মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কোনও প্রতিশ্রুতি বা দাবিদাওয়া পূরণে কোনও আশ্বাস মেলেনি। রবিবার সকালে আচমকাই পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশন থেকে অবরোধ তুলে নিল কুড়মিরা (kurmi) । তবে, রবিবার নতুন করে পুরুলিয়ার কোটশিলায় রেল অবরোধ শুরু হয়েছিল। সঙ্গে রাজ্য সড়ক অবরোধ করা হয়। কুস্তাউর স্টেশন এদিন সকালে রেল অবরোধ উঠলেও কোটশিলায় অবরোধ চলছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের খেমাশুলি স্টেশনে রেল অবরোধ উঠে যায়। তবে, জাতীয় সড়ক অবরোধ চলছে। ৬দিনে পড়ল জাতীয় সড়ক অবরোধ। জানা গিয়েছে, কুস্তাউরের পর অন্যান্য স্টেশন থেকে রেল অবরোধ উঠে যাবে। ৫ এপ্রিল রেল অবরোধ শুরু হওয়ার পর থেকেই দক্ষিণ পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে প্রায় প্রতিদিনই একের পর এক ট্রেন বাতিল করা হচ্ছে। গত পাঁচদিনে প্রায় শতাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। শনিবারও কুড়মিদের (kurmi) লাগাতার আন্দোলনের জেরে ৭২ টি দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল করা হয়েছিল। আর এদিন রেল অবরোধ উঠলেও রেলের পক্ষ থেকে একগুচ্ছ ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। একাধিক ট্রেনকে ঘুরপথে চালানো হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। তবে, এদিন পুরুলিয়ার কুস্তাউর স্টেশনে প্রথমে মালগাড়ি এবং পরে, যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু করে।
কুড়মিদের অবরোধ তোলার কারণ কী?
আদিবাসী (Tribal People), কুড়মি (kurmi) জাতিকে তফশিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ রাজ্য সরকারের সিআরআই (কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট) রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর দাবিতে কুড়মিদের (kurmi) পক্ষ থেকে রাস্তায় নেমে এই আন্দোলন করা হয়েছে। ৫ এপ্রিল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধের ডাক দেওয়া হয়েছে। এদিন তাদের আন্দোলন পাঁচদিনে পড়েছিল। তবে, প্রশাসনের পক্ষ থেকে শনিবার থেকে দফায় দফায় বৈঠক হয়। কিন্তু, কোনও রফাসূত্র মেলেনি। রবিবার সাত সকালে সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে কোনও রফাসূত্র বের হয়নি। আন্দোলনকারীরা কুস্তাউর স্টেশন এসে ফের আন্দোলনে যোগ দেন। পরে, জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক তাঁদের কাছে একটি চিঠি নিয়ে আসে। ১০ এপ্রিল মুখ্য সচিবের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও আন্দোলনকারীরা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। কুস্তাউর স্টেশনে রেলের পক্ষ থেকে আলো, জল সব কিছুই বন্ধ রাখা হয়েছে। চাকরি বা ব্যবসার সঙ্গে যে সব কুড়মিরা জড়িত রয়েছেন তাদের পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে, আন্দোলন ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। তাই, আপাতত এদিন আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
কী বললেন কুড়মি সংগঠনের নেতা?
রেল অবরোধ তোলা প্রসঙ্গে কুড়মি (kurmi) সংগঠনের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাত বলেন, আসলে আমাদের আন্দোলন দুর্বল করতে প্রশাসন বহু চেষ্টা করছে। মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে। আর মুখ্য সচিবের সঙ্গে এর আগে বৈঠক করেছি। কোনও লাভ হয়নি। তাই, এবার আর বৈঠক করতে রাজি হইনি। নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে আমরা আপাতত অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলাম। আর রেল অবরোধের জন্য সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছে, সেটা বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম। তবে, আগামীদিনে আমরা ফের আন্দোলনে নামব।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours