তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
দুর্গাপুজো শেষ। শেষ লক্ষ্মীপুজো। সামনেই কালীপুজো ও দীপাবলি। উৎসব চলছে। কিন্তু এই মরশুমে নতুন উদ্বেগ রাজ্য জুড়ে! একদিকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যার জেরে জীবন বিপর্যস্ত। দেখা দিচ্ছে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা। ডায়ারিয়া থেকে জ্বর, রোগের কবলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আরেকদিকে নতুন রোগের ভ্রুকুটি দেখছেন চিকিৎসক মহল। তাঁদের আশঙ্কা, উৎসবের মরশুমে নতুন ভাবে বিপদ (Dengue) জাঁকিয়ে বসতে পারে। তাই আগাম সতর্কতা জরুরি।
কোন বিপদ নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসক মহল?
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, রাজ্য জুড়ে ফের বাড়তে পারে ডেঙ্গির (Dengue) দাপট। তাঁদের আশঙ্কা, উৎসবের মরশুমে এই রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে। বিশেষত, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলাগুলিতে এই মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ডেঙ্গি সংক্রমণ হচ্ছে। অক্টোবরে সেই সংক্রমণ কয়েকগুণ বাড়তে পারে বলেই তাঁদের আশঙ্কা।
কেন উৎসবের মরশুমে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়তে পারে? (Dengue)
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছিল। কিন্তু গত মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে রাজ্য জুড়ে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়। যার জেরে মশাবাহিত রোগের দাপট কিছুটা কমে। তাঁরা জানাচ্ছেন, লাগাতার বৃষ্টি পড়লে মশা কম জন্মায়। তার জেরেই ডেঙ্গির মতো রোগের প্রকোপ কিছুটা কমে। তবে, অক্টোবরে (Festive season ডেঙ্গির দাপট বৃদ্ধির প্রধান কারণ জমা জল হতে পারে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। তাঁরা জানাচ্ছেন, আপাতত বৃষ্টি একনাগাড়ে হচ্ছে না। কিন্তু রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জল জমেছে। নিকাশি ব্যবস্থা অধিকাংশ জায়গায় খুব খারাপ। আর এই জমা জল মশাবাহিত রোগের মূল কারণ। তাই উৎসবের মরশুমে মশার দাপট বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে বাড়তে পারে ডেঙ্গি। বছরের এই মরশুমে ডেঙ্গি সংক্রমণ বেশি হয়।
বাড়তি বিপদ কেন? (Festive season)
বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, উৎসবের মরশুমে একাধিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঠিকমতো কাজ হয় না। অধিকাংশ পুরকর্মী ছুটিতে থাকেন। এর ফলে জ্বর হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো সময়ের মধ্যে ডেঙ্গি (Dengue) পরীক্ষা হয় না। এর জেরে রোগ নির্ণয়ে অনেক সময়েই দেরি হয়ে যায়। ফলে সংক্রমণের আশঙ্কাও বাড়তে থাকে। আবার পরিস্থিতি জটিল হলে হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসা চালানো নিয়ে নানান সঙ্কট তৈরি হয়। প্রত্যেক বছর রক্তের আকালের একাধিক অভিযোগ ওঠে। ব্লাড ব্যাঙ্কেও উৎসবের মরশুমে প্লেটলেটের জোগান পাওয়া যায় না। সব মিলিয়ে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে। পরিজনদের হয়রানিও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা একাংশের।
কী পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা? (Dengue)
চিকিৎসকদের একাংশের পরামর্শ, পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এলাকায় জল জমলে, অপরিচ্ছন্ন বাগান কিংবা পার্ক থাকলে সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। মশার বংশবিস্তার রুখতে পারলেই বিপদ কিছুটা আটকানো যাবে। তবে জ্বর, কাশি, মাথাব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। প্রথম থেকেই রোগীকে মশারি টাঙিয়ে, তার ভিতরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। পাশাপাশি জ্বর হলেই বেশি পরিমাণে জল খাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ শরীরের ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি কমলে ডেঙ্গির বড় বিপদ আটকানো সহজ হবে বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকদের একাংশ।
DISCLAIMER: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী লেখা। এর সঙ্গে মাধ্যম-এর কোনও সম্পর্ক নেই। মাধ্যম এর কোনও দায় নিচ্ছে না। এখানে বলা যে কোনও উপদেশ পালন করার আগে অবশ্যই কোনও চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours