মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ার কর্মসূচিকে সামনে রেখে জেলা নেতৃত্বের উপস্থিতিতে প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। আর সেই সভাকে ঘিরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোণায়। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান ও জেলা সভাপতিকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। সভাস্থলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। জেলা নেতৃত্বের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যানকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এমনকী তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী চন্দ্রকোণা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষকে মেরে বাইরে বের করে দেয় বলে অভিযোগ। পরে, পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ঠিক কী ঘটেছে?
শুক্রবার বিকেল নাগাদ চন্দ্রকোণা পুরসভার টাউন হলে অভিষেকের (Abhishek Banerjee) নবজোয়ার কর্মসূচির একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়েছিল। চন্দ্রকোণা-২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সেই প্রস্তুতি সভায় ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা, ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি আশিস হুদাইতসহ জেলা সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। আর সেই সভার শুরুতেই তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা দু'ভাগে বিভক্ত হয়ে যান। কারণ, রাতারাতি অঞ্চল ও বুথ সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়। সভাস্থলে এসে বিষয়টি জানাজানি হতেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূলের চন্দ্রকোনা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ,প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জগজিৎ সরকারসহ প্রাক্তন বুথ ও অঞ্চল সভাপতি থেকে শুরু করে বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। সভাস্থলের ভিতরে চন্দ্রকোণা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষসহ তাঁর অনুগামীরা ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন। আর এতেই দেখা দেয় চরম উত্তেজনা। দফায় দফায় ভিতরে, বাইরে চলে বিক্ষোভ। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষকে মারধর করে সভাস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর এরই মাঝে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা বাইরে বেরিয়ে এলে তাঁকে ঘিরে ধরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের একাংশ। এমনকী সেসময় জেলা চেয়ারম্যানকে ধাক্কা মারতে দেখা যায় এক তৃণমূল কর্মীকে। পরক্ষণে জেলা সভাপতি আশিষ হুদাইত সভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার জন্য পৌঁছালে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। বাইরে থাকা বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের নেতা কর্মীরা জেলা সভাপতির সঙ্গে সভাস্থলে পুনরায় ঢোকেন। তারপরই শুরু হয়ে যায় তুমুল উত্তেজনা। পরে, চন্দ্রকোণা থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। আর এই ঘটনায় তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল একেবারে প্রকাশ্যে চলে আসে।
কী বললেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতারা?
বিক্ষোভকারী তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একাংশের দাবি, অভিষেক (Abhishek Banerjee) আসার আগেই রাতারাতি অঞ্চল ও বুথ সভাপতি পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রকোণা-২ ব্লকের সভাপতি প্রসূন ঘোষ ও বিধায়কের নেতৃত্বে বুথ সভাপতি ও অঞ্চল নেতৃত্বদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে ব্লকের তৃণমূল নেতা কর্মীদের একাংশ জানতো না। চন্দ্রকোণা-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ বলেন, বুক চিতিয়ে যারা দল করে তাদের সরিয়ে দিয়ে সিপিএম, বিজেপি থেকে আসা লোকজনদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা প্রতিবাদ করেছি।
কী বললেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব?
যদিও সভাস্থলে গণ্ডগোল নিয়ে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অমল পণ্ডা বলেন, তেমন কিছু হয়নি,কিছু নেতা কর্মীদের ক্ষোভ ছিল তা তাঁরা জানিয়েছেন। আর আমাকে কেউ ধাক্কাধাক্কি করেনি। আসলে সংসার বড় হয়েছে, তাই একটু মনোমালিন্য হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours