Hindus: বদলে যাচ্ছে জনবিন্যাস! অস্তিত্বের সঙ্কটে হিমাচলি হিন্দুরা, পালটা প্রতিরোধের ডাক

Himachal Pradesh: হিমাচলে একজোট হচ্ছেন হিন্দুরা, ছন্নছাড়া থাকবেন তামাম ভারতের সনাতনীরা!...
hindu_f
hindu_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: অস্তিত্বের সঙ্কটে হিমাচলপ্রদেশের (Himachal Pradesh) হিন্দুরা (Hindus)! দ্রুত ঝাড়েবংশে বাড়ছে সে রাজ্যের মুসলমানরা। বদলে যাচ্ছে হিমাচলপ্রদেশের জনবিন্যাস। স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগে সে রাজ্যের হিন্দুরা। অগত্যা এক প্রকার বাধ্য হয়েই তাঁরা গড়ে তুলেছেন হিন্দু জাগরণ মঞ্চ। সম্প্রতি হিন্দু ধর্ম জাগরণ যাত্রাও করেছিলেন হিমাচলপ্রদেশের হিন্দুরা। তাঁরা সরব হয়েছিলেন রাজ্যে গজিয়ে ওঠা অবৈধ মসজিদ-মাজারের সংখ্যা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে। এলাকায় অবৈধভাবে বসবাসকারী মুসলমানের সংখ্যাও দিন দিন বাড়ায় উদ্বিগ্ন সে রাজ্যের হিন্দুরা। তাঁরা শুরু করেছেন ‘সেভ হিমাচল’ আন্দোলন। স্থানীয়দের দাবি, তাঁদের এই প্রতিবাদ শুধু অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠা মসজিদ-মাজারের বিরুদ্ধে নয়, এটা তাঁদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিচয় রক্ষার লড়াই, যা তাঁদের পূর্বপুরুষরা সহস্রাব্দ ধরে সুরক্ষিত করেছেন।

ইসলামিকরণের চেষ্টার প্রতিবাদ (Hindus)

হিমাচলপ্রদেশে, বিশেষত সিমলায়, হিমাচলি হিন্দু সম্প্রদায় রাজ্যটিকে ইসলামিকরণের চেষ্টার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে। এই অশান্তি শুরু হয় তখন, যখন দেখা যায় ৮৮ জন মুসলিম বিক্রেতার মধ্যে ৪৬ জনেরই আধার কার্ডে একই জন্মতারিখ রয়েছে। এর পরেই পরিচয় জালিয়াতির সন্দেহ জোরালো হয়। পরে জানা যায়, সমস্ত বিক্রেতাই বহিরাগত। ব্যবসা শুরু করার উদ্দেশ্যে এই অঞ্চলে এসেছিলেন। এ খবর চাউর হতেই ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ শুরু করেন হিমাচলিরা (Hindus)। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যে তাঁদের নিরাপত্তার ঝুঁকি এবং জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের ভয়ে বিক্রেতাদের পরিচয়ের তদন্ত দাবি করেন তাঁরা। কীভাবে তারা এ রাজ্যে প্রবেশ করল, তাও জানতে চান তাঁরা।

মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধি

বছরের পর বছর ধরে হিমাচলিরা অবৈধ নির্মাণ, বিশেষত মসজিদের সংখ্যা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। তাঁদের মতে, এটা সাংস্কৃতিক অবক্ষয় এবং জনসংখ্যাগত পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে। উত্তেজনা চরমে ওঠে ৩০ অগাস্ট, মালিয়ানা অঞ্চলে একটি হিংসাত্মক ঘটনা ঘটার পর। এখানে  মুসলিম যুবকদের একটি দল হিন্দু ব্যবসায়ীদের আক্রমণ করে। মুসলমানদের হামলায় গুরুতর জখম হন বিক্রম সিং নামে এক ব্যবসায়ী। এই ঘটনার পরেই এলাকায় গজিয়ে ওঠা একটি অবৈধ মসজিদের বিরুদ্ধে চড়া হয় প্রতিবাদের সুর।

ওয়াকফ বোর্ডের দাবি

মসজিদটির মালিকানা দাবি করে ওয়াকফ বোর্ড। তাদের দাবি, বিরোধের সূত্রপাত মূলত মসজিদ ভবন সম্প্রসারণ নিয়ে। তবে স্থানীয় হিন্দুদের অভিযোগ, মসজিদের তিনতলা বর্ধিত অংশ-সহ কিছু অবৈধ নির্মাণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। মান্ডি এবং কুল্লু-সহ রাজ্যের অন্যান্য জায়গাতেও এই ধরনের অবৈধ নির্মাণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছে (Hindus)। কুল্লুতে, খাদি ও গ্রাম শিল্প বোর্ডের জমিতে নির্মিত একটি অবৈধ জামা মসজিদ ২০১৭ সালে সম্প্রসারিত হওয়ার পর থেকেই রয়েছে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে। 

হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি

রাজ্যের হিন্দু সংগঠনগুলির দাবি, এই ধরনের অবৈধ নির্মাণগুলি বহিরাগতদের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ, যাদের মধ্যে অনেকেই সামাজিক নানা অস্থিরতার সঙ্গে জড়িত। এরা রাজ্যের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় পরিবেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। প্রতিবাদকারীদের মতে, সমস্যার মূল হল এই অবৈধ নির্মাণ এবং রাজ্যের জনসংখ্যাগত ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে সৃষ্ট অস্তিত্বের হুমকি। কেবল শিমলা নয়, রাজ্যের অন্যান্য জায়গার হিমাচলি (Himachal Pradesh) হিন্দুরাও অবৈধ মসজিদের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। সেপ্টেম্বর মাসের শেষেও কুল্লুতে অবৈধ মসজিদ ভেঙে ফেলার দাবিতে গর্জে উঠেছিল হিন্দু সংগঠনগুলি।

হিন্দু ধর্ম জাগরণ যাত্রা

জানা গিয়েছে, কুল্লুতে হিন্দু ধর্ম জাগরণ যাত্রার সময় হিন্দু প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে পুলিশের সামান্য সংঘর্ষও হয়েছিল। বহু মহিলা গেরুয়া পতাকা ও ট্র্যাডিশনাল বাদ্যযন্ত্র সহযোগে হনুমান মন্দির থেকে আখড়া মসজিদ পর্যন্ত মিছিল করেন (Hindus)। আন্দোলনকারীরা কুল্লুর অবৈধ মসজিদ ভাঙার দাবি জানিয়েছেন। যদিও রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের দাবি, রাজ্যের কোনও মসজিদই অবৈধ নয়। ২৯ সেপ্টেম্বর কুল্লু জেলা কর্তৃপক্ষ সাফ জানিয়ে দেয়, আখাড়া বাজার মসজিদটি অবৈধ নয়, তবে মসজিদের রেকর্ডকৃত এলাকা ও প্রকৃত এলাকার মধ্যে প্রায় ১৫০ বর্গমিটারের পার্থক্য রয়েছে। ১৯৯০-১৯৯১ সালে একতলা মসজিদটি নির্মাণের পর ২০১৭ সালে তা চারতলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়, যা অনুমোদিত ম্যাপের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলেও দাবি হিন্দু সংগঠনগুলির।

হিন্দুদের প্রতিবাদ

সেপ্টেম্বরের প্রথমদিকে সিমলার একটি মসজিদের অংশ সরানোর দাবিতেও হয় আন্দোলন। একই ধরনের প্রতিবাদ হয় মান্ডিতেও। আন্দোলনকারীদের হঠাতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।হিমাচলপ্রদেশের হিন্দুরা তাঁদের জমি অবৈধ দখলমুক্ত রাখতে উদ্যোগী হয়েছেন। জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে চাপ দিতে তারা রাস্তা অবরোধের মতো আন্দোলনের পথও অবলম্বন করেছেন। প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন বিভিন্ন বয়সের হিন্দুরা।

আরও পড়ুন: ইজরায়েলে রকেট হামলা লেবাননের, নিহত ৭, ‘হিজবুল্লা যেন প্রস্তুত থাকে’, হুঁশিয়ারি ইহুদি দেশের

এই মিছিলেই ছিলেন এক বয়স্ক ব্যক্তিও। তিনি বলেন, “ওয়াক্‌ফ বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুদের জমি অধিগ্রহণ করছে।” তাঁর প্রশ্ন, “কেন হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে হিন্দু স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে না?” হিমাচলপ্রদেশের হিন্দুদের প্রতি তাঁর আহ্বান, তাঁরা যেন হিন্দু স্বার্থকে সর্বাগ্রে রাখেন। বাংলাদেশে কীভাবে মুসলমানরা সংখ্যালঘু হিন্দুদের লক্ষ্যবস্তু করছে, তারও উল্লেখ করেন তিনি। এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের সমর্থন এবং সুরক্ষাও যে তারা পাচ্ছে, তাও জানান তিনি।

‘দেবভূমি সংগ্রাম কমিটি’

এদিকে, সম্প্রতি ‘দেবভূমি সংগ্রাম কমিটি’ একটি অবৈধভাবে নির্মিত ও সম্প্রসারিত সোলান মাজার চিহ্নিত করেছে। এই অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার দাবিতে গভর্নরকে পিটিশনও জমা দিয়েছে তারা।হিমাচলপ্রদেশের সমাজকর্মী কামাল গৌতম অবৈধ দখল থেকে পাহাড়ি রাজ্যকে মুক্ত করার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেই কারণে মুসলমান জঙ্গিরা তাঁকে টার্গেটও করেছিল। তা সত্ত্বেও হিমাচলপ্রদেশের হিন্দুরা তাঁদের অবস্থানে অটল। অন্যদিকে, হিমাচলি প্রতিবেশীদের থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে উত্তরাখণ্ডের হিন্দুরা একটি মিছিল বের করেন। তাঁরাও অবৈধ মসজিদ ধ্বংসের দাবি জানান। মিছিলের আয়োজন করেছিল উত্তরাখণ্ডের হিন্দু সংগঠনগুলো। এই মিছিলেও যোগ দিয়েছিলেন কয়েক হাজার হিন্দু।

তুষ্টিকরণের রাজনীতি

তুষ্টিকরণের রাজনীতি করতে গিয়ে এবং গদি আঁকড়ে থাকতে গিয়ে বছরের পর বছর ধরে মুসলমানদের তোল্লাই দিয়ে গিয়েছে বিজেপি বিরোধী কয়েকটি রাজনৈতিক দল। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, তারই বিষময় ফল ফলতে শুরু করেছে। ভারতে যে হারে মুসলমান জনসংখ্যা বাড়ছে, তাতে হয়তো অচিরেও এ দেশে বাংলাদেশের মতোই হিন্দুরা হয়ে পড়বেন সংখ্যালঘু। সেদিন যে এ দেশেও (Himachal Pradesh) বাংলাদেশের মতো ঘটবে না, হলফ করে তা বলতে পারে (Hindus) কে?

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles