মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: হিন্দু শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার ১০৮ রূপের মধ্যে অন্যতম দেবী সঙ্কটনাশিনীর এক রূপ, দেবী বিপত্তারিণী। যে কোনও মাতৃ-মন্দিরে দেবীর আরাধনা হয়। বাঙালি গৃহস্থ বাড়ির সধবা মহিলারা এই ব্রত করেন।
হিন্দুরা মূলত বিপদ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য এই দেবীর পুজো করেন। আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত এই দেবীর পুজো করা হয়ে থাকে। এর মধ্যে যে কোনও শনি বা মঙ্গলবারে এই ব্রত পালন করা হয়।
গ্রামাঞ্চলে বিপত্তারিণী পুজো চারদিন ধরে চলে। প্রথম দিনে দেবীর আরাধনা করা হয়। মহিলারা গঙ্গা বা কোনও নদীতে স্নান করে দণ্ডী কাটেন। তারপর দুই রাত্রি ধরে রাতে বাংলা লোকগান, ভজন ও কীর্তন চলে। চতুর্থ দিনে বিসর্জন হয়। বিপত্তারিণী পুজো উপলক্ষে মেয়েরা উপবাস করেন।
আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে বিপত্তারিণী পুজোয় ভুলেও করবেন না এই কাজগুলি
মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে, এই পুজোর একটা বিশেষ নিয়ম হল সবকিছু ১৩টা করে উৎসর্গ করতে হয় দেবীকে। ব্রতর আচার হিসেবে সব কিছু দিতে হয় তেরোটি করে। যেমন— তেরোটি নৈবেদ্য সাজাতে হয়। ব্রত পালনে লাগে তেরো রকম ফুল, তেরো রকম ফল, তেরোটি পান, তেরোটি সুপুরি, তেরোটি এলাচ।
এছাড়া, বিপত্তারিণী ব্রতপালনের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে হাতে বাঁধতে হয় লাল ডুরি বা ডোর বা তাগা। এই ডোর তৈরির ক্ষেত্রেও তেরো সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ।
তেরো গাছা লাল সুতোর সঙ্গে তেরোটি দূর্বা রেখে তেরোটি গিঁট বেঁধে তৈরি হয় এই পবিত্র তাগা বা ডোর। বিশ্বাস করা হয় যে, এই তাগা হাতে পরলে তাঁকে কোনও বিপদ স্পর্শ করতে পরে না৷
বিপত্তারিণী পুজোর শেষে সকলেই হাতে ওই তাগা বেঁধে দেওয়া হয়৷ মেয়েরা বাম হাতে ও ছেলেরা ডান হাতে এটি পরেন৷ এটি শুধু ব্রত পালন যিনি করছেন তিনিই যে বাঁধেন তা নয়, পরিবারের অন্য সদস্যরাও বাঁধেন বিপন্মুক্তির জন্য৷
আরও পড়ুন: বিপদ এড়াতে বিপত্তারিণী পুজো! জানুন এই ব্রতর মাহাত্ম্য
ব্রতপালনের পর খাবার যা খেতে হয়, সেখানেও ১৩ সংখ্যা রাখা আবশ্যক৷ মায়েরা প্রসাদ হিসেবে খান, তেরোটি লুচি বা পরটা সঙ্গে তেরো রকমের ফল। চাল-চিঁড়ে-মুড়ি এসব খাওয়া যায় না৷
ফল বা ময়দার রান্না যাই খাওয়া হোক না কেন সেটা ১৩ সংখ্যায় গ্রহণ করার কথাই ব্রতে বলা হয়৷ তবে যদি সেটা না হয় তাহলে পুজো মিটে যাওয়ার পর বিজোড় সংখ্যাতেও খাদ্যগ্রহণ করা যায়৷
+ There are no comments
Add yours