মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'রেমাল' (Cyclone Remal)। ১৩০-১৪০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের গতিবেগ থাকবে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর (Weather Update)। ঘূর্ণিঝড়টি ২৫ মে শনিবার গভীর নিম্নচাপে এবং ২৬ মে একটি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ইতিমধ্যেই আগাম সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি শুরু করেছে পূর্বরেল (Eastern Railway) কর্তৃপক্ষ। রেমালের প্রভাব নিয়ে আগাম সতর্ক রাজ্য প্রশাসনও।
পূর্বরেলের প্রস্তুতি
পূর্বরেলের তরফেও এবার সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই হাওড়া ও শিয়ালদা বিভাগের রেলের ম্যানেজার ও আধিকারিকরা বৈঠকে বসেছেন। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের (Cyclone Remal) সম্মুখীন হয়ে যাতে মোকাবিলা করা যায় তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
শিয়ালদা ডিভিশনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
রেমাল মোকাবিলায় শিয়ালদা ডিভিশনে ইতিমধ্যেই এমার্জেন্সি কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে। রবিবার সন্ধ্যের পর থেকে টানা কাজের জন্য কর্মীদের অফিসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। রেল লাইনের পাশে ডাল ভেঙে পড়তে পারে, এমন সব গাছকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝড়ের (Cyclone Remal) আগেই তা ছেঁটে ফেলা হবে বলে জানিয়েছে পূর্ব রেল। জল সীমারেখা অতিক্রম করলে ট্রেন চলাচলে সমস্যা হতে পারে। তাই জরুরি পরিস্থিতিতে সব জায়গায় পাম্প বসানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিষেবায় যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে তাই প্রত্যেক স্টেশনে ঘনঘন অ্যানাউন্সমেন্টের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে যাত্রীদের সবসময় পরস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহল করা যায়। ঝড়ের মাত্রা যদি বেশি হয়, তবে প্ল্যাটফর্মের শেড ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে প্লাস্টের শীটের বন্দোবস্ত করে রাখা হচ্ছে। সংখ্যায় বেশি কর্মী দিয়ে টাওয়ার ওয়াগনগুলিকে প্রস্তুত রাখতে হবে যাতে কোনও সম্ভাব্য ওভারহেড তারের সমস্যার ক্ষেত্রে সেগুলি সরানো যায়।
পাশাপাশি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্টেশনগুলির শেড পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে, যাতে ঝড়ের প্রকোপে শেড উড়ে না যায়। এছাড়াও বিভিন্ন স্টেশনে থাকা হোর্ডিং, বিজ্ঞাপনের বোর্ডগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে, যাতে ঝড়ের (Cyclone Remal Update) সময় উড়ে বা ভেঙে পড়ে বিপদ না বাড়ে। অন্যদিকে নামখানা, ডায়মণ্ড হারবার, হাসনাবাদের মত জায়গায় ঝড়ের প্রভাব বেশি পড়তে পারে। সেখানে পর্যাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং দল ও টেলিকম কর্মীদের সঙ্কট মোকাবিলায় সজাগ থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রবিবার সকালের মধ্যে শিয়ালদা, দমদম, বারাসত, নৈহাটি, রানাঘাট প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চালকদের সঙ্গে ডিজেল লোকো স্থাপন করার নির্দেশ রয়েছে।
হাওড়া ডিভিশনে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে?
কন্ট্রোলরুমে হাই অ্যালার্ট জারি থাকবে। পর্যাপ্ত আধিকারিক উপস্থিত থাকবেন সবসময়। কোথাও যেন জল জমে না থাকে, তার জন্য পর্যাপ্ত কর্মীদের কাজে লাগানোর বন্দোবস্ত করতে হবে। বড় বড় স্টেশনগুলোতে ডিজেইল জেনারেটর ও ইমার্জেন্সি পাওয়ার ব্যাপ আপের বন্দোবস্ত রাখতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শতায়ু ভোটারের সংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার! আজ ষষ্ঠ দফার ভোটে ৮৮৯ প্রার্থীর ভাগ্য-নির্ণয়
রাজ্য প্রশাসনের আগাম সতর্কতা
রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের (Weather Update)। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী পক্ষ থেকে হলদিয়া এবং পারাদ্বীপে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। মৎস্যজীবী থেকে শুরু করে যে সকল জাহাজ ঘূর্ণিঝড়ের সমুদ্রপথে রয়েছে তাদের মাইকিংয়ের মাধ্যমে সতর্ক করছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী। ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর জাহাজ এবং বিমান ঘন ঘন নজরদারি চালাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Remal) ল্যান্ডফলের অঞ্চলে। পাশাপাশি নজর রাখা হচ্ছে নোঙর করা জাহাজ এবং নৌকার ওপরেও।
তৈরি বিপর্যয় মোকাবিলা দল
ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone Remal) মোকাবিলার প্রস্তুতির অঙ্গ হিসেবে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনী (Indian Coast Guard) নটি বিপর্যয় মোকাবিলা দল গঠন করেছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনীকে আপৎকালীন সহায়তা করার কথাও জানানো হয়েছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তরফে (Weather Update)। এছাড়াও হলদিয়া, পারাদ্বীপ, গোপালপুর, ফ্রেজারগঞ্জের মতন জায়গায় ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর একাধিক জাহাজ এবং ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours