Transport: ১৯৫৭ সালে ২০ জন যাত্রী নিয়ে লন্ডন থেকে কলকাতায় এসেছিল ‘অ্যালবার্ট’?

কলকাতা থেকে লন্ডন বাসে?
Transport_(1)
Transport_(1)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আচ্ছা, যদি প্রশ্ন করা হয়, কলকাতা থেকে লন্ডন আপনি কিসে যাবেন? সরল মনে উত্তর দেবেন, বিমানে। কিন্তু যদি বলা হয় কলকাতা থেকে বাসে করে লন্ডন যেতে? এটি কৌতূক বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু না, এমনটাই নাকি সম্ভব ছিল অতীতে। ছিল এমন এক বাস, যে বাস কলকাতা থেকে লন্ডন পর্যন্ত যাতায়াত করত, যার যাত্রী সংখ্যাও কম ছিল না।

কারা এই বাস পরিচালনা করত?

ইতিহাসবিদদের কাছ থেকে পাওয়া নথি থেকে জানা যায়, এই বাসটি পরিচালনা করত ‘অ্যালবার্ট ট্যুর সার্ভিস’ নামক এক সংস্থা। সময়টা ১৯৫০ এর দশকে। বাসটির নামও ছিল 'আলবার্ট'। এই বাসটি তৎকালীন সময়ে লন্ডন থেকেই শুরু করা হয়েছিল। সেই সময় এটিই ছিল বিশ্বের  দীর্ঘতম রুটের বাস।

কবে থেকে এই বাস যাত্রা শুরু করে? কীভাবে শুরু হয় এর যাত্রা?

জানা যায়, ১৯৫৭ সালের ১৫ এপ্রিল লন্ডন থেকে কলকাতার উদ্দেশে এই বাসটি তার প্রথম যাত্রা শুরু করে। তখন এর যাত্রী সংখ্যা ছিল ২০ জন। প্রায় ৪৫ দিনের মতো সময় লেগেছিল বাসটির কলকাতা পৌঁছাতে। ৮০০০ এর বেশি কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছাত বাসটি। বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, এটি ইংল্যান্ড থেকে শুরু করে বেলজিয়াম, পশ্চিম জার্মানি, অস্ট্রিয়া, যুগোস্লাভিয়া, বুলগেরিয়া, তুরস্ক, ইরান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে ভারতে এসে পৌঁছাত।

কত খরচ হত এই বাসযাত্রায়? কেমন সার্ভিস দেওয়া হত এই বাসে?

তৎকালীন সময়ে এই বাসযাত্রায় খরচ হত প্রায় ১৪৫ পাউন্ড। যা ভারতীয় মুদ্রায় তখন ছিল ১৩ হাজার থাকার কাছাকাছি। এর সাথে যাত্রীদের জন্য খাওয়া, থাকা এবং যথেষ্ট আরামদায়ক পরিবেশ ছিল বাসের ভিতরে। যেহেতু এতদূরের পথ ও এত দেশ পেরোতে হত, তাই বাসের ভিতরের আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখে এর মধ্যে দেওয়া হয়েছিল ফ্যান ও হিটার। বাসের ফ্লোর ছিল পুরু কার্পেটে মোড়ানো এবং জানালা রঙিন পর্দায় মোড়া। 

বাসটি কতদিন চলেছে এবং কীভাবে বন্ধ হয়ে যায় এর যাত্রা?

নানান প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে এই বাসটি যাত্রা করত। টানা কয়েক বছর চলার পর বাসটি নানা ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সাময়িক ভাবে এটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ১৯৬৮ সালে ব্রিটিশ পর্যটক অ্যান্ডি স্টুয়ার্ট বাসটি কিনে নেন এবং নিজের মতো সাজিয়ে আবার এর যাত্রা শুরু করেন। জানা যায়, ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত এই বাসটি চালু ছিল। ভারত-পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী নানান সমস্যার কারণে এই বাসটিকে বন্ধ করতে বাধ্য হয় সংস্থা।

তবে এর সত্যতা নিয়ে একটু দ্বন্দ্বও আছে। কেউ কেউ মনে করেন, এটি নিছক গল্প মাত্র। আবার কোনও কোনও ইতিহাসবিদদের মতে, এটি সত্য। বাস্তবে সেরকম কোনও প্রমাণ অবশ্য মেলেনি। কিন্তু বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন এবং পুরনো নথি থেকে নাকি জানা গিয়েছে, এই বাস সত্যিই চলত।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles