মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পৃথিবীর মধ্যে খ্রিস্টান জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার নেপালে সবথেকে বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৬১ সালে যেখানে নেপালে মাত্র ৪৫৮ জন খ্রিস্টান বাস করতেন, সেখানে ২০১১ সালের সেনসাসে মোট জনসংখ্যার ১.৪ শতাংশ মানুষ খ্রিস্টান ছিলেন। আবার, ২০২২ সালে এই সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশ। নেপালের এই ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তনে বিপদ দেখছেন অনেকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সামাজিক এবং ধর্মীয় বিন্যাস ক্রমশই বদলে যাচ্ছে নেপালে। বিশেষজ্ঞদের মতে নেপালের সামাজিক এবং ধর্মীয় বিন্যাস স্থিতিশীল ছিল ২০০৬ পর্যন্ত। তখন নেপাল ছিল একটি হিন্দু রাষ্ট্র। কিন্তু পরবর্তীতে নেপাল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে যখন থেকে আত্মপ্রকাশ করে, তখন থেকে সুযোগটা নিতে থাকে মিশনারিরা।
সেদেশে ৬৫ বছর ধরে কাজ করে চলেছে United Mission নামের একটি সংগঠন
সেদেশের হিন্দু বৌদ্ধরা এই ধর্মান্তকরণের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। তবুও কাজ সেভাবে হচ্ছেনা বলেই জানা যাচ্ছে। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে নেপালের সংবিধানে ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধারা রয়েছে, তবে তা শুধুমাত্র সংবিধানেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে তার কোনও প্রয়োগ দেখতে পাওয়া যায়না। আন্তর্জাতিক খ্রীস্টান সংগঠনগুলি থেকে ব্যাপক ফান্ডিং আসে নেপালে। মিশনারিরা ধরেই নিয়েছেন যে নেপাল হল তাদের সহজ লক্ষ্যবস্তু। তারা প্রতি মুহূর্তে সক্রিয় ধর্মান্তকরণের কাজে। জানা যাচ্ছে সেদেশে ৬৫ বছর ধরে কাজ করে চলেছে United Mission নামের একটি সংগঠন। খাতায় কলমে দেখায় যে তারা গরিব এবং জনকল্যাণমূলক কাজ করে, কিন্তু আদতে তাদের লক্ষ্য নেপালকে খ্রীস্টান রাষ্ট্র বানানো। এই কাজে তাদের সাহায্য করে চলেছে বিভিন্ন খ্রীস্টান এনজিও।
উত্তর নেপালে মিশনারিদের এই প্রভাব সবথেকে বেশি
উত্তর নেপালে মিশনারিদের এই প্রভাব সবথেকে বেশি বলে জানা যাচ্ছে। গরিব মানুষদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে, তাদের ভাল জীবন ও জীবিকার স্বপ্ন দেখিয়ে খ্রিস্টান মিশনারিরা ধর্মান্তকরণ করে চলেছে। “to make Christ known by word and life”....... এই নামে চলছে প্রচার অভিযান। অন্যদিকে মুসলিম সংগঠনের নেতারা এবং খ্রীস্টান সংগঠনগুলি লাগাতার দাবি জানিয়ে আসছে ধর্ম পরিবর্তনের অধিকারকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দানের জন্য। ২০১৪ সালে সেদেশের ব্রিটিশ দূত বলেন, ব্যক্তির নিজ ইচ্ছায় ধর্ম পরিবর্তনকে আমরা সর্বদাই সমর্থন করি। ধর্ম পরিবর্তনের অধিকারকে সদা সুরক্ষিত রাখব আমরা।
গসপেল অফ ট্রুথ কেন প্রচার করা হচ্ছে গরিব মানুষের সেবা কাজে
সেদেশের খ্রিস্টান মিশনারিরা অবশ্য এসব অভিযোগ ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে বলছে, আমরা কাউকে জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণ করছিনা। সবাই নিজেদের জীবনকে সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বানানোর জন্য খ্রিস্টান হচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সবাই যখন নিজের ইচ্ছায় খ্রিস্টান হচ্ছে, তবে বাইবেলের সঙ্গে তাদের টাকা কেন দেওয়া হচ্ছে? গসপেল অফ ট্রুথ কেন প্রচার করা হচ্ছে গরিব মানুষের সেবা কাজে?
সবথেকে বেশি ধর্মান্তকরণের কাজ মিশনারিরা করেছে ২০১৫ সালে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের সময়
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, সবথেকে বেশি ধর্মান্তকরণের কাজ মিশনারিরা করেছে ২০১৫ সালে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের সময়। সেসময় সেবা কাজের অজুহাতে তারা ব্যাপক ধর্মান্তকরণ চালাতে থাকে। ভূকম্প বিধ্বস্ত নেপালে তখন ঘরবাড়ি হারান বহু সংখ্যক মানুষ, তাদের ক্ষতিপূরণ দিতে এগিয়ে আসে মিশনারিরা।
একনজরে....
১৯৫১ সালে মোট খ্রিস্টান সংখ্যা - ০
১৯৬১ সালে মোট খ্রিস্টান সংখ্যা- ৪৫৮
২০১১ সালে মোট খ্রিস্টান সংখ্যা- ৩,৭৬,০০০
২০২২ সালে মোট খ্রিস্টান সংখ্যা- ৫,৪৫,০০০
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours