Bangladesh: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে দেখলেই গুলি চালানোর নির্দেশ সেনাকে! শনিবারও নিহত ৭

Curfew: আগামী রবিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে জারি থাকবে কার্ফু, কোর্টে সংরক্ষণ মামলার শুনানি আজ 
bangladesh-protest-1
bangladesh-protest-1

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশে আগেই জারি করা হয়েছিল কার্ফু (Curfew)। তবে কার্ফু জারির পরেও শনিবার আরও সাত জনের নিহতের খবর পাওয়ার গিয়েছে। এরই মাঝে আরও বড় পদক্ষেপ করল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার। অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে (Bangladesh) দেখামাত্র গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সেনাবাহিনীকে। অশান্ত বাংলাদেশে হাসিনা সরকারের এমন নির্দেশ কতটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। প্রসঙ্গত, সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে বিগত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল হয়েছে বাংলাদেশ। রয়টার্স সহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশে নিহত হয়েছেন ১১৪ জন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীও রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

রবিবার ও সোমবার সারাদেশে (Bangladesh) সাধারণ ছুটি 

প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাত থেকেই বাংলাদেশে (Bangladesh) জারি করা হয়েছে কার্ফু (Curfew)। শনিবার দুপুর বারোটা থেকে দুটো পর্যন্ত শিথিল করা হয়েছিল কার্ফু। এই সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় দোকান বাজার করতে বলা হয়েছিল। সাংবাদিক সম্মেলনে ঠিক এ কথাই জানিয়েছিলেন আওয়ামী লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বাংলাদেশে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, এই আবহে রবিবার ও সোমবার সারাদেশে সাধারণ ছুটিও ঘোষণা করে দিয়েছে সরকার।

শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীকে 

বৃহস্পতিবার থেকেই বাংলাদেশে (Bangladesh) ইন্টারনেট ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীকে। রাস্তাঘাট একেবারে শুনশান। রাস্তায় রাস্তায় সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া গাড়ি ছাড়া অন্য জনপ্রাণীও নেই। জানা গিয়েছে, হাসিনা সরকার এই কার্ফু জারি করেছে আগামী রবিবার পর্যন্ত। ততদিনে পরিস্থিতি কি শান্ত হবে? এমনই প্রশ্ন উঠছে। পরবর্তীকালে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে হাসিনা সরকার তবে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের ধারণা কার্ফু জারির ফলে মৃত্যুর সংখ্যা কমবে।

সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ

অন্যদিকে বাংলাদেশের (Bangladesh) সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। হাসিনা সরকারকে বার্তাও দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান ভলকার। শুক্রবার বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। হাসিনা সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে তিনি জানিয়েছেন ছাত্রদের ওপর হামলা কোনওভাবে মেনে নেওয়া যায় না। ভলকার শুক্রবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে চলতি সপ্তাহে যে হিংসার ঘটনা ঘটেছে, আমি তা নিয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। বহু ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে হিংসার কারণে। আহতের সংখ্যাও প্রচুর। বিশেষত, আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপর হামলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। এটি বিস্ময়কর।’’

বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে

এই আবহে হিংসা ছড়ানোর দায়ে বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে বিএনপির কয়েকজন নেতাকেও। অন্যদিকে, এই আবহেই বাংলাদেশের উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। নাম এসেছে জামাত-ই-ইসলামের। এরই মাঝে রবিবার বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে সংরক্ষণ মামলার শুনানি রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেছেন, বাংলাদেশের সংরক্ষণ ইস্যুতে আদালত সম্প্রতি যে রায় দিয়েছিল তা বাতিলের আবেদন করবে সরকার।

৭৭৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন

অন্যদিকে বাংলাদেশের পড়তে যাওয়া ৭৭৮ জন ভারতীয় পড়ুয়া শনিবার পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ফিরেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি দিয়ে একথা জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে এখনও পর্যন্ত চার হাজারেরও বেশি পড়ুয়া রয়েছেন। অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের এই অশান্তির প্রভাব পড়েছে পেট্রাপোল বন্দরেও। শনিবার সকালে পর থেকেই বাংলাদেশের রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমদানিও চলছে অত্যন্ত ধীরগতিতে।

কেন সংরক্ষণ ইস্যুতে উত্তাল বাংলাদেশ?

বাংলাদেশের (Bangladesh) সংরক্ষণের নিয়ম নিয়েই এই অশান্তির সূত্রপাত। ২০১৮ সালেও একই বিষয়ে আন্দোলন উত্তাল হয়ে উঠেছিল দেশটি। প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে সে দেশে মোট ৫৬ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল, যার মধ্যে ৪৪ শতাংশ আসন সাধারণের জন্য নির্ধারিত ছিল। ৫৬ শতাংশ আসনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য ৩০ শতাংশ, নারীদের জন্য ১০%, জেলার জন্য ১০%, জনজাতিদের জন্য ৫ শতাংশ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ ছিল। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ৩০ শতাংশ, নারীদের ১০ শতাংশ ও জেলার ১০ শতাংশ আসন বাতিল করে দেন। রাখা হয় শুধু জনজাতিদের ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষণ। এ নিয়ে মামলা গড়ায় বাংলাদেশের হাইকোর্টে। চলতি বছরের ৫ জুন হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, হাসিনা সরকারের নির্দেশ অবৈধ। ফের প্রতিবাদ আন্দোলনে নামেন পড়ুয়ারা।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles