১২ রকেটে চেপে মহাকাশে পাড়ি দেয় নতুন প্রজন্মের ২৩২ কেজির উপগ্রহটি। ১৯ মিনিট পর ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় লোয়ার আর্থ অরবিট বা নিম্ন কক্ষপথে উপগ্রহটিকে পৌঁছে দেয় রকেটটি। এর পর সেখান থেকে নিজে যাত্রা করে ৩৬ হাজার ৫৬৮ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীর জিওসিনক্রোনাস কক্ষপথে স্থাপিত হয় এনভিএস-১ (ISRO NVS-01)। উপবৃত্তাকার কক্ষপথে পৃথিবীর চারদিকে ঘুরবে এই স্যাটেলাইট। 

কতটা উন্নত হবে নেভিগেশন ব্যবস্থা?

ইসরোর এই পদক্ষেপ দেশীয় নেভিগেশন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে। এটি আদতে ভারতের নিজস্ব নেভিগেশন ব্যবস্থা (ISRO NVS-01)। এতদিন সকলে যেমন মার্কিন গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস ব্যবহার করে এসেছেন, এবার তার পরিবর্তে ভারতে তৈরি ভারতের নিজস্ব নেভিগেশন ব্যবস্থায় বজায় থাকবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জানা গিয়েছে, এটি সাতটি উপগ্রহের একটি নক্ষত্রপুঞ্জের অংশ, যা সশস্ত্র বাহিনী-সহ অসামরিক যানকে নেভিগেশন পরিষেবা প্রদান করবে। 

এর আগে ভারতীয় আঞ্চলিক ন্যাভিগেশন সিস্টেম (IRNSS)-এর অধীনে সাতটি NavIC উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। সেগুলি ছিল আইআরএনএস-১এ, আইআরএনএস-১বি, আইআরএনএস-১সি, আইআরএনএস-১ডি, আইআরএনএস-১ই, আইআরএনএস-১এফ ও আইআরএনএস-১জি স্যাটেলাইট। এদিন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানান, পুরনো সাতটির মধ্যে তিনটে অকেজো হয়ে গিয়েছে। যে কারণে, এবার নতুন পাঁচটি পরবর্তী প্রজন্মের নাবিক স্যাটেলাইট তৈরি করা হয়। 

আরও পড়ুন: ইতিহাসে প্রথম! নয়া সংসদ ভবনের দেওয়ালে অখণ্ড ভারতের ভাস্কর্য

উপগ্রহে রয়েছে পারমাণবিক ঘড়ি

ইসরোর দাবি, নতুন প্রজন্মের এই উপগ্রহের কাজ হল মোবাইলে অবস্থান ভিত্তিক পরিষেবা করা। স্যাটেলাইটের জন্য কক্ষপথ নির্ধারণ করা। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, পাওয়ার গ্রিড এবং অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলির জন্য সময় পরিষেবা করা। রিয়েল টাইম পজিশনিং বা ঠিক সেই মুহূর্তের অবস্থান বলতে সক্ষম এনভিএস-১ (ISRO NVS-01)। এটি সম্ভব হয়েছে কারণ, এই উপগ্রহে ব্যবহার করা হয়েছে রুবিডিয়াম পারমাণবিক ঘড়ি। বিশ্বের হাতে গোনা দেশ রয়েছে, যারা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। 


কতটা লাভবান হবে সেনা?

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এই উপগ্রহের ফলে সামরিক বাহিনী ভীষণভাবে উপকৃত হবে। তাঁরা জানান, এবার জঙ্গিদের সঠিক পজিশন জানতে কষ্ট করতে হবে না বাহিনীকে। জঙ্গিদের সেই মুহূর্তের সঠিক অবস্থান একেবারে হাতের মুঠোয় থাকবে। ফলে, যে কোনও অভিযানে এটি দারুন কার্যকর হবে। প্রসঙ্গত, কার্গিল যুদ্ধের সময়, পাক অনুপ্রবেশকারীদের তথ্য জানতে জিপিএস পজিশনিং ব্যবহারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সাহায্য চেয়েছিল ভারত। ওয়াশিংটন তা দিতে অস্বীকার করেছিল। তখন থেকেই নিজস্ব নেভিগেশন ব্যবস্থা তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles