Diwali Festival: আলোর উৎসবে দেদার শব্দবাজি! কোন কোন রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দিতে পারে?

Festival of lights: বাজি নিয়ে সচেতনতা তৈরি না হলে বড় বিপদ হবেই! সুস্থ থাকতে কোন দিকে বাড়তি সতর্কতা জরুরি? 
Firecrackers
Firecrackers

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল

দেশ জুড়ে শুরু হবে আলোর উৎসব (Diwali Festiva)। দীপাবলির উৎসবে মাতবেন সকলেই। তবে বাঙালির এই আনন্দ আলোর উৎসবেই আটকে থাকে না।‌ তার সঙ্গে জুড়ে যায় দেদার বাজি! আতসবাজি হোক কিংবা শব্দবাজি, কলকাতা থেকে রাজ্যের সর্বত্র দীপাবলির উৎসবে বাজির দাপট থাকেই। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাজি নিয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। পরিবেশবিদদের একাংশের অভিযোগ, প্রশাসনের সক্রিয়তাও সর্বত্র নেই। তাই প্রত্যেক বছর বাড়ে বাজির দাপট। তবে পরিবেশের এই দূষণ মারাত্মকভাবে স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, বাজি নিয়ে সচেতনতা তৈরি না হলে বড় বিপদ হবেই। দেখে নেওয়া যাক, বাজির দাপট কোন রোগের প্রকোপ বাড়ায়?

ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা (Diwali Festiva)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দেশ জুড়ে বাড়ছে ক্রনিক পালমোনারি ডিজিজ। এছাড়াও হাঁপানি, শ্বাসকষ্টের মতো একাধিক ফুসফুসের সমস্যায় জেরবার অনেকেই। শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে ফুসফুসের রোগ। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ফুসফুসের অসুখের অন্যতম কারণ বায়ুদূষণ। আর বাজি এই দূষণের মাত্রা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাঁরা জানাচ্ছেন, আতসবাজি পোড়ানোর পরেই আকাশ সাদা ধোঁয়ায় ভরে যায়। আর এই ধোঁয়া বাতাসে কার্বন মনো-অক্সাইডের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। এর জেরে বায়ুদূষণ হয়। ফলে ফুসফুসের অসুখ বাড়ে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শীতের আগে অনেকেই ফুসফুসের সংক্রমণে আক্রান্ত হন। এই সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ যথেচ্ছভাবে আতসবাজি পোড়ানো।

শ্রবণ যন্ত্রের চিরস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে

প্রত্যেক বছরেই দীপাবলির রাতে (Diwali Festiva) বাড়ে বাজির দাপট। কলকাতা থেকে জেলা, সর্বত্র শব্দের প্রকট আওয়াজ চলে। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শব্দের এই দাপটের জেরে প্রত্যেক বছরেই শ্রবণ সমস্যা বাড়ছে।‌ বিশেষত শিশুদের শ্রবণশক্তি চিরস্থায়ী ক্ষতির মুখেও পড়ছে। তাঁরা জানাচ্ছেন, হঠাৎ বিকট তীব্র আওয়াজের জেরে মস্তিষ্কে মারাত্মক প্রভাব পড়ে। কানের ভিতরেও তার ফলে রক্তক্ষরণ হতে পারে। আর তার জেরেই চিরস্থায়ী ভাবে শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলার ঝুঁকি তৈরি হয়।

বাড়তে পারে চোখের সমস্যা (Diwali Festiva)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাজি চোখের জন্যও ক্ষতিকারক। দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং শুষ্ক চোখের সমস্যা বাড়ছে‌। জীবনযাপনের ধরনের জন্য শিশুরাও চোখের নানান সমস্যায় ভুগছে। আতসবাজি পোড়ানোর সময়ে একটা অদ্ভুত আলো দেখা যায়। এই আলো চোখের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক। এর ফলে কনজাংটিভাইটিসের মতো রোগের দাপট বাড়তে পারে। শুষ্ক চোখ অর্থাৎ চোখ লাল হয়ে যাওয়া, লাগাতার জল পড়া এবং একনাগাড়ে দেখায় সমস্যা তৈরি হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, আতসবাজিতে থাকে নানান ক্ষতিকারক রাসায়নিক। আগুনে পোড়ার সময়ে সেই রাসায়নিক বের হয়। তার জেরেই চোখে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

ত্বকের সংক্রমণ বাড়াতে পারে

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাজির জেরে অনেকেই ত্বকের সমস্যায় ভুগতে পারে। অনেক সময়েই বাজির রাসায়নিক থেকে ত্বকে নানান অ্যালার্জি দেখা দেয়। ফলে বাজি পোড়ানোর আগে সে সম্পর্কেও সতর্কতা জরুরি।

মাইগ্রেনের রোগীদের বাড়তি বিপদ!

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, শব্দবাজির হঠাৎ তীব্র আওয়াজ মানুষের শরীরে স্নায়ুর কাজে বাধা তৈরি করে। তাই মস্তিষ্কে এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। বিশেষত যাঁরা মাইগ্রেনের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য এই তীব্র আওয়াজ মারাত্মক প্রভাব ফেলে। মাথার যন্ত্রণা, বমি ভাব বাড়িয়ে দেয়। আবার বাজির দাপট মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও প্রভাব ফেলে। লাগাতার আওয়াজের জেরে মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা তৈরি হয়। যাঁরা নানান মানসিক রোগে ভুগছেন, তাঁদের জন্য এমন পরিবেশ আরও সঙ্কট তৈরি করতে পারে।

সুস্থ থাকতে কী পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞ মহল? (Diwali Festiva)

চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, বাজি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। তাই মানুষের শরীর এবং মনেও এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ে। তাই পরামর্শ, দীপাবলি আলোর উৎসব (Festival of lights) হলেই তা মানুষ এবং পরিবেশ সকলের জন্য ইতিবাচক হবে। বাজির ক্ষতিকারক দিক নিয়ে আরও লাগাতার সচেতনতা জরুরি। প্রশাসনের তরফে সক্রিয়তাও প্রয়োজন। তাঁরা জানাচ্ছেন, পরিবেশবান্ধব বাজি হিসেবে যেগুলি বাজারে পাওয়া যায়, তার গুণমান আরও ভালোভাবে পরীক্ষা করা জরুরি। তাছাড়া, নজরদারিও বাড়ানো প্রয়োজন। বাজির দাপট কমাতে না পারলে নানান রোগের দাপটও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

 

DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles