Bangladesh Crisis: বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার অব্যাহত, পদত্যাগে বাধ্য ৪৯ জন শিক্ষক!

Minority Teachers: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের কীভাবে পদত্যাগ করানো হচ্ছে জানেন?...
bangladesh-crisis_f
bangladesh-crisis_f

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশি হিন্দুদের ওপর অত্যাচার (Bangladesh Crisis) অব্যাহত বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামির সঙ্গে যুক্ত বিক্ষোভকারী ছাত্র ও উগ্রপন্থীদের। গত ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। বস্তুত, তার পর থেকেই সে দেশে হিন্দুদের (Minority Teachers) ওপর অত্যাচার চরমে উঠেছে। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার একটা হয়েছে বটে, তবে তার পরেও বাংলাদেশে বন্ধ হয়নি হিন্দু নির্যাতন।

হিন্দুদের ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে (Bangladesh Crisis)

উচ্চ পদে থাকা হিন্দুদের ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ৪৯জন শিক্ষককে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, উগ্রপন্থী এবং তাদের দ্বারা চালিত ছাত্ররা ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর শিক্ষকদের নানা অছিলায় ঘেরাও করে অফিসে আটকে রাখছে। অপমান করার পাশাপাশি তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারও করা হচ্ছে। দেওয়া হচ্ছে হুমকিও। এর পর ওই শিক্ষকদের সাদা কাগজ সই করাতে বাধ্য করছে তারা। কাগজের সাদা অংশে লিখে দেওয়া হচ্ছে ইস্তফাপত্র।

বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের দাবি

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ছাত্র শাখা বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৩১ অগাস্ট সাংবাদিক সম্মেলন করে এই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে। সংগঠনের দাবি, হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ অগাস্টের ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থানের মধ্যে সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত ৪৯ জন শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। সংগঠনের সমন্বয়কারীদের একজন সাজিব সরকার। তিনি বলেন, “হাসিনা সরকারের পতনের পর ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা শিকার হয়েছেন হামলা, লুটপাট, নারীদের ওপর আক্রমণ, মন্দির ভাঙচুর, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ এবং সর্বোপরি হত্যার। দেশজুড়ে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে। ৩০ অগাস্ট পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪৯জনকে বাধ্য করা হয়েছে পদত্যাগ করতে।” তিনি জানান, প্রবল সমালোচনার মুখে পড়ে অন্তর্বর্তী সরকার (Bangladesh Crisis) পদত্যাগী শিক্ষকদের মধ্যে ১৯জনকে পুনর্বহাল করেছে।

শুক্লা রানির কাহিনি

পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছিল বাংলাদেশের যেসব শিক্ষককে, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ শুক্লা রানি হালদারও। বাংলাদেশের বহুল প্রচারিত দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৯ অগাস্ট দুপুরে ছাত্র এবং বহিরাগতরা তাঁর (Minority Teachers) অফিস ঘেরাও করে। তাঁকে কয়েক ঘণ্টা বন্দি করে রাখে। পরে উন্মত্ত জনতা তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করে। তাঁর অসহায় অবস্থার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তাঁর পুরানো বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী ফেসবুকে এ নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘ছাত্রবান্ধব এই শিক্ষককে জঙ্গিরা যে অপমান করেছে, তা তাঁর প্রাপ্য নয়’।

কে এই শুক্লা?

১৪তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা শুক্লা। ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় বাকেরগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হন তিনি। তার আগে তিনি ছিলেন বরিশালের সরকারি ব্রজমোহন কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক। প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকেই জানা গিয়েছে, ২৯ অগাস্ট সকাল ১০টা নাগাদ তাঁকে ঘিরে ধরে প্রতিবাদীরা। এদের মধ্যে পড়ুয়ার চেয়ে বেশি ছিল বহিরাগত। এদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল বিএনপির স্থানীয় এক নেতার ছেলে। ছেলেটি ওই কলেজেরই পড়ুয়া। প্রতিবাদীদের সিংহভাগই বিএনপির কর্মী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিন্দু এই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আনা হয় আর্থিক দুর্নীতি, অনিয়মিত উপস্থিতি এবং অন্যান্য অসদাচরণের অভিযোগ। দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে সাদা কাগজে ‘আমি পদত্যাগ করছি’ লিখতে বাধ্য করা হয়। স্বাক্ষর করতেও বাধ্য করা হয়।

কী বলছেন তসলিমা?

ঘটনায় ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তী সরকারকে নিশানা করেছে হাসিনার দল আওয়ামি লিগ। তারা সংখ্যালঘু শিক্ষকদের গণহারে (Bangladesh Crisis) জোরপূর্বক পদত্যাগের প্রতিবেদন শেয়ার করেছে। এই জাতীয় ঘটনাকে আওয়ামি লিগ বর্ণনা করেছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষকদের বৃহত্তর পরিসরে অপসারণ হিসেবে। বাংলাদেশের সঙ্কট ও ইউনূসের ব্যর্থতার কথা তুলে ধরে বিশিষ্ট লেখিকা তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে শিক্ষকরা বাধ্য হয়ে পদত্যাগ করছেন। সাংবাদিক, মন্ত্রী, সাবেক সরকারের কর্মকর্তারা নিহত, হয়রানির শিকার ও বন্দি হচ্ছেন। জেনারেশন জেড আহমদিয়া মুসলমানদের শিল্প কারখানা পুড়িয়ে দিচ্ছে। সুফি মুসলমানদের মাজার ও দরগাগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসলামি সন্ত্রাসীরা। ইউনূস এ বিষয়ে কিছুই বলেন না’।

আরও পড়ুন: আর নমাজ বিরতি পাবেন না অসমের মুসলমান বিধায়করা, কেন জানেন?

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি ইসলামপন্থী ও অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার দল ঘনিষ্ঠ হিন্দু সাংবাদিকদের ওপর নির্মম অত্যাচার চালিয়েছে। ৫ অগাস্টের পর থেকে হত্যা করা হয়েছে বেশ কিছু সাংবাদিককে। হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে (Minority Teachers) দায়ের হয়েছে ২৬৮টি মামলা। প্রসঙ্গত, সংরক্ষণকে ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ (Bangladesh Crisis)। তার জেরেই শুরু হয় হিন্দুমেধ যজ্ঞ।

 

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের  Whatsapp, FacebookTwitter, Telegram এবং Google News পেজ।

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles