তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
নবমী মানেই পুজো শেষের প্রহর গোনা। বছরভর অপেক্ষার জন্য প্রস্তুতিপর্ব শুরু। নবমী মানেই উৎসবের শেষ মুহূর্তের সবটুকু উপভোগ করা। আর বাঙালির উৎসব উদযাপনের সঙ্গে ভুরিভোজ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে। তাই নবমীতে বাঙালির বিশেষ ভুরিভোজ। কেউ বাঙালি রেস্তরাঁয় আগে থেকেই টেবিল বুক করে রাখেন, আবার কেউ বাড়ির হেঁশেলেই জমিয়ে রান্না করেন। তবে, খাওয়া বাড়িতে হোক কিংবা রেস্তরাঁয়, বাঙালির নবমীর মেনুতে মটন থাকবেই (Durga Puja Food)। কিন্তু ষষ্ঠী থেকে উৎসবের উদযাপনে যে হারে ভুরিভোজ চলে, নবমীর মটন কারি কিংবা কষা, স্বাস্থ্যের জন্য বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করে কি? চিকিৎসকরা কিন্তু বলছেন, ভুরিভোজে সাবধান! উৎসবের স্রোতে গা ভাসিয়ে বড় বিপদ ডেকে আনলে মুশকিল।
পাতে মটন পড়লে কাদের বিপদ বেশি? (Durga Puja Food)
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মটনের যে কোনও পদ সহজপাচ্য হয় না। এটি চর্বিযুক্ত মাংস। তাই কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, হৃদরোগীদের মটন খাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা জরুরি। কারণ, মটনে থাকে অতিরিক্ত ফ্যাট আর এই প্রাণীজ প্রোটিন হজম করাও বেশ কঠিন। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে।
পাশপাশি যাদের কোলেস্টেরল আছে, তাদের ক্ষেত্রেও মটন খাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকছে (Durga Puja Food)। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মটন খেলে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি আরও তৈরি হয়। তাই মটনে না হোক হাই কোলেস্টেরলে আক্রান্তদের।
রক্তচাপ যাদের বেশি তাদের একেবারেই মটন খাওয়া যাবে না বলে সাফ জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, মটনে অতিরিক্ত চর্বি থাকে। আর এই চর্বি রক্তচাপ বাড়ায়। হৃদপিণ্ড থেকে রক্ত শরীরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে। তাই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে মটন একেবারেই পাতে নেওয়া চলবে না।
স্থূলতার সমস্যায় যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের মটন খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। কারণ, মটনে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। যথেষ্ট ফ্যাট থাকে। তাই স্থুলতার সমস্যায় যারা ভুগছেন, মটন খাওয়ার ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা রাখতে হবে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। পরিমাণের দিকে নজরদারি খুবই জরুরি।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসক মহল? (Durga Puja Food)
বছরের বিশেষ দিনে অনেক সময়ই নিয়মের বাইরে খাওয়া চলে। নবমীর দিন একেবারেই মটন মেনু থেকে বাদ দেওয়াও হয়তো কঠিন। কিন্তু কিছু সতর্কতা অবশ্যই মেনে চলতে হবে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
হৃদরোগ কিংবা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তরা কখনই দুই পিসের বেশি মটন খাবেন না। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, পরিমিত খাবার খুব জরুরি। তাই খুব সামান্য পরিমাণে খেলে অনেক ক্ষেত্রে বিপদের আশঙ্কা কমে। নবমীতে ভারী খাবার খাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে পুজোর অন্য দিনগুলোতে সহজপাচ্য, কম ফ্যাট জাতীয় খাবারের পরিকল্পনা করা জরুরি। বিশেষত যাদের উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়বেটিস, হৃদসমস্যা রয়েছে, তাদের রাত জেগে ঠাকুর দেখা কিংবা লাগাতার বাইরের অতিরিক্ত তেলমশলা জাতীয় খাবার একেবারেই চলবে না (Durga Puja Food)।
স্থুলতার সমস্যায় ভুক্তভোগীরা পুজোর চার দিন যোগাভ্যাস কিংবা হাঁটাহাঁটি একেবারেই ছাড়বেন না। এমনই পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পুজোর সময়ে খাবার অনেক সময়েই মেপে খাওয়া হয় না। বাইরের খাবারের পাশপাশি বাড়ির খাবারেও অতিরিক্ত মশলা কিংবা তেল ব্যবহার হয়। তাই শারীরিক কসরত কমানো যাবে না। তাহলেই কিছুটা হলেও ভারসাম্য বজায় রাখা যেতে পারে। তবে, পরিমাণের দিকে নজর দিতেই হবে। ভালো লাগছে বলেই অতিরিক্ত পরিমাণ খাবার খেলে কিন্তু শরীর সুস্থ রাখা কঠিন হয়ে যাবে। এমনই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours