মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হাইকোর্টের নির্দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের (West Bengal University) উপাচার্যের নিযুক্তি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর সমস্যায় পড়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বে ছিলেন ডাঃ সঞ্চারী মুখোপাধ্যায় এবং তিনি একমাত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অপারেট করার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর হাত দিয়েই বেতন হত বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি অধ্যাপক থেকে শুরু করে বিভিন্ন কর্মচারীদের। অবশ্য স্থায়ী সরকারি কর্মী বলতে দুটি পদ এখনও পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বরাদ্দ হয়েছে। একজন ফিনান্স অফিসার, অপরজন উপাচার্য। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁরা সকলেই চুক্তিভিত্তিক। কিন্তু তাঁদের মাসের শেষে বেতন দিতে গিয়েই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। কারণ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার আর অধিকার অন্য কারও নেই। অন্যদিকে হাইকোর্টের নির্দেশে আর উপাচার্যের পদেও নেই সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের কাছে দরবার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা এবং জেলাশাসক, বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলাশাসক।
এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন নেই
উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল, ২০১৮ সালে জেলা সফরে এসে গঙ্গারামপুরে একটি জনসভায় ভাষা দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (West Bengal University) কথা ঘোষণা করেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েনের পর ২০২১ সালে বালুরঘাটে একটি ভাড়াবাড়িতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল কাজকর্ম শুরু হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ভবন নির্মাণ বা অধ্যাপক-অধ্যাপিকা নিযুক্তি অথবা অন্যান্য কর্মীদের নিযুক্তির কাজ থমকে রয়েছে। ফলে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রী দূর-দূরান্ত থেকে এসে দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেছেন, তাঁরাও সমস্যায় পড়ছেন। এখনও পর্যন্ত কোনও স্থায়ী অধ্যাপক-অধ্যাপিকা না থাকায় ক্লাস নিয়মিত হয় না। ক্লাসঘর নেই, বিভিন্ন কলেজে বা স্কুলে গিয়ে ক্লাস করতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। সব মিলিয়ে খাতায়কলমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্তিত্ব থাকলেও দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয় আসলে কাগুজে বাঘ, মন্তব্য করছেন বিরোধীরা। বেতন না হলে কতদিন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী কর্মীরা তাঁদের দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন, তা নিয়েও সন্দিহান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ক্যামেরার সামনে মুখ না খুললেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা তাঁদের ক্ষোভের কথা প্রকাশ করেছেন, বলেছেন চরম অব্যবস্থার কথাও।
কী আশ্বাস দিলেন জেলাশাসক?
জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের (West Bengal University) কাজকর্ম সাধারণত জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে হয় না। তবুও স্থানীয় বিষয় হিসেবে এটা আমার কাছে এসেছে। আর্থিক বিষয়গুলি যিনি দেখেন, তাঁকে আমি ডেকে পাঠিয়েছিলাম। তাঁর কাছ থেকেই পুরো ব্যাপারটা জেনে নিলাম, কী হয়েছে। আসলে উপাচার্য নতুন নিয়োগ হয়নি। এটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অপারেট করা হত। চেকে সই করার ক্ষমতা একজনেরই থাকায় সমস্যা বেড়েছে। এটা নিয়ে আমি উচ্চশিক্ষা দফতরের সঙ্গে কথা বলেছি। উপাচার্য নিয়োগ যেহেতু খুব তাড়াতাড়ি হবে না, তাই এর মধ্যে সমস্যা মেটানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছি।
সহযোগিতার আশ্বাস সুকান্তর
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, রাজ্য সরকারের উচিত দ্রুত (West Bengal University) উপাচার্য নিয়োগ করা। যদি রাজ্য সরকার চায়, আমার সাহায্য নিতে পারে। আমি সবরকম সহযোগিতা করতে রাজি। যদি রাজ্যপালের কাছ থেকে তাড়াতাড়ি অনুমোদন বের করে আনতে হয়, সে ব্যবস্থাও করা যাবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours