মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও এক উঠতি মডেলের মৃত্যু শহরে। এই নিয়ে গত দুসপ্তাহে চারজন। একের পর এক তরুণীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে। রবিবার রাতে কসবা এলাকা থেকে উদ্ধার হয় মডেলের ঝুলন্ত দেহ। শনিবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
কসবায় সরস্বতী দাস (Saraswati Das) নামের ওই মডেলের মামাবাড়ি ছিল বলে খবর। সেখানেই তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে থাকতেন। সেদিন রাতে তিনি আর তাঁর দিদা ছিলেন বাড়িতে। সকালে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পেয়ে বাড়ির লোকজন খবর দেয় থানায়। কসবা থানার তরফে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পরিবারের তরফ থেকে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে কোনও সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়নি।
অভিনেত্রী পল্লবী দে এবং পরপর আরও দুই মডেলের মৃত্যুর রেশ থেকেই বেরিয়ে আসতে পারেনি শহর কলকাতা। তার মাঝেই আরও এক অনভিপ্রেত ঘটনা। ১৮ বছর বয়সী ওই তরুণীর মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা থাকলেও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান আত্মহত্যাই করেছেন ওই তরুণী।
পল্লবী দে, বিদিশা দে মজুমদার ও মঞ্জুসা নিয়োগী (ফাইল ছবি)
এক পুলিশ আধিকারিকের বক্তব্য, "আমাদের সব দিক খতিয়ে দেখতে হবে। প্রথমে সরস্বতীর দিদা তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। সবজি কাটার বঁটি দিয়ে কাটেন দড়ি। দেহ নামিয়ে এনে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। তারপর পুলিশকে জানানো হয়। আমাদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসা অবধি অপেক্ষা করতে হবে।"
আরও পড়ুন: ফের রহস্যমৃত্যু! পল্লবীর পর আরও এক টলিউড অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার
পুলিশ আধিকারিক আরও জানান, "মা এবং মাসী কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পরে শনিবার রাতে আত্মহত্যা করেন সরস্বতী। আমরা তাঁর মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছি। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর ক্রিয়া-কলাপ পরীক্ষা করে দেখা হবে।"
লকডাউনের সময়ই পড়াশোনা ছেড়ে দেন সরস্বতী। তারপর থেকেই ছোটখাটো জায়গায় মডেলিং করতেন, মেহেন্দি পরাতেন এবং মেকআপ আর্টিস্টের কাজ করতেন। প্রাণোচ্ছ্বল মেয়ের এহেন পরিণতিতে হতবাক পরিবার-পরিজনরা। পল্লবী দে, বিদিশা দে মজুমদার, মঞ্জুসা নিয়োগীর মৃত্যুর সঙ্গে এই মৃত্যুর কোনও যোগ আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ কলকাতার আবাসন থেকে টেলি অভিনেত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, খুন না আত্মহত্যা?
ছেলেবেলাতেই ঘর ছেড়েছেন বাবা। মা-মাসীর সঙ্গে মামার বাড়িতে থাকতেন সরস্বতী। মা-মাসী দুজনেই গৃহ পরিচারিকার কাজ করেন। সরস্বতীর মামা গোবিন্দ মণ্ডলের দাবি, "প্রতিদিন রাতে ভাগ্নি ফোনে কারও সঙ্গে কথা বলত। কয়েক দিন ওকে কাঁদতেও দেখি।" মামার অনুমান, ফোনে কেউ তাঁকে হুমকি দিত। আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সরস্বতী।
১৫ মে জনপ্রিয় টেলি অভিনেত্রী পল্লবী দের (Pallabi Dey) ঝুলন্ত দেহ তাঁর গরফার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়। তার কিছুদিন পরেই একই অবস্থায় পাওয়া যায় মডেল বিদিশা দে মজুমদারের (Bidisha De Majumdar) দেহ। সেই ঘটনার দুদিনের মাথায় বিদিশারই বন্ধু মঞ্জুসা নিয়োগীর (Manjusha Niyogi) দেহ উদ্ধার হয় তাঁর বাড়ি থেকে। এভাবে একের পর এক তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় অশনি সংকেত দেখছে শহর। সবার একটাই প্রশ্ন নেপথ্যে কী শুধুই মানসিক অবসাদ? নাকি আরও বড় কারণ সবার নজর এড়াচ্ছে!
+ There are no comments
Add yours