Durga Puja 2023: দুর্গাপুরের হাকিম বাড়ির পুজোয় নবপত্রিকা আনা হয় আগমনী গান গেয়ে

বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে একই হাঁড়িতে ভোগ হয় ১৫৬ বছর ধরে
Durga_Puja_2023_(21)
Durga_Puja_2023_(21)

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রামশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বৃটিশ ভারতে একজন ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত যুবক। নেমে পড়েন বৃটিশদের সঙ্গে ঠিকাদারি ব্যবসায়। প্রচুর অর্থ আয়ের পর তিনি মাত্র ৩৯ বছর বয়সে জমিদারি কেনেন। গড়ে তোলেন বড় দালান আর দুর্গামন্দির। ১২৭৫ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন দেবী দুর্গার। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দেবী দুর্গা এবার ১৫৬ বছরে পা দিল। গোপালপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার সে যুগ থেকে এ যুগ খুবই অভিজাত এবং শিক্ষিত পরিবার। বৃটিশ ভারতে সেই আমলে আসানসোলে আদালত ছিল। সেই সময় ভারতীয় বিচারকদের সাম্মানিক ভাতা দেওয়া হত। রামশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের মধ্যম সন্তান সত্যকিঙ্কর বন্দ্যোপাধ্য্যায় ছিলেন সেই আমলের সাম্মানিক বিচারক। তাই গোপালপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের দুর্গাপুজোকে হাকিম বাড়ির পুজো বলা হয়। অভিজাত এই পরিবারের ছেলেমেয়েরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন স্থানে বাস করেন কর্মসূত্রে। তবে পুজোর চারদিন তাঁরা ফিরে আসেন নিজের গ্রামে, নিজেদের পুজোর (Durga Puja 2023) আনন্দ উপভোগ করতে।

একই হাঁড়িতে ভোগ ১৫৬ বছর ধরে (Durga Puja 2023)

রামশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রথায় পুজো (Durga Puja 2023) করতেন, আজও সেভাবেই পুজো চলে। শরীকী প্রথায় ভাগ হয়নি এই পুজো। একই হাঁড়িতে ভোগ হয় একসঙ্গে ১৫৬ বছর ধরে। মাটির থালা-বাটি-গ্লাসে ভোগ দেওয়া হয় দেবী দুর্গাকে। ১০৮ পদ্ম দেওয়া হয় অষ্টমীর মাহেন্দ্রক্ষণে। এখনও জমিদারি প্রথা মেনে অষ্টমীর মাহেন্দ্রক্ষণে বলির সময় বন্দুক চালানো হয়। ১৫৬ বছর আগে শুরু হয়েছিল আগমনী গান গেয়ে নবপত্রিকা আনা। আজও সেই প্রথা রয়েছে। কবি নীলকন্ঠ মুখোপাধ্যায় রচিত আগমনী গান গেয়ে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের নবপত্রিকা আনা হয়। লক্ষ্মী মন্দিরে স্থাপনের পরেই দেবীর নবপত্রিকা মন্দিরে নিয়ে আসা হয়।

এই প্রজন্ম বলি প্রথার বিরুদ্ধে (Durga Puja 2023)

আগে নবমীর দিনে (Durga Puja 2023) গ্রামের তিন দেবতার কাছে ছাগ বলি দেওয়া হত। কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে, এই প্রজন্ম বলি প্রথার বিরুদ্ধে বলে। বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারে দেবীর উদ্দেশ্যে বলি দেওয়া হয় চালকুমড়ো। দশমীর দিনে সিঁদুর খেলার প্রচলন রয়েছে। দেবীকে নিরঞ্জনের সময় বরণ করেন পরিবারের গৃহবধূরা। আগে দেবীর নিরঞ্জনের সকালে অর্থাৎ দশমীর সকালে নীলকন্ঠ পাখি ছাড়া হত কৈলাসে বার্তা দেওয়ার জন্য, উমা বাপের বাড়ি থেকে শিবের কাছে ফিরে যাচ্ছেন। কিন্তু এখন নীলকন্ঠ পাখি আর মেলে না, তাই সেই প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। 
বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “১৫৫ পার হয়ে এবার ১৫৬ বছরে পা দিয়েছে রামশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত দেবী দুর্গা এবং এখনও যৌথ পারিবারিক পুজো হয়ে আজও জেলার মধ্যে আলাদা বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে।”

 

দেশের খবরদশের খবরসব খবরসবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের FacebookTwitter এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles