মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দিনভর দুষ্টুমি। লাফালাফি আর দৌড়। বাড়ির একরত্তির সারাদিনের হৈহৈ কাণ্ডে অস্থির সকলে। কিন্তু রাত বাড়লেই এক সমস্যা। প্রায় রাতেই পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। কখনও কেঁদে উঠছে। সারা রাত পায়ের যন্ত্রণায় ঠিকমতো ঘুমও হচ্ছে না। সন্তানের কেন রাতে পায়ের যন্ত্রণা হচ্ছে, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন অনেক বাবা-মা! চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সতর্ক হতে হবে। না হলেই এই সমস্যার (Child Health) মোকাবিলা কঠিন হয়ে উঠবে।
রাত বাড়লেই কেন বাড়ে পায়ের যন্ত্রণা?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, তিন বছরের পর থেকেই বহু শিশু রাতে পায়ের যন্ত্রণায় কাবু হয়। বছর দশেক পর্যন্ত এই সমস্যা থাকে। ছেলে-মেয়ে কমবেশি সকলেই এই সমস্যায় ভোগে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই সমস্যার নাম গ্রোইং পেন (Child Health)।
চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, তিন বছরের পর থেকেই শিশুর শরীরে উল্লেখযোগ্য ভাবে বিকাশ হয়। অর্থাৎ, হাত-পায়ের হাড় ও পেশির বিকাশ ঘটে। উচ্চতা বাড়ে। বছর দশেক পর্যন্ত বিশেষ ভাবে দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। আর তার জেরেই এই ধরনের যন্ত্রণা হয়। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সাধারণত এই বয়সের শিশুরা দিনভর খুব ‘অ্যাক্টিভ’ থাকে। অর্থাৎ, দৌড়াদৌড়ি, লাফালাফি করে। ফলে, পেশি ও হাড় যথেষ্ট ক্লান্ত থাকে। পাশপাশি এগুলির এই বয়সে নতুন করে গঠন হয়। তাই রাতে বিশ্রামের সময় যন্ত্রণা অনুভব হয়। বিশেষত পেশির যন্ত্রণা বেশি হয়।
তবে যন্ত্রণা কি গ্রোইং পেন? (Child Health)
চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, সব রকমের যন্ত্রণা কিন্তু গ্রোইং পেন নয়। তাই অভিভাবকদের সতর্কতা জরুরি। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, সন্তান দিনভর ছটফটে রয়েছে। স্কুল যাওয়া কিংবা খেলাধুলো স্বাভাবিক ভাবেই করছে। রাতে পায়ের পেশিতে যন্ত্রণা (Child Health) হলেও, সকালে ঘুম থেকে উঠে একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। তাহলে বুঝতে হবে এটা গ্রোইং পেন। কিন্তু অনেক সময়ে শিশুদের হাড়ে একাধিক সমস্যা হয়। সেই যন্ত্রণা শুধু রাতে নয়, দিনেও হবে। যদি একটানা যন্ত্রণা অনুভব হয়, সারাদিন ক্লান্তিবোধ থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি। তাছাড়া, জ্বর বা সর্দি-কাশির মতো উপসর্গ থাকলে হাতে-পায়ে যন্ত্রণা অনুভব হলে, কখনই শিশুকে অবহেলা করা যাবে না। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ, সেক্ষেত্রে অন্য কোনও সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গ্রোইং পেন দেখা দিলে কীভাবে খেয়াল রাখতে হবে?
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের একাংশ জানাচ্ছেন, গ্রোইং পেন দেখা দিলে পেশি আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করতে হবে। তাতে সাময়িক আরাম পাওয়া যাবে। শিশুদের এই পায়ের যন্ত্রণার জন্য কোনও রকমের ওষুধ বা মলম না লাগানোই ভালো বলে মনে করছেন অধিকাংশ চিকিৎসক। তবে এই সময়ে পুষ্টির দিকে বাড়তি খেয়াল রাখা জরুরি বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, এই সময়ে পেশি ও হাড়ের বিকাশ ঘটে। তাই পুষ্টিতে বিশেষ নজরদারি জরুরি (Child Health)। ভিটামিন ডি-র ঘাটতি যাতে দেখা না দেয়, সেদিকে বিশেষ নজরদারি দরকার। তাই শুধু ঘরের ভিতরে নয়, সূর্যের আলোতে শিশুদের খেলাধুলো প্রয়োজন। সেদিকে অভিভাবকদের নজরদারি দরকার। পাশাপাশি হাড়ের শক্তি বাড়াতে ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার খাওয়া দরকার। তাই নিয়মিত দুধ, ডিম সিদ্ধ, কলা, লেবু খেতে হবে। পাশপাশি বাদাম খাওয়া জরুরি। শরীরে ভিটামিন এবং প্রোটিনের জোগান থাকা জরুরি। তবেই পেশি শক্তিশালী হবে বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদদের একাংশ। আর পেশি শক্তিশালী হলে গ্রোইং পেন মোকাবিলাও সহজ হবে। তাই মাছ, মাংস, পনির, এবং সবুজ সব্জি নিয়মিত খাওয়া দরকার। তবেই শিশুর বিকাশ ঠিকমতো হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours