INS Vikrant: এক ভাসমান দুর্গ যার নাম ‘আইএনএস বিক্রান্ত’

Indian Navy: এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক ভারতে নির্মিত প্রথম বিমানবাহী রণতরীর খুঁটিনাটি...
IAC1_Vikrant_with_INS_Kolkata_(D63)_during_sea_trial_(cropped)
IAC1_Vikrant_with_INS_Kolkata_(D63)_during_sea_trial_(cropped)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভারতীয় নৌসেনায় অন্তর্ভুক্ত হল দেশে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী আইএনএস বিক্রান্ত (INS Vikrant)। শুক্রবার, এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশকে এই বিশালকায় যুদ্ধজাহাজ উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Modi)। 

নৌসেনায় আইএনএস বিক্রান্তের যুক্ত হওয়া অনেক দিক থেকেই তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, এটিই হল ভারতে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরী (Indigenous Aircraft Carrier)। এই জাহাজের ৭৬ শতাংশ দেশে তৈরি। দেশের ১৮টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত এলাকায় তৈরি হয়েছে এর যন্ত্রাংশ। এটা জাতীয় ঐক্যের প্রতীক। এর ফলে, ভারতের সামরিক সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেল। বিশ্বের হাতে গোনা দেশ রয়েছে, যারা বিমাণবাহী রণতরী ব্যবহার করে। তৈরি করাটা অনেক দূরের ব্যাপার। সেই দিক দিয়ে, ভারত নিজের বিমানবাহী রণতরী নির্মাণ করে আত্মনির্ভরতা (Atmanirbhar Bharat) ও সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। 

আইএনএস বিক্রান্ত শুধুমাত্র ভারতে তৈরি হওয়া প্রথম বিমানবাহী রণতরী নয়। এটা এখনও পর্যন্ত ভারতে তৈরি হওয়া সর্ববৃহৎ ও সবচেয়ে জটিল রণতরী। আইএনএস বিক্রান্ত নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। ৪৩ হাজার টনের এই বিমানবাহী রণতরী দৈর্ঘ্যে ২৬২ মিটার। অর্থাৎ, দুটো ফুটবল মাঠের চেয়েও বড়। চওড়া ৬২ মিটার। উচ্চতা ৫৯ মিটার। মোট ১৪টি ডেক রয়েছে। জাহাজে রয়েছে ২৩০০-র বেশি কম্পার্টমেন্ট। অফিসার ও নাবিক মিলিয়ে প্রায় ১৭০০ জন ক্রু-র থাকার সংস্থান রয়েছে। এরমধ্যে মহিলা অফিসারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।

আইএনএস বিক্রান্তের ডেক থেকে উড়বে নৌসেনার মিগ-২৯কে (MiG-29K) যুদ্ধবিমান। একইসঙ্গে থাকবে রুশ নির্মিত কামোভ-৩১ (Kamov-31) আর্লি ওয়ার্নিং এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিকর্সকি নির্মিত এমএইচ-৬০আর (MH-60R) মাল্টি রোল হেলিকপ্টার। এছাড়াও, থাকবে দেশে তৈরি হ্যাল নির্মিত অ্যাডভান্সড লাইট হেলিকপ্টার (HAL ALH)। পরবর্তীকালে, এই জাহাজের স্কি-জাম্প (Ski Jump) বা STOBAR ডেক থেকে উড়তে দেখা যেতে পারে ফরাসি রাফাল-এম (Rafale-M) অথবা মার্কিন এফ/এ-১৮ ই/এফ সুপার হর্নেট (F/A-18 E/F Super Hornet) যুদ্ধবিমানের একটিকে। সব মিলিয়ে অন্তত ৩০টি যুদ্ধবিমানকে বহন করতে পারে এই বিক্রান্ত। তার মধ্যে ১৭টি নীচের হ্যাঙ্গারে থাকবে ও বাকি ১৯টি ফ্লাইট ডেকে থাকবে।

আরও পড়ুন: বিরাট বিক্রান্ত! প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আজই নৌসেনায় অন্তর্ভুক্তি দেশে তৈরি প্রথম বিমানবাহী রণতরীর

আইএনএস বিক্রান্তের চালিকা শক্তি জোগায় চারটি এলএম-২৫০০ গ্যাস টার্বাইন। এই টার্বাইন থেকে ৯০ মেগাওয়াট শক্তি উৎপন্ন করে। জাহাজের সর্বোচ্চ গতি ২৮ নট (ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটারের বেশি)। স্বাভাবিক গতি ১৮ নট। এই গতিতে প্রায় একটানা ৭,৫০০ নটিক্যাল মাইল চলতে সক্ষম এই জাহাজ। জাহাজ নির্মাণের সঙ্গে জড়িত এক নৌসেনা কর্মী জানিয়েছেন, জাহাজে যা পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হবে, তা দিয়ে অর্ধেক কোচি শহরের আলো জ্বালিয়ে রাখা যায়। জাহাজে ব্যবহৃত মোট তারের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬০০ কিলোমিটার। জাহাজ নির্মাণে মোট ২১ হাজার ৫০০ টন দেশে তৈরি বিশেষ ইস্পাত ব্যবহার করা হয়েছে। এই পরিমাণ ইস্পাত তিনটে আইফেল টাওয়ারের সমান। 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।

 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles