North Bengal Medical: ৫২ বাড়িয়ে ৮০! কার চাপে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বাড়ানো হত নম্বর?

Siliguri: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে নম্বর দুর্নীতি, অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ আন্দোলনকারীদের
Siliguri_Medical
Siliguri_Medical

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি করকাণ্ডে প্রতিবাদের রেশ এবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজেও (North Bengal Medical) দুর্নীতির অভিযোগের বিস্ফোরণ ঘটল। অভিযোগ খোদ অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিত সাহা এবং ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তর বিরুদ্ধে। পরীক্ষায় কারচুপি, ছাত্র-ছাত্রীদের হুমকিতে মদত দেওয়ার অভিযোগের পাশাপাশি অবৈধভাবে তৃণমূলের নামে ছাত্র সংসদ পরিচালনার অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এ নিয়ে বুধবার তাঁরা কলেজের অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দেন।

 অধ্যক্ষকে ঘেরাও কেন? (North Bengal Medical)

রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন ও জুনিয়র ডাক্তাররা এদিন তৃণমূলের ছ'জন ছাত্রনেতার নামে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া, হস্টেলে ঘর বণ্টন নিয়ে দাদাগিরি, অনৈতিকভাবে টাকা তোলার অভিযোগ করেন। ওই  ছাত্রনেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ছাত্র সংসদ বাতিলের দাবিতে অধ্যক্ষ ও ডিনকে ঘেরাও করেন আন্দোলন রত জুনিয়র ডাক্তাররা। আরজি করকাণ্ডে বিতর্কিত তৃণমূল ছাত্র নেতা অভীক দের উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে (North Bengal Medical) প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান তাঁরা। তৃণমূল ছাত্র নেতা সোহম মণ্ডল ও সাহিন সরকারকে অবিলম্বে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেল থেকে বরখাস্ত করার জোরালো দাবিও রয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘বিচার চাই’! বাংলার ইতিহাসে দীর্ঘতম মানব বন্ধন, অভিনব প্রতিবাদের সাক্ষী কলকাতা

কে অভীক দে?

নির্যাতিতা কাণ্ডে যে সব ভিডিও ভাইরাল হচ্ছিল, সেখানে সেমিনার রুমে এক লাল জামা পরা যুবককে দেখা গিয়েছিল। লালবাজার যাঁকে ফিঙ্গার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞ বলেছিল। যদিও পরে জানা যায়, ওই যুবকের নাম অভীক দে। এসএসকেএমের সার্জারির পিজিটি তিনি। আরও পরে জানা যায়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করেন তিনি। যদিও এ নিয়ে সংগঠনের তরফে সেভাবে মুখ খোলেনি কেউই। অবশেষে সোমবার রাজ্য তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কর ভট্টাচার্য প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানান, অভীক দে-কে বরখাস্ত করা হল। এই অভিক দে-র বিরুদ্ধেই উঠছিল জোর করে চাপ দিয়ে নম্বর বাড়ানোর অভিযোগ।

 দুর্নীতির অভিযোগের বিস্ফোরণ!

জুনিয়র ডাক্তারদের (North Bengal Medical) ঘেরাও আন্দোলনের মাঝে অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা ও ডিন সন্দীপ সেনগুপ্তকে দুর্নীতির অভিযোগে চেপে ধরেন অধ্যাপক চিকিৎসকরাও। সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক চিকিৎসক এসকে রায়ের অভিযোগ, অধ্যক্ষ ও ডিন কীভাবে পরীক্ষায় কারচুপির পাশাপাশি আর্থিক দুর্নীতিতে যুক্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন আমাদেরকে ডেকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, নকল না ধরার জন্য। ফেল করা এক ছাত্রীকে পাশ করানোর জন্য সন্দীপ সেনগুপ্ত দিনের পর দিন নানা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। ট্যাবুলেশন শিটে হোয়াইটনার দিয়ে প্রকৃত নম্বর মুছে উত্তরের লবির ছাত্রদের নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

৫২ নম্বর বাড়়িয়ে ৮০!

এই অভীকের বিরুদ্ধে শুধু জুনিয়র চিকিৎসকরা নয়, ডিপার্টমেন্টাল হেডরাও সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বিশেষ একজন ছাত্র নেতার নম্বর সাদা কালি দিয়ে মুছে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। এইচওডি-রা বলছেন, তাঁরা ৫২-৫৩ নম্বর দিয়েছিলেন। অথচ মার্কশিটে নম্বর লেখা ৮০। এক অধ্যক্ষ বলেন, "নম্বর ধরে ধরে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের ডাকলে ফাইল দেখাব।” এদিন ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকরা ঘিরে ধরেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন ও অধ্যক্ষকে। তাঁরা জানতে চান নম্বর বাড়ানোর পিছনে কে যুক্ত। প্রথমে ডিন মানতে না চাইলেও পরে আন্দোলনকারীদের চাপে পড়ে কার্যত মুখ খোলেন তিনি। ডিন অফ স্টুডেন্স বলেন, "কোনও-কোনও সময় অভীক দে-র ফোন আসত। তবে বারবার ফোন এলে আমি বিরক্ত হয়ে বেরিয়ে যেতাম। অভীক ছাড়া কেউ ফোন করত না। তবে যতক্ষণ হলে ছিলাম, ততক্ষণ কড়া গার্ড দিয়েছি।” পাল্টা আন্দোলনকারীরা বলতে থাকেন নাম বলুন নাম। তখন আবার ডিন বলেন, "আমি অ্যাপোলজি চেয়ে বলছি, কয়েকটা ক্ষেত্রে প্রিন্সিপাল স্যরের কাছেও ফোন আসত। অভীক ছাড়া ফাইনাল ইয়ারে শাহিন সরকার ফোন করেছিল। আর কেউ নেই।” যদিও, প্রিন্সিপাল বলেন, "আমার কাছে কোনও ফোন আসত না।" আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তাররা একটি ছবি দেখিয়ে প্রমাণ করেন এখানে পরীক্ষা হল থেকে প্রতিটি অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে (North Bengal Medical)  অভীকের অবাধ বিচরণ ছিল। সেই ছবিতে দেখা যায়, অধ্যক্ষের জন্মদিনে কেক খাইয়ে দিচ্ছেন অভীক। কলেজ ক্যাম্পাসেই সেই অনুষ্ঠান হয়েছিল। এরপর মাধা নিচু করে চুপ করে বসে থাকেন অধ্যক্ষ।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles