মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠক করে ফিরে আসার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছে তিন ব্যক্তি। এসএসসি দুর্নীতি মামলায় দুই কর্তা শান্তিপ্রসাদ সিনহা এবং অশোক সাহা। গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল। এর পর ইডি-সিবিআইয়ের ভূমিকা ফের একবার আতসকাচের নীচে এসেছে। সিপিএম এবং কংগ্রেস একযোগে বলছে, ইডি-সিবিআই অনেক দেরি করেছে। তৃণমূলের নেতাদের গ্রেফতারি আরও আগেই করা উচিৎ ছিল। একইসঙ্গে তাঁদের দাবি, এখানেই থামলে চলবে না, অনুব্রত-শান্তিপ্রসাদরা নাকি নাটবল্টু, আসল মেশিনটাকে ধরতে হবে।
যার মোদ্দা কথা হল, ইডি-সিবিআই কলকাতায় ভাল কাজই করছে। আরও ভাল কাজ করতে হবে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি আবার বলেছেন, সব পিসির শিবিরের লোকেদের সিবিআই-ইডি গ্রেফতার করছে। ভাইপো শিবিরের লোকেদেরও গ্রেফতার করতে হবে।
কেন্দ্রীয় এজেন্সির কাজ নিয়ে সিপিএম-কংগ্রেসের বেঙ্গল লাইন নিয়ে নানা টিপ্পনিও রাজনৈতিক মহলে শোনা যাচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ইডি-সিবিআই এতদিন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহের রাজনৈতিক হাতিয়ার বলেই বামেরা সমালোচনা করে এসেছে। প্রতিহিংসার রাজনীতির জন্য এই দুই ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে। সেই ইডি-সিবিআইয়ের কলকাতার অপারেশন দেখে অবশ্য আর প্রতিহিংসার কথা বলছেন না সিপিএম নেতারা। বরং কেন এত দেরি হল সেই প্রশ্ন তুলছেন। যার অর্থ, ইডি-সিবিআইকে আরও তৎপর হওয়ার বার্তা দিতে চাইছেন সিপিএম নেতারা।
কংগ্রেসেরও কার্যত ঘুরিয়ে একই অবস্থান। ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীকে জেরার সময় ইডির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল কংগ্রেস। সেই কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কলকাতায় ভাইপো শিবিরের নেতাদের ইডি-সিবিআই কেন ধরছে না সেই দাবি তোলা হচ্ছে। অর্থাৎ দিল্লিতে ইডি-সিবিআই খারাপ, কিন্তু কলকাতায় এই দুই সংস্থাকে আরও ভাল কাজ করার আর্জি কংগ্রেস নেতাদের।
সিপিএমেরও অবস্থান বিচিত্র। দুবাই থেকে সোনা চোরাইয়ের স্বপ্না সুরেশ মামলায় ইডি যখন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়নের ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিল, তখন ইডি ছিল প্রতিহিংসার রাজনীতির প্রতীক। প্রকাশ কারাতের আত্মীয় এনডিটিভির আর্থিক অনিয়ম নিয়ে আয়কর দফতর, ইডি সক্রিয় হওয়ার সময়েও সিপিএম প্রতিহিংসার রাজনীতি, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার উপর আঘাতের কথা বলেছে।দিল্লিতেও সীতারাম ইয়েচুরিসহ বাম নেতারা হালে মহারাষ্ট্র সরকার পতনের পরেও একই মত জানিয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লিসহ দেশের অন্যপ্রান্তে যে ইডি-সিবিআইকে অসুরের সঙ্গে তুলনা করেছে বামেরা তারাই কলকাতায় দুই কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে দোসর ভাবছে। যা রাজনৈতিক মহলে কৌতুকের উদ্রেক করেছে।
বাম ও কংগ্রেসের এই অবস্থান নিয়ে বিজেপি যারপরনাই খুশি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, বামেরা বরাবরই রাজনৈতিক ভাবে ভণ্ড। কংগ্রেস-সিপিএম উভয়েই বাংলার মাটিতে প্রাসঙ্গিক থাকতে এখন ইডি-সিবিআইয়ের প্রশংসা শুরু করেছে। নরেন্দ্র মোদীর একটিই নীতি, খাবও না, খেতেও দেব না। তা গোটা দেশে কার্যকর। পশ্চিমবঙ্গে চোরের মহারানির সরকারের ধসে যাওয়ার সময় দ্রুত আসতে চলেছে।
+ There are no comments
Add yours